দুইশ পেরিয়ে পঞ্চম দিনে খেলা নিয়ে গেল বাংলাদেশ

ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়া বাংলাদেশের জন্য এখন কেবলই সময়ের ব্যাপার।
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

টেস্টে টানা পাঁচ ইনিংসে দুইশর নিচে অলআউট হওয়ার পর অবশেষে গেরো খুলতে পারল বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে চট্টগ্রামে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের খেলা পঞ্চম দিনে নিয়ে গেল টাইগাররা। তবে ৭ উইকেট চলে যাওয়ায় আরেকটি বড় হারই চোখ রাঙাচ্ছে নাজমুল হোসেন শান্তর দলকে।

স্পষ্ট করে বললে, ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়া বাংলাদেশের জন্য এখন কেবলই সময়ের ব্যাপার। ৫১১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় চতুর্থ দিন শেষে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২৬৮ রান। জয়ের জন্য সামনে থাকা কঠিন সমীকরণ মেলানো তাদের জন্য এখন অসম্ভবেরই পর্যায়ে। হাতে স্রেফ ৩ উইকেট নিয়ে দরকার আরও ২৪৩ রান।

ক্রিজে আছেন মেহেদী হাসান মিরাজ ৪৯ বলে ৪৪ রানে। তাদের সঙ্গী তাইজুল ইসলাম খেলছেন ১৪ বলে ১০ রানে। সাজঘরে ফেরা সাত ব্যাটারের সবাই দুই অঙ্কে পৌঁছান। তবে হাফসেঞ্চুরি পর্যন্ত যেতে পারেন কেবল মুমিনুল হক। অভিজ্ঞ বাঁহাতি ব্যাটার ৫৬ বলে ৫০ রানে থামেন। তিনি মারেন ৮ চার ও ১ ছক্কা।

এর আগে ৭ উইকেটে ১৫৭ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা। তখন তাদের লিড ছিল ৫১০ রানের। তারা ৬ উইকেটে ১০২ রান নিয়ে দিন শুরু করেছিল। ৩৯ রানে অপরাজিত থাকা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস আউট হন ফিফটি করে। সাকিব আল হাসানের শিকার হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৫৬ রান। ৭৪ রান মোকাবিলায় তার ব্যাট থেকে আসে ৫ চার। প্রবাথ জয়সুরিয়া ৬৭ বলে ২৮ ও বিশ্ব ফার্নান্দো ১৬ বলে ৮ রানে অপরাজিত থাকেন।

প্রথম সেশনেই রান তাড়ায় নামা বাংলাদেশ মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় বিনা উইকেটে ৩১ রানে। দ্বিতীয় সেশনে দ্রুত গতিতে রান তোলে তারা। ২৬ ওভারে স্কোরবোর্ডে ওঠে ১০১ রান। কিন্তু পড়ে যায় ৪ উইকেট। ক্রিজে থিতু হয়ে ফেরেন প্রত্যেকে। শুরুটা বোল্ড হওয়া মাহমুদুল হাসান জয়কে দিয়ে। প্রবাথের বলে মিডল স্টাম্প হারানোর আগে তার সংগ্রহ ছিল ৩২ বলে ২৪ রান।

৩৭ রানে এক ওপেনারকে হারানো বাংলাদেশ ৫১ রানে খোয়ায় আরেক ওপেনারকে। বিশ্ব ফার্নান্দোর বলে খোঁচা মেরে জাকির হাসান প্রথম স্লিপে লঙ্কান দলনেতা ধনঞ্জয়া ডি সিলভার তালুবন্দি হন ১৯ রানে। তিনি খেলেন ৩৯ বল।

পরের দুটি সম্ভাবনাময় জুটি থামে যথাক্রমে ৪৩ ও ৩৮ রানে। লাহিরু কুমারার অসাধারণ ডেলিভারির লাইন মিস করে টাইগার অধিনায়ক শান্ত আউট হন ৫৫ বলে ২০ রানে। ব্যাট হাতে ভীষণ বাজে একটি সিরিজ কাটালেন তিনি। চার ইনিংসে তার সংগ্রহ স্রেফ ৩২ রান। আর চা বিরতির ঠিক আগের ওভারে বাঁহাতি স্পিনার জয়সুরিয়ার দ্বিতীয় শিকার হন দারুণ খেলতে থাকা মুমিনুল। সুইপ করে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেন তিনি।

এরপর জুটি বাঁধেন অভিজ্ঞ সাকিব ও উইকেটরক্ষক-ব্যাটার লিটন দাস। ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন দুজন। তাদের জুটি ফিফটি স্পর্শ করে ৭৪ বলে। তবে সেটাকে মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠতে দেননি কামিন্দু মেন্ডিস। ব্যাট হাতে গোটা সিরিজে বাংলাদেশকে ভোগানো ক্রিকেটার এবার অফ স্পিনে ঘায়েল করেন সাকিবকে।

সাকিব ৫৩ বলে ৩৬ রান করে আউট হন। দুর্দান্ত রিফ্লেক্সে নিশান মাদুশকা খুব কাছ থেকে ক্যাচ নিলে কামিন্দু পান প্রথম টেস্ট উইকেটের স্বাদ। লিটন আবার ফেরেন বাজে শটে। কুমারার অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের শর্ট বল পুল করার চেষ্টায় থাকা লিটনের ব্যাটের নিচের কানায় লাগে। সামনে এগিয়ে এসে ক্যাচ নেন উইকেটরক্ষক কুসল মেন্ডিস। ৭২ বলে তার রান ৩৮।

দলীয় ৪ রানের মধ্যে সাকিব-লিটনের বিদায়ের পর সপ্তম উইকেট জুটিতে আসে ৫৪ বলে ৪৬ রান। এই জুটি ভেঙেও ব্রেক থ্রু এনে দেন কামিন্দু। ব্যর্থতার ধারা বজায় রেখে শাহাদাত হোসেন দিপু এলবিডব্লিউ হন ৩৪ বলে ১৫ রানে। রিভিউ নিলেও লাভ হয়নি। এই সিরিজের চার ইনিংসে তার রান মোট ৪১। দিনের বাকি ৫ ওভারে আর উইকেট পড়েনি।

সিলেটে সিরিজের প্রথম টেস্টে ৩২৮ রানের বিশাল ব্যবধানে জিতে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে আছে শ্রীলঙ্কা।

Comments