রোহিত-রাহুলদের সতীর্থ ছিলেন বাংলাদেশকে হারানো হারমিত
হারমিত সিং যখন ক্রিজে আসেন সম্ভাবনার বিচারে তখন পিছিয়ে যুক্তরাষ্ট্র। ৩১ বলে তাদের দরকার ছিল ৬০ রানের। সেটা আরও কঠিন হয়ে গেলো যখন সমীকরণ বলছে ২৪ বলে চাই ৫৫ রান। তবে ওই সময়ে সেটা মিলিয়ে দিলেন হারমিত। কোরি অ্যান্ডারসনকে ছাপিয়েও বাঁহাতি হারমিত শরিফুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমানদের বলে যেভাবে ছক্কা পিটিয়ে ম্যাচ বের করে নিলেন তাতে তার ব্যাপারে বাড়ালো কৌতূহল।
মঙ্গলবার হিউস্টনে বাংলাদেশকে ৫ উইকেটে হারিয়ে দেওয়ার দিনে মাত্র ১৩ বল ৩ ছয়, ২ চারে ৩৩ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরা হারমিত। এর আগে ৪ ওভার বল করে দেন ২৭ রান। ডেথ ওভারে বাংলাদেশের ভীতির কারণ ছিলেন অ্যান্ডারসন, কিন্তু সাবেক কিউই ক্রিকেটার টাইমিং পাচ্ছিলেন না। তখনই আবহ বদলে দেন হারমিত। শরিফুল, মোস্তাফিজদের বল সোজা ব্যাটে যেভাবে অনায়াসে বিশাল সব ছক্কা মেরেছেন তাতেই ম্যাচ চলে যায় স্বাগতিক দলের মুঠোয়।
যুক্তরাষ্ট্র দলের আরও অনেকের মতন হারমিতও ভারতীয় অভিবাসী। মুম্বাইতে জন্ম নেওয়া ৩১ পেরুনো ক্রিকেটার ভারতের হয়ে খেলেছেন ২০১০ ও ২০১২ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ। ২০১০ সালে তার সতীর্থ ছিলেন লোকেশ রাহুল মায়াঙ্ক আগারওয়ালরা। ২০১২ সালে উন্মুক্ত চাঁদের নেতৃত্বাধীন চ্যাম্পিয়ন দলেও ছিলেন তিনি।
এরপর মুম্বাইর হয়ে খেলেছেন রঞ্জি ট্রফি। শেষ দিকে মুম্বাইতে জায়গা না পেয়ে খেলেন ত্রিপুরার হয়ে। ২০১২ সালে মুম্বাইর হয়ে প্রথম শ্রেণীর অভিষেকে ওয়াসিম জাফর, রোহিত শর্মা, আজিঙ্কা রাহানে, অজিত আগারকারদের সতীর্থ হিসেবে পেয়েছিলেন তিনি।
মূলত বাঁহাতি স্পিনের সঙ্গে টুকটাক ব্যাটিং পারা হারমিতের প্রথম শ্রেণীর ক্যারিয়ার আটকে আছে ৩১ ম্যাচে, যাতে ৮৭ উইকেট আর ৭৩৩ রান তার।
আইপিএলেও খেলেছিলেন হারমিত। ২০১৩ সালের আসরে রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে খেলতে পারেন স্রেফ এক ম্যাচ। রাহুল দ্রাবিড়ের নেতৃত্বে সেই ম্যাচে ৪ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে পান ১ উইকেট।
২০২০ সালের পর ভারতীয় ক্রিকেটে ক্রমেই সরু হয়ে আসে হারমিতের পথ। নতুন পথ খুঁজতে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়ে সেখানকার নাগরিকত্ব নেন তিনি। তিন বছর টানা বসবাসের শর্ত পূরণ করে আন্তর্জাতিক ম্যাচে নামার অনুমতিও পান। এবার বাংলাদেশকে হারিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বিখ্যাত জয়ের নায়ক বনে গেলেন বাঁহাতি স্পিন অলরাউন্ডার। মূল কাজটা করলেন মারকাটারি ব্যাটিং দিয়েই।
Comments