তামিমদের চাপে হৃদয়ের শাস্তি আরেক দফা পাল্টাল বিসিবি

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

তাওহিদ হৃদয়ের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে চলমান নাটকের নতুন একটি পর্বের মঞ্চায়ন হলো। আরেক দফা তার শাস্তি পাল্টাল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তামিম ইকবালের নেতৃত্বাধীন প্রতিবাদী ক্রিকেটারদের চাপের মুখে নতি স্বীকার করল দেশের শীর্ষ ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

মাঠে আম্পায়ারের সঙ্গে বাজে আচরণ এবং পরে গণমাধ্যমের কাছে আম্পায়ারদের সমালোচনা করায় ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছিলেন হৃদয়। তবে এক ম্যাচ বাইরে থাকার পর মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের এই ক্রিকেটারকে নিয়ম ভঙ্গ করে দ্বিতীয় ম্যাচে খেলার সুযোগ দেয় বিসিবি। অর্থাৎ তার সাজা কমানো হয়। এই ঘটনায় তোলপাড় হওয়ার পর গতকাল তাকে নতুন করে আবার এক ম্যাচ নিষিদ্ধ রাখার ঘোষণা আসে। মানে দাঁড়ায়, আগের শাস্তি বহাল রাখা হয়।

প্রিমিয়ার লিগ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিসের (সিসিডিএম) টেকনিক্যাল কমিটির নতুন আহ্বায়ক নাজমুল আবেদিন ফাহিম এই সিদ্ধান্ত দেন। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই হৃদয়ের শাস্তির ধরন আবার পাল্টানো হয়েছে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শুক্রবার সন্ধ্যায় তা নিশ্চিত করেছে বিসিবি।

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, বাংলাদেশ জাতীয় দলের ব্যাটার হৃদয়ের বাকি শাস্তি পেছানো হয়েছে। তিনি ওই এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা আগামী ১২ মাসের মধ্যে যে কোনো সময়ে ভোগ করবেন। নতুন এই সিদ্ধান্তের পর চলমান সুপার লিগে মোহামেডানের বাকি দুই ম্যাচেই খেলতে পারবেন হৃদয়। ফলে আগামীকাল মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে মাঠে দেখা যাবে তাকে।

হৃদয়ের নিষেধাজ্ঞা ইস্যুসহ গত কয়েক মাসের বিভিন্ন ঘটনায় বিসিবির ওপর নাখোশ একদল ক্রিকেটার। এদিন দুপুরে মিরপুরের একাডেমি ভবনে প্রথমে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন তারা। এরপর বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক তামিমের নেতৃত্বে তারা বিসিবি কার্যালয়ে আলোচনায় বসেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের সঙ্গে। সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন বোর্ডের দুই পরিচালক নাজমুল আবেদিন ফাহিম ও ইফতেখার রহমান মিঠু।

দীর্ঘ সভা শেষে বিকালে সংবাদ সম্মেলনে হৃদয়ের সাজা নিয়ে বিসিবিকে কাঠগড়ায় তোলেন তামিম। ক্ষোভ নিয়ে তিনি বলেন, 'হৃদয়ের ইস্যুটা... ওর সঙ্গে মাঠে একটা ঘটনা হয়, ওকে দুটি ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়। তখন কিন্তু কোনো খেলোয়াড় বা কেউ এটা নিয়ে কথা বলেনি। আম্পায়ার আর ম্যাচ রেফারি মিলে তাকে নিষিদ্ধ করেছে। ব্যক্তিগতভাবে আমরা মনে করতে পারি, সিদ্ধান্তটা কঠোর ছিল। কিন্তু এটা নিয়ে আমরা কিন্তু কেউ কোনো কথা বলিনি।'

তিনি যোগ করেন 'কিছুদিন পর দেখলাম যে, (নিষেধাজ্ঞা) দুই ম্যাচ থেকে এক ম্যাচ করা হলো। এটা বিসিবি করেছে। তখনও আমরা কেউ কোনো কথা বলিনি। তারপর হৃদয় একটা ম্যাচ না খেলে পরের দুটি ম্যাচ খেলল। স্বাভাবিকভাবে ওর যে শাস্তি ছিল (এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা), সেটা সে ভোগ করে নিয়েছে। এখন দুটি ম্যাচ খেলার পর গতকাল শুনলাম যে, তাকে আবার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।'

এসবের কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছেন না তামিম, 'এটা কোন নিয়মে, কীভাবে করা হয়েছে তা আমার জানা নেই। এটা নিয়ে আমরা খুব চিন্তিত ছিলাম। এটা হাস্যকর ছিল। কোনোভাবেই সে নিষিদ্ধ হতে পারে না যে কিনা আগেই (একবার) নিষিদ্ধ হয়েছে। তাকে বিসিবি দুটি ম্যাচ খেলতে দিয়েছে, তাকে আবার আপনি কিভাবে নিষিদ্ধ করতে পারেন? এটা আমাদের একটা বড় পয়েন্ট ছিল।'

উল্লেখ্য, মিরপুরে গত ১২ এপ্রিল আবাহনীর বিপক্ষে আম্পায়ারের একটি সিদ্ধান্তে নাখোশ হয়ে খেলা বন্ধ করে আগ্রাসী মেজাজ দেখান মোহামেডান অধিনায়ক হৃদয়। আচরণবিধি ভঙ্গ হওয়ায় সেকারণে তাকে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয়। পরে গণমাধ্যমের সামনে এসেও আম্পায়ারদের সমালোচনা করেন তিনি। এতে পরদিন তার শাস্তি বাড়িয়ে আরও এক ম্যাচ অর্থাৎ মোট দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ করার কথা জানানো হয়। সেই সঙ্গে করা হয় ৮০ হাজার টাকা জরিমানা।

Comments

The Daily Star  | English

US tariff at 20% 'satisfactory', says Khosru

Will comment after knowing full details of the deal

1h ago