থিসারার ঝড়ো সেঞ্চুরির পরও মিরাজ-রনির নৈপুণ্যে জিতল খুলনা

১০ ওভারের মধ্যেই প্রথম সারির ছয় ব্যাটার সাজঘরে। রান হয়নি পঞ্চাশও। এরপর সেই দলটিকে শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ে রাখলেন থিসারা পেরেরা। এক প্রান্তে দানবীয় ব্যাটিংয়ে দলকে জয়ের খুব কাছে নিয়ে গেলেন তিনি। পেলেন সেঞ্চুরিও। কিন্তু মেহেদী হাসান মিরাজের কৃপণ বোলিং ও আবু হায়দার রনির অলরাউন্ড নৈপুণ্যে জয় মিলে খুলনা টাইগার্সেরই।
শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে ঢাকা ক্যাপিটালসকে ২০ রানে হারিয়েছে খুলনা টাইগার্স। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৭৩ রান করে তারা। রান তাড়ায় নেমে নিজেদের নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৫৩ রানের বেশি করতে পারেনি থিসারা পেরেরার দল।
যে গতিতে খুলনা টাইগার্সের ব্যাটাররা এগিয়ে যাচ্ছিলেন তাতে দেড়শর সামান্য বেশি পুঁজি হওয়াটাই ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু শেষ ওভারে রনির দানবীয় ব্যাটিংয়ে পৌঁছে যায় প্রায় পৌনে তিনশর কোটায়। এরপর মিরাজের কৃপণ বোলিং। প্রথম তিন ওভারে ২ রান দিয়ে নেন তিন উইকেট। আর রনি দুই ওভারে ১২ রান দিয়ে পান দুটি উইকেট। তাতেই চাপে পড়ে যায় ঢাকা।
এদিন ইনিংসের তৃতীয় ওভারে মিরাজ বল হাতে নিয়ে প্রথম দুই বলেই ফেরান লিটন দাস ও স্টিফেন এসকিনাজিকে। খরচ করেন দুই রান। এরপর পাওয়ার প্লে শেষে দুই ওভার করে এক রান দিয়ে নেন শুভাম রানজানের উইকেট। মাঝে দুটি উইকেট নেন রনি। আর আলাউদ্দিন বাবুকে ফেরান জিয়া। তাতে দলীয় ৪৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে ঢাকা।
এরপর অবশ্য প্রতিরোধ গড়েন দুই লঙ্কান ব্যাটার থিসারা ও চতুরঙ্গ ডি সিলভা। ৬৩ বলে অবিচ্ছিন্ন ১১২ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটার। এই জুটিতে ২০ বলে ১১ রান করেন চতুরঙ্গ ডি সিলভা। একই সঙ্গে শুরুর দিকে পর্যাপ্ত রান তুলতে না পারার ধাক্কাটা কাল হয়ে দাঁড়ায় শেষ দিকে। এক প্রান্তে বুক চিতিয়ে লড়াই করেও জেতাতে পারেননি থিসারা।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১০৩ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন থিসারা। ৬০ বলের ইনিংসটি খেলেন ৯টি চার ও ৭টি ছক্কার সাহায্যে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৯ রান করেন তানজিদ হাসান। খুলনার পক্ষে চার ওভার বল করে ৬ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নেন মিরাজ। ২টি শিকার রনির।
খুলনা অবশ্য জয়ের ভিত পায় শেষ চার ওভারের দানবীয় ব্যাটিংয়ে। ইনিংসের ১৬ ওভার যখন শেষ হয় তখন তাদের সংগ্রহ ছিল ৬ উইকেটে ১১০ রান। এরপর মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, জিয়াউর রহমান ও আবু হায়দার রনির ঝড় ব্যাটিংয়ে শেষ ২৩ বলে তারা রান তুলেছে ৬২।
আবু জায়েদ রাহীর করা ১৭তম ওভারে দুটি ছক্কা ও একটি চারে আসে ২০ রান। এরপর মোস্তাফিজ ও রাহীর আরও একটি ওভারে যথাক্রমে ৮ ও ১২ রান আসে। তবে ইনিংসের শেষ ওভারে তিনটি ছক্কা ও একটি চারে আসে ২৩ রান। তাতে পৌনে দুইশর কাছাকাছি পুঁজি পেয়ে যায় দলটি।
তবে ইনিংসের শুরুটাও ভালো করেছিল খুলনা। মোহাম্মদ নাঈম ও উইলিয়াম বোসিস্টের ব্যাটে ওপেনিং জুটিতে আসে ৫৯ রান। এ জুটি ভাঙার পর ম্যাচে ফেরে ঢাকা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে দলীয় ৯৬ রানে হারিয়ে ফেলে ৬টি উইকেট। তবে শেষ পর্যন্ত বড় পুঁজিই পায় তারা।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩২ রানের ইনিংস খেলেন অঙ্কন। আগের ম্যাচেই দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে বিপিএলে দ্রুততম ফিফটি তুলে নেওয়া এই ব্যাটার ২২ বলে এই রান করেন ১টি চার ও ২টি ছক্কায়। ৮ বলে ৩টি ছক্কায় ২১ রানের ক্যামিও খেলে অপরাজিত থাকেন রনি। ২২ রান করেন জিয়া।
Comments