ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে পাল্টা লড়াইয়ে লিটনের সেঞ্চুরি
ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে পাল্টা লড়াইয়ে নামলেন লিটন দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজ। রেকর্ড জুটি গড়ে মিরাজ সাজঘরে ফিরলে লিটন পৌঁছালেন কাঙ্ক্ষিত মাইলফলকে। পেশির টানে ভুগতে থাকা সত্ত্বেও টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি তুলে নিলেন তিনি।
রোববার রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের তৃতীয় দিনের তৃতীয় সেশনে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন লিটন। স্পিনার আবরার আহমেদের বল শেষ মুহূর্তের ছোঁয়ায় ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে সীমানার বাইরে পাঠিয়ে উল্লাসে মাতেন তিনি। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ১১ চার ও ২ ছক্কায় ১৭১ বলে সেঞ্চুরি পূরণ করেন লিটন। তিনি ফিফটিতে পৌঁছেছিলেন ৮২ বলে।
এই প্রতিবেদন লেখার সময়, ৬৫ ওভারে সফরকারীদের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ২১৭ রান। হাতে ২ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের চেয়ে এখনও ৫৭ রানে পিছিয়ে আছে তারা। লিটন ১৭২ বলে ১০৪ রানে ক্রিজে আছেন। হাসান মাহমুদ আস্থার পরিচয় রেখে ২৭ বলে ২ রানে খেলছেন। দুজনের জুটিতে চা বিরতির পর কোনো উইকেট হারায়নি টাইগাররা। তাদের অবিচ্ছিন্ন অষ্টম উইকেট জুটির সংগ্রহ ২৪ রান।
২৭ মাসের বেশি সময় পর সেঞ্চুরির স্বাদ নিলেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটার লিটন। ২০২২ সালের মে মাসে মিরপুরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষবার সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। প্রথম ইনিংসে খেলেছিলেন ক্যারিয়ারসেরা ১৪১ রানের ইনিংস। এরপর মাঝের ১৮ ইনিংসে পাঁচবার ফিফটি করলেও শতক ছুঁতে পারেননি।
বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে পাকিস্তানের বিপক্ষে একাধিক সেঞ্চুরির মালিক হলেন লিটন। এটি স্বাগতিক দলের বিপক্ষে তার দ্বিতীয় শতক। ৪৩ টেস্টের ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তিনি করেছিলেন পাকিস্তানেরই বিপক্ষে। ২০২১ সালের নভেম্বরে চট্টগ্রামে খেলেছিলেন ১১৪ রানের ইনিংস।
সেঞ্চুরির ক্ষেত্রে ভাগ্যের কিছুটা ছোঁয়াও মিলেছে লিটনের। তার জোরালো শটে ওঠা কঠিন ফিরতি ক্যাচ হাতে জমাতে পারেননি আবরার। তখন তিনি খেলছিলেন ৯০ রানে। এছাড়া বাকি সময় তিনি রেখেছেন সামর্থ্যের ছাপ। এক পর্যায়ে, লিটনের সংগ্রহ ছিল ৪৫ বলে ১৩ রান। এরপর হাত খুলে চড়াও হন প্রতিপক্ষের ওপর। তারপর ফের সাবধানী ব্যাটিংয়ে পৌঁছান ফিফটিতে। পরে আবার সুযোগ পেলেই মেরেছেন চার-ছক্কা।
দিনের শুরুতে ২৬ রানে ৬ উইকেট পড়ার পর জুটি বাঁধেন লিটন ও মিরাজ। বাংলাদেশকে ভয়াবহ বিপর্যয় থেকে রক্ষা করে তাদের প্রতিরোধ। তাদের সপ্তম উইকেট জুটিতে আসে রেকর্ড ১৬৫ রান। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে পঞ্চাশের নিচে ৬ উইকেট পড়ার পর এই প্রথম কোনো জুটির রান ছাড়াল দেড়শ।
ব্যাট হাতে ক্রমেই ধারাবাহিক হয়ে ওঠা মিরাজের বিদায়ে ভাঙে জুটি। ফিরতি ক্যাচে তাকে আউট করেন পেসার খুররম শাহজাদ। টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ৫ উইকেটের স্বাদ নেন তিনি। মিরাজ থামেন ৭৮ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলে। ১২৪ বল মোকাবিলায় তিনি মারেন ১২ চার ও ১ ছক্কা।
Comments