এশিয়ার সর্বোচ্চ পর্যায়েও সাবিনাদের নিয়ে বড় আশা আলফাজের
বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে এতদিন সবচেয়ে বড় সাফল্য ছিল সেই ২০০৩ সালে। দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই সাফে সেবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন আলফাজ আহমেদরা। উনিশ বছর পর সেই সাফেই শিরোপা উঁচিয়ে ধরল সাবিনা খাতুনের দল। সাম্প্রতিক সময়ে শুধু ফুটবল কেন, যেকোনো খেলার বিচারেই বাংলাদেশের কোন দলের সেরা সাফল্য এসেছে কাঠমান্ডুতে। বাংলাদেশের সাবেক তারকা আলফাজের মতে, সাবিনাদের এই দল এগিয়ে যাবে অনেক দূর। খেলবে এশিয়ান সর্বোচ্চ ধাপে।
সোমবার কাঠমান্ডুতে নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। গোটা টুর্নামেন্টে পাঁচ ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে ২৩ বার বল পাঠিয়ে মাত্র এক গোল হজম করে গোলাম রাব্বানি ছোটনের দল।
নজরকাড়া পারফরম্যান্স দিয়ে এরমধ্যেই নারী ফুটবলাররা দেশের মানুষের মনোযোগ কেড়ে নিয়েছেন। তাদের প্রশংসায় ভাসছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। জয়ের আনন্দে উদ্বেল আলফাজ ম্যাচের পর দ্য ডেইলি স্টারকে জানান নিজের প্রতিক্রিয়া, 'আপনি যদি বলেন কেমন লাগছে। আমি অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। আমাদের নারীরা যা অর্জন করেছে পুরো দেশ খুশি ও গর্বিত।'
দলীয় প্রচেষ্টায় এসেছে সেরা সাফল্য। তবে বাংলাদেশের এই দলটির ব্যক্তিগত নৈপুণ্য আলাদাভাবে নজর কেড়েছে আলফাজের, 'অবশ্যই এটা একটা দলীয় চেষ্টা। কিন্তু তাদের ফিনিশিং কোয়ালিটিটা আমার নজর কেড়েছে। স্নায়ুচাপের মধ্যে তারা অসাধারণ গোল করেছে। ভারতকে তিন গোলে হারানো হালকাভাবে নেয়ার সুযোগ নাই। এমনকি ফাইনালে যখন নেপাল যখন এক গোল ফেরত দিল। তখন একটা উদ্বেগের সময় ছিল। কিন্তু তারা আরেকটা সুন্দর গোল করে সকল অনিশ্চয়তা দূর করে দিল।'
দক্ষিণ এশিয়ার সেরা হওয়ার পরের ধাপ এশিয়ান পর্যায়। আলফাজের বিশ্বাস এশিয়ার সর্বোচ্চ পর্যায়ে গিয়েও ভালো করার সামর্থ্য আছে কৃষ্ণা রানি, মনিকা চাকমা, সানজিদা আক্তারদের, 'আমি আশা করি এটা কেবলই একটা শুরু। এই দলের কারো কারো আঞ্চলিক সাফল্য ছাপিয়ে আরও বড় হওয়ার কোয়ালিটি আছে। এবং এই দল সামনে এগিয়ে যাবে। আমার বিশ্বাস এশিয়ান সর্বোচ্চ পর্যায়ে গিয়েও তারা ভাল করবে।'
ফাইনালে স্বাগতিক দলকে হারানোর ব্যাপারটাও বিশেষ মনে হচ্ছে আলফাজের। কারণ কেবলই এগারোজন প্রতিপক্ষ নয়। বাংলাদেশকে খেলতে হয়েছে বিপুল প্রতিকূলতা সামলে, 'আপনি যখন দেশী বাইরে খেলেন, কেবল স্বাগতিক প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলেন না, ওদের বিপুল দর্শকদের বিপক্ষেও খেলতে হয়। স্বাগতিকদের পক্ষে থাকে সব। চ্যালেঞ্জটা তাই অনেক বেশি থাকে।'
তবে এমন অর্জনের পরও নারী ফুটবলারদের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে উঠছে হতাশার ছবি। বাংলাদেশের সাবেক তারকা এক্ষেত্রে চান একটি শক্ত ঘরোয়া কাঠামো, 'আন্তর্জাতিক ম্যাচ জেতা নিঃসন্দেহে দারুণ ব্যাপার। এটা আপনাকে খ্যাতি দেবে, মানুষের ভালোবাসা দেবে। যখন জীবন নির্বাহের কথা ভাববেন তখন এটা পর্যাপ্ত না। নারী ফুটবল লিগ যদি শক্ত কাঠামোর মধ্যে থাকে । তাহলে তাদের জীবন মান আরও বৃদ্ধি পাবে।'
Comments