৪০ বছরেরও বেশি সময় পর ইরানের ঘরোয়া ফুটবলে নারী দর্শক
ক্রীড়া স্টেডিয়ামে নারী দর্শকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ৪০ বছরেরও বেশি সময় পর ইরানের তেহরানে প্রথমবারের মতো একটি ঘরোয়া ফুটবল ম্যাচে শত শত নারী উপস্থিত হয়েছেন।
ইরানের আধা-সরকারি রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ফার্সের বরাতে আমেরিকান গণমাধ্যম সিএনএন তাদের একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পাঁচ শতাধিক নারীকে তেহরানের আজাদি স্টেডিয়ামে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। তারা স্বাগতিক এস্তেঘলাল এফসি ও সফরকারী সনাত মেস কেরমান এফসির মধ্যকার দেশটির শীর্ষ লিগের ম্যাচ উপভোগ করেন।
ইরানিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের ওয়েবসাইট অনুসারে, স্টেডিয়ামে নারীদের জন্য আলাদা বসার ব্যবস্থা করা হয়। গাড়ি পার্ক করার জায়গার মাধ্যমে একটি বিশেষ প্রবেশদ্বার দিয়ে তাদের মাঠে ঢোকানো হয়।
ক্রীড়া স্টেডিয়ামে নারীদের উপস্থিতির ওপর নিষেধাজ্ঞার কোনো লিখিত আইন নেই ইরানে। তবে ১৯৭৯ সালে দেশটিতে ইসলামি বিপ্লব হওয়ার পরপরই এটি কার্যকর করা হয়েছিল। লম্বা সময়ের ব্যবধানে প্রথমবারের মতো ইরানের নারী ফুটবল ভক্তরা ঘরোয়া ম্যাচ দেখার অনুমতি পেলেও মাঝে জাতীয় দলের অল্প কিছু ম্যাচে তারা স্টেডিয়ামে ঢোকার সুযোগ পান।
গত ২০১৯ সালে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার চাপে ইরান ও কম্বোডিয়ার বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে হাজার হাজার নারীকে স্টেডিয়ামে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। ওই বছর ফিফাও প্রবল চাপের মুখে পড়েছিল এবং সেকারণে ইরানকে স্টেডিয়ামে নারীদের উপস্থিতির ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয়েছিল।
বিশেষ করে, সাহার খোদায়ারির মৃত্যুর পর বিশ্বজুড়ে প্রবল সমালোচনা তৈরি হয়েছিল। ওই নারী ভক্ত তেহরানের একটি ফুটবল স্টেডিয়ামে ঢুকতে বাধা পেয়ে নিজের শরীরে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন।
গত ২০১৯ সালের মার্চে 'একজন পুরুষের ছদ্মবেশে' তার প্রিয় ফুটবল ক্লাব এস্তেঘলালের খেলা দেখতে স্টেডিয়ামে প্রবেশের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন খোদায়ারি। তার বিরুদ্ধে 'হিজাব ছাড়া জনসমক্ষে উপস্থিত হওয়ার' মাধ্যমে 'প্রকাশ্যে একটি পাপ কাজ করার' অভিযোগ আনা হয়েছিল।
এস্তেঘলালের নীল রঙের জার্সি অনুসারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে 'ব্লু গার্ল' হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন খোদায়ারি। এস্তেঘলাল ও কেরমানের মধ্যকার ম্যাচে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে 'ব্লু গার্ল' স্লোগান দেন স্টেডিয়ামে উপস্থিত নারীরা।
Comments