টি–টোয়েন্টি থেকে ৫০ ওভারে: বুলবুলের ধোঁয়াশা অব্যাহত

Aminul Islam Bulbul
ছবি: স্টার

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি হিসেবে 'কুইক টি–টোয়েন্টি ইনিংস খেলতে এসেছি'—এমন দাবি করা থেকে শুরু করে গতকাল আসন্ন বোর্ড নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা—আমিনুল ইসলাম বুলবুল এক দিকেই ধারাবাহিক থেকেছেন: সেটি হলো সেই চিরচেনা ধোঁয়াশা, যা এই দেশের যে কোনো নেতৃত্বের পদেই দেখা মেলে।

ফারুক আহমেদকে সরিয়ে গত ৩০ মে এনএসসি'র (জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ) অনুমোদনের মাধ্যমে ১৭তম বিসিবি সভাপতি হন বুলবুল। প্রথমবার গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেছিলেন, 'আমি কুইক একটা টি–টোয়েন্টি ইনিংস খেলতে এসেছি। আমি ভালো একটা ইনিংস খেলব, যেটা আপনারা মনে রাখবেন।' তবে সাবেক এই জাতীয় দলের অধিনায়ক এখন জোর দিয়ে বলছেন, তার সেই 'কুইক টি–টোয়েন্টি ইনিংস' এখনও শেষ হয়নি।

মঙ্গলবার সিলেটে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'কুইক টি–টোয়েন্টি ইনিংস এখনো শেষ হয়নি। আগে সেটি শেষ হোক। যদি চালিয়ে যেতে হয়, তবে টি–টোয়েন্টি থেকে ৫০ ওভারে (ওয়ানডে) যাব।'

নিজের এই 'কুইক টি–টোয়েন্টি ইনিংস' ওয়ানডে ধাঁচে লম্বা করে টেনে নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে বুলবুল এখনো অনিশ্চিত। তিনি বলেন, 'এনএসসি'র সঙ্গে এখনো কোনো আলোচনা করিনি। শুধু বলেছি, সুযোগ পেলে আমি নির্বাচনে অংশ নেব। এখনো জানি না কোথা থেকে (কোন আসন থেকে) আমি লড়ব কিংবা কীভাবে করব।'

'আমার একমাত্র কারণ হলো আমি যে কাজগুলো শুরু করেছি, সেগুলো ভালোভাবে এগোচ্ছে। মনে হচ্ছে মাঝপথে ফেলে না রেখে এগুলো শেষ করা উচিত। এটাই চালিয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ।'

তার ঘোষণার পর স্পষ্ট হচ্ছে তিনি আর এনএসসি–মনোনীত পরিচালক হিসেবে থাকছেন না। বরং অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠেয় বিসিবি নির্বাচনে সরাসরি অংশ নেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সফল হলে তিনি চার বছরের জন্য বিসিবি পরিচালক হবেন এবং চাইলে সভাপতি পদেও লড়তে পারবেন।

সভাপতি হিসেবে তিনমাসে কোন খাতেই আমূল পরিবর্তন আনা বাস্তবসম্মত নয়। বুলবুলের ক্ষেত্রেও তাই, যদিও এ সময়ে তার সাফল্যের ঝুলি খুব একটা ভরেনি।

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সফর—রাজশাহী, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ফতুল্লা, সিলেট ও খুলনায় বিভাগীয় ক্রিকেট পর্যালোচনা—এবং মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ধীর–মন্থর উইকেটের সমস্যায় সরাসরি হস্তক্ষেপ—এসব ছাড়া বুলবুলের কাজের তালিকায় খুব বেশি অর্জন নেই, যেগুলো তিনি 'অপূর্ণ' রেখে যেতে চান না।

গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই বিসিবি নির্বাচনকে সামনে রেখে সংবিধান সংস্কারের আলোচনা হচ্ছিল। এর পাশাপাশি বাংলাদেশের ক্রিকেটের পুরনো সমস্যা—ক্রিকেটের ক্ষমতা কাঠামোর বিকেন্দ্রীকরণ নিয়েও নতুন করে ডাক ওঠে। তবে ফারুক আহমেদ গঠিত ও নাজমুল আবেদীন ফাহিমের নেতৃত্বাধীন গঠনতন্ত্র সংস্কার কমিটি মাসের পর মাস ছিলো নিষ্ক্রিয়। দায়িত্ব নেয়ার পর বুলবুল নিজেও এ দুটি বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি।

নির্বাচনের বাকি মাত্র এক মাস, আর দৃশ্যপট একই রকম: দেশের ক্রিকেট উন্নয়নের দায়িত্বে থাকা সংস্থায় যারা থাকতে চান, তারাও বছর ধরে চলে আসা ধোঁয়াশায় মোড়া। প্রশ্ন উঠছে: বিসিবি সভাপতি কি শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভার পার হয়ে টেস্টের মতো দীর্ঘ ইনিংস খেলতে নামবেন?

তবে আপাতত স্কোরবোর্ডই বলে দিচ্ছে আসল কথা: তার ইনিংসে অনেক ডট বল, কিন্তু বাউন্ডারির দেখা নেই।

Comments

The Daily Star  | English

4,000 ASIs to join police force before election: IGP

No lottery system for civil service postings, says senior secretary to public administration ministry

15m ago