'তিন দিনেই শেষ হতে চলা ম্যাচই টেস্ট ক্রিকেটের সেরা বিজ্ঞাপন'

লর্ডসে দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের যে অবস্থা তাতে তৃতীয় দিনেই ফলাফল আসার সম্ভাবনা প্রবল। কিন্ত তারপরও অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক প্যাট কামিন্স মনে করেন, এই ম্যাচই টেস্ট ক্রিকেটের দারুণ বিজ্ঞাপন।
ম্যাচের প্রথম দুই দিনেই পড়েছে ২৮টি উইকেট। যেখানে প্রতিটি মুহূর্তেই ছিল অবিশ্বাস্য রকমের রোমাঞ্চে ভরা এক লড়াই। দ্বিতীয় দিনে কামিন্স নিজেও ছিলেন উজ্জ্বল নক্ষত্র, ৬ উইকেট নিয়ে পৌঁছেছেন ৩০০ উইকেটের মাইলফলকে।
তবে যখন দুই দলের ব্যাটাররাই রান করতে হিমশিম খাচ্ছেন, তখন অ্যালেক্স কেয়ারি (৪৩) ও মিচেল স্টার্ক (১৬ অপরাজিত)-এর মধ্যে ৬১ রানের অষ্টম উইকেটের জুটি অস্ট্রেলিয়াকে দ্বিতীয় ইনিংসে পৌঁছে দিয়েছে ৮ উইকেটে ১৪৪ রানে। তাতে লিড দাঁড়ায় ২১৮ রানে, হাতে এখনও রয়েছে দুই উইকেট।
ম্যাচের এমন অবস্থায় কিছুটা হলেও এগিয়ে আছে অস্ট্রেলিয়া। অজি অধিনায়ক কামিন্স বলেন, 'খুব ভালোভাবে দিনটা শেষ হয়েছে। ড্রেসিংরুমে সবাই আত্মবিশ্বাসী। দারুণ একটা জুটি গড়েছে কেয়ারি ও স্টার্ক।'
বোলাররা এতটাই প্রভাব বিস্তার করছে, সেটা কি তাহলে চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের মান কমিয়ে দিচ্ছে? এমন প্রশ্নে কামিন্সের জবাব ছিল, 'দুই দিনের পর হিসাব করলে এটা একেবারে ৫০-৫০ ম্যাচ। দুর্দান্ত একটি টেস্ট হচ্ছে। কিছু ব্যাটার নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছে, কিছু পারছে না।'
কামিন্সের মতে, ম্যাচ দ্রুত গিয়ে যাওয়ার পেছনে কারণ দুটি—জটিল পিচ এবং নিখুঁত বোলিং। 'দুই দলই খুব ভালো এবং ধৈর্য ধরে বল করছে। খুব একটা ফুলটস বা হাফ-ভলি দেখা যাচ্ছে না।'
৩২ বছর বয়সী কামিন্স এদিন খেলেছেন তার ৬৮তম টেস্ট ম্যাচ। ৩০০ উইকেট নেওয়ার অনুভূতি জানাতে গিয়ে বলেন, 'ভীষণ ভালো লাগছে। খুব বেশি বোলার এই তালিকায় নেই। এটা দীর্ঘ সময় ধরে ধারাবাহিক থাকার ইঙ্গিত দেয়।'
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সবচেয়ে বেশি রান করা ডেভিড বেডিংহামও (৪৫) কামিন্সের সঙ্গে একমত, 'উইকেটটা মোটামুটি চ্যালেঞ্জিং। আর তাতে ছয়জন বিশ্বমানের পেসার খেললে ব্যাটিং আরও কঠিন হয়ে পড়ে।'
তবে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার সম্ভাবনা নিয়েও আশাবাদী, যদিও লক্ষ্যমাত্রা প্রথম ইনিংসের চেয়ে অনেক বড় হবে। বেডিংহাম বলেন, 'এটা এক দারুণ সুযোগ, এবং আমরা দারুণ রোমাঞ্চিত। আমাদের মধ্যে জয়ের বিশ্বাস রয়েছে।'
'পিচটা একটু ধীর গতির, আর সম্ভবত চতুর্থ ইনিংসে বল একটু সোজা আসবে। আশা করছি আমরা সেই রান তুলে ফেলতে পারব,' যোগ করেন তিনি।
দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে এখন রয়েছে তাদের ২৮ বছরের মধ্যে প্রথম বৈশ্বিক শিরোপা জয়ের সুযোগ। ম্যাচ যেদিকেই যাক না কেন, এই টেস্ট যে দর্শকদের টানতে সক্ষম হয়েছে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
Comments