সাবিনার হ্যাটট্রিকে পাকিস্তানকে ৬ গোলে বিধ্বস্ত করল বাংলাদেশ

শনিবার নেপালের কাঠমুন্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচে পাকিস্তানকে ৬-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ
Bangladesh women Football Team
গোলের পর বাংলাদেশের উল্লাস। ছবি: বাফুফে

খেলার শুরু থেকেই মুহুর্মুহু আক্রমণ। প্রতিপক্ষের সীমানায় ত্রাস ছড়ালেন সাবিনা খাতুন, মনিকা চাকমারা। শুরুতেই মিলল গোল, সময়ে সময়ে বাড়তে থাকল ব্যবধান। বাংলাদেশের মেয়েদের দুর্দান্ত মুন্সিয়ানায় বিধ্বস্ত হলো পাকিস্তান।

শনিবার নেপালের কাঠমুন্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচে পাকিস্তানকে ৬-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। দলের হয়ে তিন গোল করেন অধিনায়ক সাবিনা।  গোল পান মনিকা, সিরাজ জাহান স্বপ্না ও ঋতুপর্ণা চাকমা। এর আগে গত বুধবার 'এ' গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মালদ্বীপকে ৩-০ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ।

খেলার শুরুতেই বাংলাদেশকে এগিয়ে দেন মনিকা চাকমা। তৃতীয় মিনিটে থ্রোয়িং থেকে বল নিয়ে দুজনকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকে সাবিনা শট নিয়েছিলেন। তার শট পাকিস্তানি ডিফেন্ডার ফিরিয়ে দিলে ফাঁকায় দাঁড়ানো মনিকা বল পেয়ে যান। ডান কোনা ধরে মনিকার নেওয়া নিখুঁত শট জালে জড়িয়ে যায়।

১১ মিনিটেই এসেছিল ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ। সুর্বণ ওই সুযোগ নষ্ট করে বাংলাদেশ। বা দিক থেকে তৈরি হওয়া আক্রমণ থেকে মণিকার ক্রস বক্সে আসলে জায়গা করে নিয়েছিলেন সাবিনা । বাংলাদেশ অধিনায়কের নেওয়া শট বারের উপর দিয়ে চলে যায়। ১৬ মিনিটে কর্নার থেকে পাওয়া বল আঁখি খাতুন অল্পের জন্য মাথা লাগাতে পারেননি।

২২  মিনিটে সমতায় ফেরার সুযোগ পেয়েছিল পাকিস্তান। কর্নার থেকে পাওয়া বল লাফ দিয়ে উঠে হেডের উচ্চতায় পেয়েছিলেন সুহা হিরানি। মাথায় পেছনের দিকে লাগায় বল লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে রক্ষা পায় বাংলাদেশ।

একের পর এক আক্রমণের ফলে ২৭ মিনিটে আসে দ্বিতীয় গোল। সাবিনার কাছ থেকে বলের যোগান পেয়ে বক্সে ঢুকে দারুণ নৈপুণ্যে বল জালে জড়িয়ে দেন সিরাত জাহান স্বপ্না।

তিন মিনিট পরই নিজের প্রথম ও দলের তৃতীয় গোল পান সাবিনা। ডান দিক থেকে আসা ক্রস দেখে বুদ্ধিদীপ্তভাবে বক্সে ঢুকে যান তিনি। প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডার ওই বল ক্লিয়ার করতে না পেরে উল্টো তুলে দেন সাবিনার পায়ে। টোকা মেরে জালে জড়িয়ে দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

এই গোলের রেশ না কাটতেই আরেকবার পাকিস্তানকে হতাশায় পুড়ায় বাংলাদেশের মেয়েরা, ৩৪ মিনিটে চতুর্থ গোল। বা দিকে আঁখির কাছ থেকে আসা ক্রস ধরে বক্সের দিকে ছুটে যান সানজিদা খাতুন। তার ক্রস পেয়ে জালে জড়িয়ে আনন্দে ভাসেন সাবিনা।

৩৮ মিনিটে পঞ্চম গোল আসতে পারত। স্বপ্নার মারা শট পাকিস্তানের গোলকিপারের হাত ফসকে বারে লেগে ফিরে আসে। 

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে  প্রতি আক্রমণ থেকে আঁখিকে ফাঁকি দিয়ে বল দিয়ে বাংলাদেশের বক্সে ঢুকে দিয়েছিলেন নাদিয়া খান। গোলরক্ষক রুপনা চাকমার দক্ষতায় প্রতিহত হন তিনি। পরে আঁখি বল নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দলকে বিপদমুক্ত করেন।

বিরতির পরও বজায় থাকে বাংলাদেশের প্রাধান্য। ৫৮ মিনিটে ডানদিকে থ্রোয়িং থেকে বল পেয়ে বক্সে ক্রস করেন সানজিদা। দারুণ সেই বলের ফ্লাইট বুঝে লাফিয়ে ক্ষিপ্র হেডে জালে জড়ান সাবিনা। দলের পঞ্চম গোলের সঙ্গে হ্যাটট্রিক পুরো করেন তিনি।

৭৪ মিনিটে আসতে পারত ৬ষ্ঠ গোল। সাবিনার ক্রস বক্সে পাকিস্তান গোলরক্ষক গ্রিপ করতে ব্যর্থ হলে বল পেয়ে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের ফরোয়ার্ডরা। কিন্তু জটলার মধ্যে তা আর কাজে আসেনি। অপেক্ষা অবশ্য লম্বা হয়নি ৬ষ্ঠ গোলের। 

৭৬ মিনিটে দেখার মতো গোল করেন ঋতুপর্ণা। বক্সের অনেক বাইরে থেকে আচমকা বা পায়ের শটে বল হাওয়ায় ভাসিয়ে জালে জড়িয়ে দেন তিনি।  দুই মিনিট পর আরেক গোলের সম্ভাবনা অল্পের জন্য প্রতিহত করেন পাকিস্তানের কিপার। শেষ দিকেও একাধিকবার পাকিস্তানের বক্সে আতঙ্ক ছড়ায় বাংলাদেশ।

বিশাল জয়ে বুক উঁচিয়ে মাঠ ছাড়েন সাবিনা, মনিকারা। টুর্নামেন্টের পথচলায় বড় এই জয় বাংলাদেশের মেয়েদের দিবে বিপুল আত্মবিশ্বাস।

Comments

The Daily Star  | English

Teesta floods bury arable land in sand, leaving farmers devastated

40 unions across 13 upazilas in Lalmonirhat, Kurigram, Rangpur, Gaibandha, and Nilphamari are part of the Teesta shoal region

1h ago