ছন্নছাড়া জিম্বাবুয়েকে সহজে হারিয়ে ভারত এগিয়ে গেল সিরিজে
সিরিজ সমতায় রেখে নামা জিম্বাবুয়ে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে পাত্তাই পেল না। জয়-পরাজয়ের ব্যবধান ২৩ রানের হলেও পুরো ম্যাচে সিকান্দার রাজার দল পিছিয়েই থেকেছে। তিনটি ত্রিশোর্ধ্ব রানের ইনিংসে ভর করে ভারত গড়ে ১৮২ রানের পুঁজি। এরপর সাত ওভারেই জিম্বাবুয়ের পাঁচজন ব্যাটারকে প্যাভিলিয়নে পাঠিয়ে দেয় তাদের বোলাররা। শেষমেশ ডিয়ন মায়ার্সের ফিফটিতে ১৫৯ রান পর্যন্তই যেতে পারে জিম্বাবুয়ে।
বুধবার হারারে স্পোর্টস ক্লাবে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে গিল খেলেন ৪৯ বলে ৬৬ রানের ইনিংস। ২৮ বলে ৪৯ রান করে রুতুরাজ গায়কোয়াড় তাদের ইনিংসে প্রাণ এনে দেন। বিশ্বজয়ের আনন্দের পর মাঠে ফিরে যশস্বী জয়সওয়াল ২৭ বলে ৩৬ রান করেন। ভারতের হারানো চারটি উইকেট এনে দেন রাজা ও ব্লেসিং মুজারাবানি মিলে। ফিল্ডিং ও বোলিং মিলিয়ে ছন্নছাড়া জিম্বাবুয়ে দলে উজ্জ্বল থাকেন এই দুজন। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন তারা, দেননি ২৫ রানের বেশি। ব্যাট হাতে যদিও ৩৯ রানেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই ছিটকে পড়ে তাদের দল। জিম্বাবুয়ের ৬ উইকেটের তিনটিই যায় ওয়াশিংটন সুন্দরের পকেটে। চার ওভারে ১৫ রান দেন এই স্পিনার। বাকি বোলারদের সম্মিলিত অবদানে ২৩ রানের জয়ে সিরিজে ভারত ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়া নিশ্চিত করে।
এদিন জুটি পরিবর্তন করলেও জিম্বাবুয়ের ওপেনিং দুর্গতি কাটেনি। টানা তৃতীয় ম্যাচে প্রথম দুই ওভারের মধ্যেই উইকেট খুইয়েছে জিম্বাবুয়ে। আগের দুই ম্যাচে অপর প্রান্তে থেকে সঙ্গীর ফিরে যাওয়া দেখেছিলেন, এদিন ওয়েসলি মাধেভেরের ফেরার পালা এসে যায় আগে। ২ বলে ১ রানে তিনি আউট হওয়ার পর দ্রুতই আরেক ওপেনার একই পথ ধরেন। একাদশে সুযোগ পাওয়া তাদিওয়ানেশে মারুমানি আউট হয়ে যান ১০ বলে ১৩ রান করে। ব্রায়ান বেনেট পয়েন্টে রবি বিষ্ণোইয়ের লাফিয়ে নেওয়া দুর্দান্ত ক্যাচের শিকার হন ৪ রানে।
টানা তিন ওভারে উইকেট হারানো জিম্বাবুয়েকে উদ্ধারের দায়িত্ব বেশিক্ষণ সামলাতে পারেননি রাজা। ৭ম ওভারে ফিরে যান তিনি ১৬ বলে ১৫ রান করে। সুন্দর ওই ওভারেই জোনাথন ক্যাম্পবেলকে আউট করেন ১ রানে। ৩৯ রানে অর্ধেক উইকেট হারিয়ে ছিটকে পড়ে জিম্বাবুয়ে। ৭৭ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটি ব্যবধান কমাতে শুধু রাখে অবদান। ১৭তম ওভারে ক্লাইভ মাদান্দের ২৬ বলে ৩৭ রানের ইনিংস সমাপ্তি লিখে দেন সুন্দর। ৪৫ বলে ফিফটি পূর্ণ করা মায়ার্স শেষ পর্যন্ত থাকেন। অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন ৪৯ বলে ৭টি চার ও ১টি ছক্কায় গড়া ৬৫ রানের ইনিংস খেলে। শেষের দিকে ১০ বলে ১৮ রানের ক্যামিও খেলেন ওয়েলিংটন মাসাকাদজা।
এর আগে জয়সওয়াল ওপেনিংয়ে শুবমান গিলের সঙ্গে নেমে এনে দেন দারুণ শুরু। তারা প্রথম তিন ওভারেই এনে ফেলেন ৪১ রান। মুজারাবানি এসে লাগাম টেনে ধরলে পাওয়ারপ্লে শেষে ভারতের স্কোর গিয়ে থামে ৫৫ রানে। রাজা চেপে ধরেন ভারতকে। তার বলে জয়সওয়াল রিভার্স সুইপে পয়েন্টের হাতে ধরা পড়েন ২৭ বলে ৩৬ রানে। ৪টি চার ও ২টি ছক্কার ইনিংস খেলে যখন ফিরছেন তিনি, ভারতের রান ৮.১ ওভারে ৬৭। অভিষেক শর্মা শুরু থেকেই আগ্রাসী ভঙ্গিতে খেলতে থাকেন, যদিও বাউন্ডারিতে ক্যাচ তুলে তাকে ফিরতে হয় ৯ বলে ১০ রানেই।
পাওয়ারপ্লের পর রানের গতি কমে যায় গিলের। ১৩তম ওভারে ওয়েসলি মাধেভেরের ওভারে ভারত চড়াও হয়। ১৯ রানের সেই ওভারে দলটি শতরানের দেখা পায়। এরপর গিলের ফিফটি আসে ৩৬ বলে। পরের ১৩ বলে মাত্র ১৬ রান করতে পারেন ভারতের অধিনায়ক। ৭টি চার ও ৩টি ছক্কায় গড়া তার ৪৯ বলে ৬৬ রানের ইনিংস থামে ১৮তম ওভারে। চারে নামা গায়কোয়াড় খেলেন ২৮ বলে ৪৯ রানের ইনিংস। ৩৩ রানে বেঁচে যাওয়ার পর ৪৭ রানে আবার জীবন পান তিনি। ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় গড়া ইনিংসে শেষের দিকে ঝড় তুলেন। শেষ চার ওভারে ভারত আনে ৫২ রান। তাদের ১৮২ রানের জবাব জিম্বাবুয়ে ব্যাট হাতে দিতে পারেনি জোরেশোরে। পাঁচ ম্যাচের সিরিজ জয় দিয়ে শুরু করলেও তাই দলটি পিছিয়ে থেকেই নামবে ১৩ তারিখের ম্যাচে!
Comments