বায়ার্নের কাছে আবারও হারল বার্সেলোনা
প্রথমার্ধে প্রায় একক আধিপত্য রেখে খেলল বার্সেলোনা। কিন্তু ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় একের পর এক সুযোগ পেয়েও গোলের দেখা মিলল না তাদের। দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ায় বায়ার্ন মিউনিখ। পাঁচ মিনিটের ঝড়ে দুটি গোলও আদায় করে নেয় দলটি। শেষ পর্যন্ত সে ব্যবধান ধরে রাখে তারা। ফলে বার্সেলোনার বিপক্ষে আরও একটি জয় আদায় করে নিল বাভারিয়ানরা।
মঙ্গলবার রাতে আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ 'সি'র ম্যাচে বার্সেলোনাকে ২-০ গোলের ব্যবধানে হারায় বায়ার্ন মিউনিখ। দলের হয়ে গোল দুটি করেছেন লুকাস হার্নান্দেজ ও লিরয় সানে।
বায়ার্নের বিপক্ষে এ নিয়ে টানা পাঁচটি ম্যাচ হারল বার্সেলোনা। তাতে গোল হজম করল ১৯টি। পক্ষান্তরে নিজেরা গোল দিতে পেরেছে মাত্র ৪টি। তবে এদিন ম্যাচের প্রথমার্ধেই কমপক্ষে ৪টি গোল পেতে পারতো বার্সা। কিন্তু সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে সহজ কিছু সুযোগ পেয়ে নষ্ট করেন রবার্ট লেভানদোভস্কি। ফাঁকায় পেয়েও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি পেদ্রিও।
তবে মাঝ মাঠের দখলে কিছুটা এগিয়ে ছিল বার্সেলোনা। ৫৫ শতাংশ সময় বল দখলে ছিল তাদেরই। শটও নেয় ১৭টি। যার ৩টি ছিল লক্ষ্যে। কিন্তু গোলের দেখা পায়নি। অন্যদিকে ১৩টি শটের ৪টি লক্ষ্যে রেখে দুটি গোল আদায় করে নেয় স্বাগতিকরা।
এদিন ম্যাচের নবম মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো বার্সেলোনা। দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিলেন পেদ্রি। প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে রাফিনহাকে বল দেন লেভানদোভস্কি। বল পেয়ে সামনে থাকা পেদ্রিকে বাড়ান গাভি। এক খেলোয়াড়কে কাটিয়ে জোরালো শট নিয়েছিলেন পেদ্রি। তবে দারুণ দক্ষতায় পা দিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়ার।
তবে এর পাঁচ মিনিট পর এই গোলরক্ষকই বিপদ প্রায় ডেকে এনেছিলেন। সতীর্থকে পাস দিতে গিয়ে লেভানদোভস্কির পায়ে বল তুলে দিয়েছিলেন তিনি। তবে পেছন থেকে দৌড়ে এসে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকিয়ে সে যাত্রা দলকে রক্ষা করেন লুকাস হার্নান্দেজ।
১৮তম মিনিটে সুবর্ণ এক সুযোগ হাতছাড়া করেন লেভানদোভস্কি। পাল্টা আক্রমণ থেকে দেম্বেলের কাছ থেকে বল পেয়ে দারুণ এক ক্রস করেছিলেন গাভি। লেভার শট ঠেকিয়ে আরও একবার বায়ার্ন রক্ষা করেন নয়ার। দুই মিনিট পর ধাক্কা খায় জার্মান ক্লাবটি। ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়েন বেঞ্জামিন পাভার্ড।
২১তম মিনিটে তো আবার অবিশ্বাস্য নয়ার। এর ক্রস থেকে লেভানদোভস্কির নেওয়া হেড দারুণ দক্ষতায় ঠেকান এ জার্মান গোলরক্ষক। পাঁচ মিনিট পর রাফিনহার নেওয়া দূরপাল্লার শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
২৭তম মিনিটে প্রথম লক্ষ্যে শট রাখতে পারে বায়ার্ন। তবে জামাল মুসিয়ালার দুর্বল শট ঠেকাতে কোনো অসুবিধা হয়নি বার্সা গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে টের-স্টেগেন। ৩০তম মিনিটে লিরয় সানের কাছ থেকে ডি-বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শট নিয়েছিলেন মার্সেল সাবিতজার। তবে অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি।
৪০তম মিনিটে মুসিয়ালার পাস থেকে মানে ও মুলার ধাক্কা না খেলে বিপদ হতে পারতো বার্সার। দুই মিনিট পর দারুণ সুযোগ ছিল অতিথিদেরও। পেদ্রির পাস থেকে বল নিয়ন্ত্রণ করে ফাঁকায় পেয়ে গিয়েছিলেন লেভানদোভস্কি। তবে দারুণ এক ট্যাকলে বিপদমুক্ত করেন বদলি খেলোয়াড় নুসাইর মাজরাউই।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোল পেতে পারতো বার্সা। রাফিনহার দূরপাল্লার শট অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি। ৫০তম মিনিটে বদলি খেলোয়াড় লিওন গোরেতজার দূরপাল্লার শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান বার্সা গোলরক্ষক টের স্টেগেন। সেই কর্নার থেকেই দারুণ এক হেডে এগিয়ে বায়ার্নকে এগিয়ে দেন হার্নান্দেজ।
৫৫তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে বায়ার্ন। মুসিয়ালার কাছ থেকে বল পেয়ে দারুণ দক্ষতায় দুই বার্সা ডিফেন্ডারকে পেছনে ফেলে বাল জালে পাঠান সানে। পাঁচ মিনিট পর মুসিয়ালার ডি-বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট লক্ষ্য থাকলে ব্যবধান আরও বাড়তে পারতো।
৬১তম মিনিটে দিনের সেরা সুযোগটা নষ্ট করেন পেদ্রি। দুই খেলোয়াড়কে কাটিয়ে লেভানদোভস্কিকে পাস দিয়েছিলেন তিনি। ফিরতি বল গোলরক্ষক এক পেয়ে যান। সময়ও পেয়েছিলেন। কিন্তু তার নেওয়ার শট বারপোস্টে লেগে বেরিয়ে যায়।
এরপরও ব্যবধান কমানোর বেশ কিছু সুযোগ ছিল বার্সেলোনার। বদলি খেলোয়াড় ফেরান তোরেস, আনসু ফাতিরাও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। ফলে শেষ পর্যন্ত হারারে ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই মাঠ ছাড়ে কাতালানরা।
Comments