বোলারদের কষ্টের দাম দিতে বললেন হেম্প

প্রভাত জয়াসুরিয়ার ব্যাটের কানায় লেগে প্রথম স্লিপে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে এলো বল। পারলেন না ধরতে। হাত ফসকে গেল দ্বিতীয় স্লিপে। সেখানে দাঁড়ানো শাহাদাত হোসেন দিপু অনেকটা ভলিবলের মতো করে উপরে ছুঁড়লেন বলটি। তৃতীয় স্লিপ থেকে ঝাঁপিয়ে তা ধরতে গিয়েও পারেননি জাকির হাসান। ক্ষণিকের জন্য চট্টগ্রাম টেস্ট পরিণত হলো ভলিবল ম্যাচে। তাতে আবারও আলোচনায় টাইগারদের ক্যাচ মিস নিয়ে।
রোববার চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৫ ওভারে ১ উইকেটে ৫৫ রান। ৪৭৬ রানে পিছিয়ে আছে স্বাগতিকরা। এর আগে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৫৩১ রান করে অলআউট হয় লঙ্কানরা। তবে এই পুঁজি হয়তো আরও অনেক ছোট হতে পারতো। ১০ ব্যাটারকে আউট করতে গিয়ে সাতটি সহজ ক্যাচ ছেড়েছেন টাইগাররা। সঙ্গে রয়েছে রানআউট হাতছাড়া করার আক্ষেপও।
অথচ চট্টগ্রামের উইকেট ছিল ব্যাটিং সহায়ক। এমন উইকেটে একটি সুযোগ তৈরির জন্য কতো কাঠখড়ই না পোড়াতে হয় বোলারদের। তাদের জন্য কঠোর পরিশ্রমের কথা ভেবেও এই সকল ক্যাচ লুফে নেওয়া উচিত বলে মনে করেন বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং কোচ ডেভিড হেম্প, 'আমরা এটা (ক্যাচ নেওয়ার দুর্বলতা) অস্বীকার করতে পারি না। এটা স্পষ্টতই ঘটছে। আমরা কিছু কাজ করছি। কেউ ক্যাচ মিস করতে চায় না কিন্তু বোলাররা যখন সুযোগ তৈরি করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করে, আপনাকে সেই সুযোগগুলো নিতে হবে।'
ভালো ফিল্ডার হতে অনুশীলনের বিকল্প দেখছেন না এই কোচ, 'একজন স্লিপ ফিল্ডার হওয়া কঠিন কাজ। এর অনেকটাই প্রতিক্ষিত এবং প্রত্যাশিত। প্রতিটা বল আপনার কাছে আসবে বলে আশা করতে হবে। আপনি যদি সেই মানসিকতা না থাকে তাহলে জীবন কিছুটা কঠিন করে ফেলে। আপনি যত বেশি অনুশীলন করবেন, ম্যাচের পরিস্থিতিতে আপনি নিজেকে আরও ভালো অবস্থানে দেখছেন।'
এদিন শুরুতেই ক্যাচ মিস করে লঙ্কান অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে জীবন দিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তখন লঙ্কান অধিনায়ক ব্যাটিং করছিলেন ২৫ রানে। এরপর আরও ৪৫ রান যোগ করে আউট হয়েছেন ৭০ রানে। আর হাসান মাহমুদের হাতে ব্যক্তিগত ৬০ রানে জীবন পেয়েছেন কামিন্দু মেন্ডিসও। তাকে শেষ পর্যন্ত আউট করাই যায়নি। এক প্রান্ত আগলে রেখে খেলেছেন হার না মানা ৯২ রানের ইনিংস।
আর প্রভাত জয়াসুরিয়া তো একাই পেয়েছেন দুইটি জীবন। তার একটি ধরতে গিয়ে চেষ্টা করেছেন তিন জন। তিনজনই ব্যর্থ। যা ক্রিকেটের বিরল এক দৃশ্যই বটে। অথচ বলটি সরাসরি গিয়েছিল অধিনায়ক শান্তর হাতে। এরপর তার হাত ফসকে যখন শাহাদাতের কাছে বল যায়, তা লুফে নেওয়া ছিল আরও সহজ। এরপর লিটন দাসও নষ্ট করেন তাকে ফেরানোর সুযোগ। তিনি খেলেছেন তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস।
জীবন পেয়ে এদিন এই তিন ব্যাটার যোগ করেছেন মোট ১১০ রান। আগের দিন জীবন পেয়ে মোট ১২৫ রান যোগ করেছিলেন নিশান মাদুশকা, দিমুথ করুনারত্নে ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। অর্থাৎ ক্যাচগুলো ঠিকঠাক ধরতে পারলে ২৩৫ রান কম হতেও পারতো শ্রীলঙ্কার।
Comments