অস্ট্রেলিয়ার কাছে বড় ব্যবধানেই হারল বাংলাদেশ
টস জিতে বোলিং নিয়ে শুরু থেকেই অস্ট্রেলিয়াকে চেপে ধরে বাংলাদেশ। ৪০ ওভার পর্যন্ত লাগাম ছিল তাদের হাতেই। কিন্তু এরপর অ্যানাবেল সাদারল্যান্ড ও অ্যালানা কিংয়ে ব্যাটে দারুণ প্রতিরোধ গড়ে অস্ট্রেলিয়া। এরপর বাকি কাজ সারেন বোলাররা। দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে সঙ্গে অসাধারণ ফিল্ডিংয়ে একশ করতে পারেনি বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের বড় ব্যবধানে হারিয়েই সিরিজ শুরু করল বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার কাছে ১১৮ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২১৩ রান করে অজিরা। জবাবে ৩৬ ওভারে ৯৫ রানেই গুটিয়ে যায় স্বাগতিক দলটি।
অথচ শুরুটা কী দারুণই না করেছিল বাংলাদেশ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ওপেনিং জুটি ভাঙে দলটি। দলীয় পঞ্চাশ না হতেই তুলে নেয় চার উইকেট। দেড়শ রানের আগে তুলে নেয় সাত উইকেট। কিন্তু এরপর সাদারল্যান্ড ও অ্যালানার অষ্টম উইকেট জুটিতেই ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে টাইগ্রেসরা।
আগে ফিল্ডিং নিয়ে ক্যাচ মিসের সঙ্গে মিস ফিল্ডিংয়ের ছড়াছড়ি ছিল বাংলাদেশ দলে। যে কারণে ৭৮ রানে ৫ উইকেট হারানো দলটি কি-না পুঁজি পেয়েছে ২১৩ রানের। অষ্টম উইকেটে ৫৬ বলে ৬৭ রান যোগ করেন সাদারল্যান্ড ও অ্যালানা। বাংলাদেশের বিপক্ষে অষ্টম উইকেটে এটিই সর্বোচ্চ জুটি। আর অষ্টম উইকেট জুটিতে অস্ট্রেলিয়ার এর চেয়ে বড় জুটি রয়েছে কেবল একটি।
ফাহিমা খাতুনের করা শেষ ওভারে তো ২৯ রান তুলে নেয় অজিরা। সে ওভারে ৪টি ছক্কা ও ১টি চার মারেন অ্যালানা। নারী ওয়ানডের ইতিহাসে এটাই এক ওভারে সবচেয়ে বেশি রান খরচের রেকর্ড। এর আগে ২০১৮ সালে ভারতের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার আয়াবঙ্গা খাকা এক ওভারে ২৮ রান খরচ করেছিলেন।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৮ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন সাদারল্যান্ড। ৭৬ বলের ইনিংসটি সাজান ৫টি চারের সাহায্যে। ক্যারিয়ার সেরা ব্যাটিংয়ে ৩১ বলে ৪৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন অ্যালানা। ২টি চার ও ৫টি ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংস। এছাড়া বেথ মুনি ২৫ ও অ্যালিসা হিলি খেলেন ২৪ রানের ইনিংস।
এদিন অবশ্য নতুন এক মাইলফলক গড়েন নাহিদা আক্তার। ওয়ানডে ক্রিকেটে এখন বাংলাদেশের সর্বাধিক উইকেট শিকারি এই স্পিনার। ৪১ ম্যাচে ৩৯ ইনিংসে বোলিং করে পেয়েছেন ৫৩ উইকেট। ৫১ উইকেট নিয়ে এত দিন শীর্ষে ছিলেন সালমা খাতুন। টি-টোয়েন্টিতেও ৮৬ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সবার ওপরে আছেন নাহিদা।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে সুবিধা করে উঠতে পারেননি বাংলাদেশের কোনো ব্যাটার। শুরুতেই খালি হাতে ফেরেন ফারজানা হক। এরপর দলীয় ২১ রানে ফিরে যান মুর্শিদা খাতুন। তবে তৃতীয় উইকেটে সোবহানা মোস্তারির সঙ্গে দারুণ প্রতিরোধ গড়েছিলেন অধিনায়ক নিগারা সুলতানা। ৪৯ রানের জুটিও গড়েন তারা। কিন্তু এ জুটি ভাঙতেই সব শেষ টাইগ্রেসদের।
সোবহানা, মুর্শিদা ও নিগার ছাড়া আর কোনো ব্যাটারই দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পারেননি। আর সেট হওয়া এই তিন ব্যাটারই পারেননি ইনিংস লম্বা করতে। মাঝে টানা তিন উইকেট রানআউটের কারণে হারায় বাংলাদেশ। ফাহিমা খাতুন ও রিতু মনির পর অধিনায়ক নিগারও ফেরেন রানআউটের খড়গে পড়ে। এরপর কিম গার্থের তোপে লেজ বেড়িয়ে যায় বাংলাদেশের। আর লেজ ভালোভাবেই ছাঁটাই করেন স্পিনার অ্যাশলি গার্ডনার। ফলে একশও করতে পারেনি বাংলাদেশ।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৭ রান করেন নিগার। সোবহানা ১৭ ও মুর্শিদা ১০ রান করেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে গার্ডনার ২২ রানের খরচায় পান ৩টি উইকেট। এছাড়া ২টি উইকেট নেন গার্থ।
Comments