শেষ ৫১ রানের মধ্যে ম্যাক্সওয়েলেরই ৪৫, সিরিজ অস্ট্রেলিয়ার

১২২ রানে পড়ে গেল অস্ট্রেলিয়ার ষষ্ঠ উইকেট। তখন জয়ের জন্য ৩৭ বলে ৫১ রানের সমীকরণ ছিল তাদের সামনে। ততক্ষণে ক্রিজে মানিয়ে নেওয়া গ্লেন ম্যাক্সওয়েল দায়িত্ব তুলে নিলেন নিজের কাঁধে। চাহিদার মধ্যে ৪৫ রান একাই আনলেন বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে। চাপ সামলে তার নৈপুণ্যে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ নিজেদের করে নিল অজিরা।
শনিবার কেয়ার্নসে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টির ফয়সালা হয়েছে শেষ ওভারে গড়ানো রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে। প্রোটিয়াদের দেওয়া ১৭৩ রানের লক্ষ্য তাড়ায় মাত্র ১ বল বাকি থাকতে ২ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
৩০ বলে হাফসেঞ্চুরি ছোঁয়া ম্যাক্সওয়েল অপরাজিত থাকেন ৬২ রানে। লুঙ্গি এনগিডির করা শেষ ওভারের পঞ্চম বলে চার মেরে দলকে জিতিয়ে ছাড়েন হুঙ্কার। ওই ওভারের প্রথম বলে ডাবল নেওয়ার পর দ্বিতীয় বলে তিনি আনেন চার। ফলে ৬ বলে ১০ রানের সমীকরণ নেমে আসে ৪ বলে ৪ রানে। ম্যাচ হেলে পড়ে অজিদের দিকে। পরের দুটি বল ডট হলে আবার তৈরি হয় নাটকীয়তা। তবে ম্যাক্সওয়েল শেষ পর্যন্ত পা হড়কাননি। ৩৬ বলের ইনিংসে তিনি হাঁকান আটটি চার ও দুটি ছক্কা।
ছয়ে নামা ম্যাক্সওয়েলের আগে স্বাগতিকদের জয়ের কক্ষপথে রাখেন অধিনায়ক মিচেল মার্শ। ওপেনিংয়ে নেমে তিনি ঝড় তুলে করেন ৩৭ বলে ৫৪ রান। তার ইনিংস সাজানো তিনটি চার ও পাঁচটি ছক্কা দিয়ে। আরেক ওপেনার ট্রাভিস হেডের সঙ্গে মার্শ গড়েন ৪৮ বলে ৬৬ রানের উদ্বোধনী জুটি। এরপর কাগিসো রাবাদা ও কেওনা মাফাকা মিলে চেপে ধরেন অজিদের। ফলে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে তারা।
১৮ বলে ১৯ রান করে হেড থামার পর জশ ইংলিসকে গোল্ডেন ডাকের তেতো স্বাদ দেন করবিন বশ। একাদশ ওভারে জোড়া শিকার ধরেন মাফাকা। চার বলের মধ্যে মার্শ ও ক্যামেরন গ্রিনকে বিদায় করেন তিনি। রাবাদার করা চতুর্দশ ওভারে আবার জোড়া ধাক্কা খায় অস্ট্রেলিয়া। ৯ বলে ১৭ রান করা টিম ডেভিডের পর দ্রুত সাজঘরে ফেরেন অ্যারন হার্ডি।
ম্যাচের বাকিটা 'ম্যাক্সওয়েল শো'। বেন ডোয়ার্শিসকে একপাশে রেখে সপ্তম উইকেটে তিনি গড়েন ২৯ বলে ৪১ রানের জুটি। সেখানে ডোয়ার্শিসের অবদান ৬ বলে স্রেফ ১ রান। তাকে ও ন্যাথান এলিসকে ১৯তম ওভারে পরপর দুই বলে আউট করে দেন বশ। ওই ওভারের প্রথম বলে লেগ বাই থেকে ২ রান হওয়ার পর কোনো রান দেননি তিনি। তবে ম্যাচসেরা হওয়া ম্যাক্সওয়েলকে আর থামানো সম্ভব হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে।
ক্যাজেলিস স্টেডিয়ামে প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে সফরকারীরা। ডেওয়াল্ড ব্রেভিসের তাণ্ডবে একাদশ ওভারে স্কোরবোর্ডে শতরান তুলে ফেলে দলটি। কিন্তু তার বিদায়ের পর প্রোটিয়ারা দ্রুত রান আনতে ব্যর্থ হয়।
আগের ম্যাচে রেকর্ডে রাঙা সেঞ্চুরি করা ব্রেভিস ২২ বলে ফিফটি ছুঁয়ে আউট হন ৫৩ রানে। ২৬ বল খেলে একটি চার ও ছয়টি ছক্কা মারেন তিনি। শেষদিকে রাসি ফন ডার ডাসেন অপরাজিত থাকেন ২৬ বলে তিনটি চারের সাহায্যে ৩৮ রানে। ঘুরে দাঁড়িয়ে লক্ষ্য নাগালের মধ্যে রাখেন অজি বোলাররা। এলিস ৩১ রানে নেন ৩ উইকেট। অ্যাডাম জ্যাম্পা ২৪ রানে ও জশ হ্যাজলউড ৩০ রানে দুটি করে উইকেট শিকার করেন।
ম্যাচ শুরুর আগে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক ও কোচ বব সিম্পসনের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এদিনই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। অজি ক্রিকেটাররা কালো আর্মব্যান্ড পরে মাঠে নামেন।
Comments