রানা-জাদেজার দারুণ বোলিংয়ের পর তিন ফিফটিতে জিতল ভারত

রবীন্দ্র জাদেজা ও অভিষিক্ত হার্শিত রানার দুর্দান্ত বোলিংয়ে জস বাটলার ও জ্যাকব বেথেলের ফিফটি সত্ত্বেও পুঁজিটা বড় করতে পারেনি ইংল্যান্ড। লক্ষ্যটা নাগালেই রাখে স্বাগতিকরা। এরপর তিন ব্যাটার শুভমান গিল, শ্রেয়াস আইয়ার ও আকসার প্যাটেলের হাফসেঞ্চুরিতে জয় তুলে নিতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি ভারতকে। দারুণ জয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল তারা।
বৃহস্পতিবার নাগপুরে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে ভারত। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৭.৪ ওভারে ২৪৮ রান করে গুটিয়ে যায় সফরকারীরা। জবাবে ৬৮ বল হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে রোহিত শর্মার দল।
তবে লক্ষ্য তাড়ায় অবশ্য শুরুটা ভালো ছিল না ভারতের। দলীয় ১৯ রানে জোড়া ধাক্কা খায় দলটি। দুই ওপেনারকেই হারায় তারা। যশস্বী জসওয়ালকে ফেরান জোফ্রা আর্চার, আর অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে তুলে নেন সাকিব মাহমুদ। তবে তৃতীয় উইকেটে শ্রেয়াস আইয়ারকে নিয়ে হাল ধরেন শুভমান গিল। গড়েন ৯৪ রানের জুটি। আইয়ারকে বোল্ড করে এই জুটি ভাঙেন জ্যাকব বেথেল।
এরপর আকসার প্যাটেলের সঙ্গে ১০৮ রানের আরও একটি দারুণ জুটি গড়েন গিল। তাতেই জয়ের ভিত পেয়ে যায় স্বাগতিকরা। আকসারকে বোল্ড করে দিয়ে এই জুটি ভাঙেন আদিল রশিদ। পরের ওভারে লোকেশ রাহুলকে তুলে নেন এই স্পিনার। আর আরেক সেট ব্যাটার গিলকে ফিরিয়ে আশা জাগান সাকিব। তবে ভারত ততক্ষণে জয়ের খুব কাছে চলে আসায় লাভ হয়নি। হার্দিক পান্ডিয়া ও রবীন্দ্র জাদেজা কাজ সহজেই শেষ করেন।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৭ রানের ইনিংস খেলেন গিল। ৯৬ বলের ইনিংসটি সাজান ১৪টি চারের সাহায্যে। ৩৬ বলে ৯টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৯ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন শ্রেয়াস। ৪৭ বলে ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫২ রান করেন আকসার। ইংল্যান্ডের পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন সাকিব ও আদিল।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে পিচের গতি বুঝতে সংগ্রাম করছিলো ইংলিশ ব্যাটাররা। বল ধীর গতিতে আসলেও কিছু অতিরিক্ত বাউন্স করছিলো। তারপরও ৭৫ রানের ওপেনিং জুটি পায় দলটি। নবম ওভারে সবচেয়ে বড় ভুলটি করে তারা। বেন ডাকেট তৃতীয় রানের জন্য ফিল সল্টের ডেকে প্রত্যাখ্যান করেন, যদিও পিচের প্রায় মাঝপথে পৌঁছে গিয়েছিলেন সল্ট।
এরপর অভিষিক্ত হার্শিত রানা তিন বলের ব্যবধানে ডাকেট ও হ্যারি ব্রুককে ছাঁটাই করে বড় চাপে ফেলে দেন ইংলিশদের। তবে জো রুটকে সঙ্গে নিয়ে চাপ কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চালান অধিনায়ক জস বাটলার। পেছনের পায়ে স্বচ্ছন্দে খেলার পাশাপাশি রিভার্স সুইপ করেও স্পিনারদের লাইনে সমস্যা তৈরি করছিলেন রুট। কিন্তু তার প্রতিশ্রুতিশীল ইনিংসটি থামে ১৯ রানে। রবীন্দ্র জাদেজার একটি কুইকার ডেলিভারি ব্যাকফুটে খেলতে গিয়ে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েন।
তবে জ্যাকব বেথেলকে নিয়ে সতর্কতার সঙ্গে ইনিংস সামলান বাটলার। রান তোলার গতি কমে গেলেও পঞ্চম উইকেটে ৫৯ রানের জুটি গড়েন তারা। জাদেজাকে সামলানো কঠিন হলেও, অক্ষর প্যাটেলকে সিঙ্গেল নিয়ে খেলছিলেন তারা। তবে অর্ধশতক পূর্ণ করার দুই ওভার পর আকসার প্যাটেলের একটি নিচু হয়ে আসা বল সুইপ করতে গিয়ে টাইমিং ভুল করে স্কয়ার লেগে ধরা পড়েন ইংলিশ অধিনায়ক।
লিয়াম লিভিংস্টোন ধৈর্য রাখতে পারেননি। তবে কিছু সময় ব্রায়ডন কার্স এবং আদিল রশিদের সঙ্গে স্ট্রাইক রোটেট করে খেলেন বেথেল। কিন্তু জাদেজার বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েন। আর্চার আক্রমণাত্মক মেজাজে হার্দিক পান্ডিয়ার টানা তিন বলে দুটি বাউন্ডারি ও একটি ছক্কা হাঁকান। তার ঝড়ো ইনিংসে আড়াইশর কাছাকাছি পুঁজি পায় ইংল্যান্ড।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫২ রানের ইনিংস খেলেন বাটলার। ৬৭ বলে ৪টি চারের সাহায্যে এই রান করেন তিনি। ৬৪ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫১ রান করেন বেথেল। ২৬ বলে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪৩ রান করেন সল্ট। এছাড়া ৩২ রান আসে ডাকেটের ব্যাট থেকে। ভারতের পক্ষে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন জাদেজা ও হার্শিত।
Comments