শেষ ওভারের উত্তেজনায় পাকিস্তানকে হারিয়ে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ

উইকেটে বল পড়ে থেমে আসছে, কোনো কোনো ডেলিভারি বাড়তি লাফাচ্ছে। ব্যাটারদের জন্য কঠিন উইকেটে নেমে কীভাবে খেলতে হয় বুঝতে পারল না পাকিস্তান। ইনিংসের অর্ধেকেই পথ হারালো তারা। তবে খাদের কিনার থেকে দলকে প্রায় অসম্ভব জয়ের আশা দেখালেন ফাহিম আশরাফ, যদিও পেরে উঠলেন না। লো স্কোরিং থ্রিলারে জিতে সিরিজ নিশ্চিত করল বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ জিতেছে ৮ রানে। তিন ম্যাচ সিরিজ নিশ্চিত করেছে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই। টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে এটাই বাংলাদেশের প্রথম জয়।
শেষ দুই ওভারে দরকার ছিলো ২৮ রানের। রিশাদ হোসেনের করা ওই ওভারের প্রথম পাঁচ বলে দুই চার আর এক ছয়ে খসে গেল ১৫ রান। তবে শেষ বলে রিশাদ বোল্ড করে দেন বিপদজনক ফাহিমকে। ৩২ বলে ৫১ করা ব্যাটার নিচু বল পুল করতে গিয়ে লাগাতে পারেননি ব্যাটে। ফাহিমের বিদায়েই উত্তেজনার সমাপ্তি মনে করা হচ্ছিলো। তবে শেষ ওভারের প্রথম বলে চার মেরে সেই রোমাঞ্চ আরও কিছুটা বাড়ান দানিয়েল।
প্রথম ম্যাচ হেরে মিরপুরের উইকেট আন্তর্জাতিক মানের নয় বলেছিলেন পাকিস্তান অধিনায়ক মাইক হেসন, এবারও খেলা হলো প্রায় একই উইকেটে। এবার আগে বোলিং বেছে বাংলাদেশকে নাগালের মধ্যে আটকে রেখেও লাভ হয়নি তাদের। মিরপুরের বোলিং সহায়ক উইকেটে কীভাবে খেলতে হয় বুঝতে পারেনি তারা।
১৩৪ রান তাড়ায় শুরু থেকেই তালগোল পাকায় পাকিস্তান। প্রথম ওভারেই ফখর জামানের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউটে কাটা পড়েন সাইম আইয়ুব।
এরপর টানা দুই শিকার করে ধরেন শরিফুল ইসলাম ও তানজিম হাসান সাকিব। মোহাম্মদ হারিসকে দারুণ ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউতে ছাঁটার পর ফখর জামানকে কিপারের হাতে ক্যাচ বানান। লেগ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করে ধরা দেন আগের ম্যাচে রান পাওয়া পাকিস্তানের ওপেনার।
পঞ্চম ওভারে পর পর দুই বলে হাসান নাওয়াজ ও মোহাম্মদ নাওয়াজকে তুলে নেন তানজিম হাসান সাকিব। দুজনেই ফেরেন প্রায় একইভাবে। বাড়তি লাফিয়ে উঠা বলে দুজনেই ধরা দেন লিটন দাসের গ্লাভসে। ১৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারে চলে যায় পাকিস্তান।
এরপর খুশদিল শাহকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টায় ছিলেন পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলি আঘা। ক্রিজে টিকে থাকলেও রান বের করতে পারছিলেন না তারা। হাঁসফাঁস করতে থাকা সালমানের যন্ত্রণার সমাপ্তি টানেন শেখ মেহেদী হাসান। সহজ ক্যাচে ২৩ বলে ৯ রান করে বিদায় নেন তিনি।
খুশিদল শাহও থিতু হতে পারেননি। তিনি শিকার শেখ মেহেদীর।
৪৭ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর আব্বাস আফ্রিদিকে নিয়ে চেষ্টা চালান ফাহিম আশরাফ। এই দুজন ৪১ করার পর শরিফুল এসে আব্বাসকে বোল্ড করে ফিরিয়ে দেন।
পরে দানিয়েলকে নিয়ে অসম্ভবের পিছু নিয়ে প্রায় জয়ের কাছে চলে গিয়েছিলেন ফাহিম। বোল্ড হয়ে হতাশায় ছাড়েন মাঠ, স্টেডিয়াম তখন হয়ে উঠে উদ্বেল।
টস হেরে ব্যাট করতে যাওয়া বাংলাদেশও ২৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিলো। পরে জাকের আলি অনিক আর শেখ মেহেদী মিলে দলকে উদ্ধারে নামেন। মেহেদী ২৫ বলে ৩৩ করে ফিরে গেলেও শেষ বলে আউট হওয়ার আগে ৪৮ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলে দলকে জেতার পুঁজি পাইয়ে দেন জাকের।
এসব উইকেটে এরকম পুঁজি তাড়া করা যে কতটা চ্যালেঞ্জের সেটা বোঝা গেল খেলায়।
Comments