শেষ ছয়জন মিলে ৩ রান, হুড়মুড় করে ভেঙে হারল পাকিস্তান

নিউজিল্যান্ডের দেওয়া ৩৪৫ রানের লক্ষ্যে নেমে চাহিদা তখন আর ৯৬ রানের। বল বাকি ৬৯। হাতে জমা ৭ উইকেট। ক্রিজে দুই থিতু ব্যাটার অভিজ্ঞ বাবর আজম ও অধিনায়ক সালমান আগা। অর্থাৎ জয়ের সম্ভাবনা খুব ভালোভাবেই টিকেছিল পাকিস্তানের। তবে সেদিকে না এগিয়ে নিজেদের 'আনপ্রেডিক্টেবল' তকমাটা প্রমাণে যেন ব্যস্ত হয়ে পড়ল দলটি!
ইনিংসের ৩৯তম ওভারে উইলিয়াম ও'রোর্কের চতুর্থ বলটি পুল করে সীমানাছাড়া করতে চেয়েছিলেন বাবর। সংযোগ প্রায় ঠিকঠাকই হয়। তবে ডিপ স্কয়ার লেগে বাউন্ডারি লাইনের সামান্য ভেতরে থেকে ক্যাচ লুফে নেন ড্যারিল মিচেল। শুরু হয় পাকিস্তানের ইনিংসে নাটকীয় ধস। হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে তারা। ৩৪ বলের মধ্যে ২২ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে অলআউট হয়ে যায় ২৭১ রানে। তখনও বাকি ছিল ৩৫ বল।
পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপের শেষ ছয়জন মিলে করেন স্রেফ ৩ রান! তায়্যিব তাহির ১ রানে কাটা পড়েন রানআউটে। ইরফান খানকে গোল্ডেন ডাকের তেতো স্বাদ দেন জ্যাকব ডাফি। নাসিম শাহ (০) ও হারিস রউফ (১) ফেরেন ন্যাথান স্মিথের একই ওভারে। ক্ষীণ আশা হয়ে ক্রিজে থাকা সালমান ডাফির বলে বিদায় নেওয়ার পর আকিফ জাভেদকে ১ রানে আউট করেন স্মিথ। মোহাম্মদ আলী শূন্য রানে অপরাজিত থাকেন।
শনিবার নেপিয়ারে প্রথম ওয়ানডেতে শেষমেশ পাকিস্তান হেরেছে ৭৩ রানের বড় ব্যবধানে। টস হেরে আগে ব্যাটিং পাওয়া নিউজিল্যান্ড নির্ধারিত ৫০ ওভারে পেয়েছিল ৯ উইকেটে ৩৪৪ রানের বড় পুঁজি। নিয়মিত তারকাদের ছাড়াই দুর্দান্ত জয়ে তারা তিন ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেছে ১-০ ব্যবধানে। আইপিএল, চোট ও ছুটি মিলিয়ে প্রথম সারির বেশ কয়েকজনকে চলতি সিরিজে পাচ্ছে না কিউইরা।
রান তাড়ায় ৭৬ বলে ৮৩ রানের উদ্বোধনী জুটি পায় পাকিস্তান। ভিত গড়ে দিয়ে বিদায় নেন দুই ওপেনার। উসমান খান ৩৩ বলে করেন ৩৯ রান। আবদুল্লাহ শফিক থামেন ৪৯ বলে ৩৬ রানে। এরপর অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ানের সঙ্গে ৭৯ বলে ৭৬ এবং সালমানের সঙ্গে ৫৯ বলে ৮৫ রানের জুটিতে দলকে কক্ষপথে রাখেন বাবর। কিন্তু তিনি আউট হওয়ার পর সবকিছু ভেঙে পড়ে তাসের ঘরের মতো।
বাবরের ব্যাট থেকে আসে ৮৩ বলে সর্বোচ্চ ৭৮ রান। রিজওয়ান করেন ৩৪ বলে ৩০ রান। সালমান বিদায় নেন ৪৮ বলে ৫৮ রান করে। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে স্মিথ ৪ উইকেট নেন ৬০ রানে। দুটি উইকেট যায় ডাফির ঝুলিতে। এর আগে স্বাগতিকদের সংগ্রহ সাড়ে তিনশর কাছে যায় মার্ক চ্যাপম্যান (১১১ বলে ১৩২ রান), মিচেল (৮৪ বলে ৭৬ রান) ও মুহাম্মদ আব্বাসের (২৬ বলে ৫২ রান) নৈপুণ্যে। পাশাপাশি পাকিস্তানের এলোমেলো বোলিংয়ের কারণে অতিরিক্ত খাত থেকে আসে ৪৩ রান।
জন্মভূমির বিপক্ষে খেলতে নেমে অলরাউন্ডার আব্বাস গড়েন বিশ্ব রেকর্ড। ওয়ানডে অভিষেকে দ্রুততম ফিফটির কীর্তি এখন তার। তিনি হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন মাত্র ২৪ বলে। এতদিন এই রেকর্ডের মালিক ছিলেন দুজন। ভারতের ক্রুনাল পান্ডিয়া ২০২১ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের আলিক আথানেজ ২০২৩ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে সমান ২৬ বলে ফিফটি হাঁকিয়েছিলেন।
Comments