‘আমি বাংলাদেশ ক্রিকেটের আর সমাধান না’, ক্ষুব্ধ সুজন

Khaled Mahmud Sujon

বিভিন্ন সময়ে দল পরিচালক হয়ে দায়িত্ব পালন করলেও জাতীয় দলের সঙ্গে আর কখনো কাজ করতে চান না খালেদ মাহমুদ সুজন। সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমান বোর্ড পরিচালক ক্ষুব্ধ কন্ঠে জানান, গত বিশ্বকাপে তাকে প্রাপ্য সম্মান দেওয়া হয়নি। তিনি তাই আর কখনই জাতীয় দলের আশেপাশে যাবেন না।

ভারতের অনুষ্ঠিত হওয়া বিশ্বকাপে 'টিম ডিরেক্টর' পদ দিয়ে দলের সঙ্গেই ছিলেন সুজন। তবে বিশ্বকাপচলাকালীনই দলের কিছু সিদ্ধান্তের দ্বিমত করে গণমাধ্যমে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। টিম ডিরেক্টর থাকলেও তার কোন ক্ষমতা ছিলো না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। প্রধান কোচ চণ্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে তার দূরত্বের তৈরি হওয়ার গুঞ্জন শোনা যায়।

রোববার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপে কিছুটা অভিমান, কিছুটা ক্ষোভ মেশানো কণ্ঠে প্রতিক্রিয়া দিলেন সুজন,  'আমি মনে হয় বাংলাদেশ ক্রিকেটের আর সমাধান না। বাংলাদেশের আরও বড় সমাধান আছে। আমার আর বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোন দায়িত্বে আগ্রহও নেই। গত বিশ্বকাপে আমি যা করেছি, আমি মনে করি ওটা আমার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের সঙ্গে যায় না আসলে। হয়তো বা আমি অত বড় কোচ না , অত কিছু জানিও না ক্রিকেট নিয়ে। তারপরও আমার সম্মান আছে, গত বিশ্বকাপে আমি সেই সম্মানটা পাইনি। আমি আর এই কাজ করতেও চাই না।'

বোর্ড পরিচালক সুজন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আবাহনী লিমিটেডের প্রধান কোচ। বিপিএলে তাকে একেক সময় একেক দলের দায়িত্বে দেখা যায়। এছাড়া রাজশাহীতে বাংলা ট্র্যাক একাডেমির দায়িত্বেও আছেন তিনি। জাতীয় দলের বাইরে এখন ওই দায়িত্বগুলোই পালন করতে চান বাংলাদেশের সাবেক এই অধিনায়ক।  'আমি নিজের জীবন নিয়ে থাকতে চাই। আমি আবাহনী, বিপিএলে, রাজশাহীতে ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে কাজ করি। আমি এগুলো নিয়ে খুব খুশি আছি। দেশের ক্রিকেটের কোন উন্নতিতে যদি কাজ করতে হয় তবে অবশ্যই করবো। কিন্তু জাতীয় দলের অ্যাসাইনমেন্টগুলো হয়তো আমার জন্য না, আমি যেটা বললাম আমি হয়তো ওটা ডিজার্ভ করি না।'

বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন যদি অনুরোধও করেন তবুও জাতীয় দলের সঙ্গে আর কাজ করবেন না তিনি। বরং তার আশা বিসিবি সভাপতি এমন অনুরোধ তাকে আর করবেন না,  'পাপন ভাই আমার অধিনায়ক উনি আমাকে যখন বলে যে ফাইন লেগে ফিল্ডিং করতে আমি করবো। কিন্তু আমি মনে করি উনি আর আমাকে বলবেন না ফাইন লেগে ফিল্ডিং করতে। আমি মনে করি আমি কোন সমাধান না এখন আর। এত বড় বড় কোচরা আসছে যারা উচ্চ বেতনের, তাদের মধ্যে আমার না যাওয়াটাই ভালো। আমি এখন আর ২৮-২৯ বছরের বালক না, আমার সম্মানটা এখন আমাকে রাখতে হবে। পাপন ভাইকে আগের মতোই সম্মান করি। কিন্তু আমি অনুরোধ করি পাপন ভাইকে যেন উনি আমাকে আর এ বিষয়ে কোন কাজ করতে না বলেন।'

বিশ্বকাপে দলের সঙ্গে থাকলেও কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়াগায় তাকে রাখা হয়নি। সুজনের ক্ষোভ মূলত তা নিয়ে। বারবার তা মনে করিয়ে দেন তিনি,  'অপমান কথাটা বলব না, আমি তো ক্রিকেট পছন্দ করি। একটা জয়গায় যখন কাজ করেছি, সেই জায়গাটা যখন না পাই কাজ করতে, এতগুলো ট্যুর করার পর আমার কাজটা পরিবর্তন হয়ে যায় তাহলে আমাকে ওই দায়িত্বে রাখার কোন মানে হয় না আসলে। আমি সেই কাজ না করতে পারি তাহলে কেন করবো, আমি তো ট্যুর করতে যাই না বাংলাদেশ দলের সঙ্গে। আমি বিদেশ অনেক ঘুরেছি, বিদেশ ঘুরার কোন ইচ্ছাই নাই আমার। কাজেই আমি মনি করি আমি এর বাইরে। হাথুরুসিংহে বিশ্বের সেরা কোচ হতে পারে সেটা আমার কাছে কোন মূল্য রাখে না। আমার বাংলাদেশে অনেক সম্মান আছে, ক্রিকেটাররা আমাকে অনেক সম্মান করে, আমি সেই সম্মানের জায়গাটা হারাতে চাই না।'

Comments

The Daily Star  | English

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

11h ago