বার্লের ঘূর্ণিতে রংপুরকে মাটিতে নামাল রাজশাহী

ব্যাট হাতে কিছুই করতে পারতে পারেননি রায়ান বার্ল। তবে বল হাতে গর্জে উঠলেন এই জিম্বাবুইয়ান। রংপুর রাইডার্সকে আশা দেখানো অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে তো ফিরিয়েছেনই, সঙ্গে তুলে নিয়েছেন আরও দুটি উইকেট। তাতে রংপুরকে আসরের প্রথম হারের স্বাদ দিল দুর্বার রাজশাহী।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বিপিএলের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে রংপুর রাইডার্সকে ২৪ রানে হারিয়েছে তাসকিন আহমেদের দল। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৭০ রান করে রাজশাহী। জবাবে ১৪৬ রানে গুটিয়ে যায় রংপুর। এই জয়ের পয়েন্ট টেবিলের চতুর্থ স্থানে উঠে এলো রাজশাহী।
এদিনের আগের ৮ ম্যাচেই জিতে আসরে একমাত্র অপরাজিত দল ছিল রংপুর। বোলারদের পারফরম্যান্সে তাদের হারের স্বাদ দেয় রাজশাহী। লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে সোহানের দল। দলীয় ১৫ রানেই টপ অর্ডারের তিন উইকেট হারায় তারা। এরমধ্যে ইরফান শুক্কুর ও ইফতেখার আহমেদ তো রানের খাতাই খুলতে পারেননি। এ দুই ব্যাটারকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন এসএম মেহেরব। তবে খুশদিল শাহর ডিফেন্সে হ্যাটট্রিক হয়নি।
সাইফ হাসানকে কিছুটা সঙ্গ দিয়ে সাব্বির হোসেনের শিকার হন খুশদিল। চতুর্থ উইকেটে ৪০ রান যোগ করেন তারা। এরপর খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি সাইফ। ২৯ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৩ রান করে বিদায় নেন শফিউল ইসলামের বলে। এরপর বল হাতে আসেন বার্ল। প্রথম ওভারে তুলে নেন শেখ মেহেদী হাসানের উইকেট। সোহান যথারীতি আগ্রাসন চালিয়ে যান। ২৬ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪১ রান করে আশা দেখান রংপুরকে। তবে বার্লের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে টাইমিংয়ে হেরফের করে বিদায় নেন তিনি।
এরপর আকিফকেও ফেরান বার্ল। তখন রংপুরের শেষ আশা ছিল সাইফউদ্দিনকে ঘিরে। তাকে খুব বেশি আগাতে দেননি বার্ল। ১৪ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৩ রান করেন তিনি। এরপর নাহিদ রানাকে ছাঁটাই করেন অধিনায়ক তাসকিন। তাতেই জয় নিশ্চিত হয় তাদের। ২২ রানের খরচায় ৪টি উইকেট নিয়ে সেরা বোলার বার্ল। দুটি করে উইকেট পান তাসকিন ও মেহেরব।
এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালোই করে রাজশাহী। দলীয় ২৪ রানে মোহাম্মদ হারিসকে হারালেও সাব্বির রহমান ও এনামুল হক বিজয়ের ব্যাটে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে আসে ২৯ বলে আসে ৫২ রান। যেখানে ১৬ বলে ৩৪ রান করে সাব্বির সাব্বিরকে সাইফউদ্দিনের ক্যাচে পরিণত করে এই জুটি ভাঙেন খুশদিল শাহ। শেষ পর্যন্ত ১৯ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩৯ রান আসে সাব্বিরের ব্যাট থেকে।
এর ঠিক পরের বলে রায়ান বার্লকেও ফেরান খুশদিল। তবে ইয়াসিরের ব্যাটে হ্যাটট্রিক মিলেনি। বিজয়ের সঙ্গে দারুণ এক জুটি গড়েন ইয়াসির। ৫০ বলে স্কোরবোর্ডে ৭৬ রান যোগ করেন তারা। অবশ্য বিজয় ব্যাট করেছেন মন্থর গতিতেই। জুটিতে তার অবদান ১৮ বলে ১৬। ইয়াসির আক্রমণাত্মক হওয়ার চেষ্টা চালান। খুশদিলের তৃতীয় শিকার হওয়ার আগে ৩২ বলে ২টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৬০ রান করেন তিনি।
খুশদিলের বিদায়ের এক বল পরেই রানআউট হন বিজয়। ৩১ বলে করেন ৩৪ রান। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে আর কোনো ব্যাটার দায়িত্ব নিতে পারেননি। ১৬ ওভারেই তাই ১৫৩ রান তুলে ফেলা দলটি আর যোগ করতে পারে ১৭ রান। ১৮ রানের ব্যবধানে হারায় ৭টি উইকেট। রংপুরের পক্ষে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন খুশদিল ও আকিফ জাভেদ।
Comments