ঠাট্টা-উপহাস সহ্য করতে হয়েছে কোচ ছোটনকেও
নারী ফুটবলারদের বেড়ে উঠার পথে সংগ্রাম এখন অনেকেরই জানা। সমাজের তীব্র প্রতিকূল পরিস্থিতি পেরিয়ে খেলার মাঠ পর্যন্ত আসাটাই ছিল তাদের জন্য বিশাল ব্যাপার। মাঠের খেলায় সাফল্য আনার ধাপে ধাপে ছিল আরও কঠিন পথ। কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটন যেমন জানালেন, মেয়েদের কোচিং করানোয় মানুষের ঠাট্টা, উপহাস সহ্য করতে হয়েছে তাকেও।
বাংলাদেশের মেয়েদের ফুটবলের বয়সভিত্তিক ও জাতীয় দলের ভার অনেকদিন ধরেই কোচ ছোটনের কাঁধে। তার কোচিংয়ে বয়সভিত্তিক পর্যায়ে বাংলাদেশ পেয়েছে অনেক সাফল্য। সবচেয়ে বড় সাফল্য ধরা দিল সোমবার। জাতীয় দলকেও তিনি পাইয়ে দিলেন দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট।
নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর সাবিনা খাতুন, কৃষ্ণা রানিরা ছুটিয়ে গিয়ে কোচ ছোটনকে তুলে ধরেন সবার উঁচুতে। বুঝিয়ে দেন কোচের মর্যাদা তাদের কাছে কতটা।
ম্যাচ জিতে ট্রফি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে ছোটন জানান, মেয়েদের তো বটেই পরিচিতজনদের কাছ থেকে টিপ্পনী সহ্য করতে হয়েছে তাকেও, 'এটা আমার একার সাফল্য নয়, সবার সম্মিলিত সহযোগিতায় আমরা এখানে এসেছি। আজকে এই জিনিসটা বলতে হয়, যখন আমি মহিলা দলের কোচের দায়িত্ব নিয়েছিলাম, তখন আমার বন্ধু-বান্ধবরাও আমাকে বলত যে 'মহিলা কোচ'। যখন রাস্তায় হেঁটে যেতাম, আমাকে বলা হত 'মহিলা কোচ'। এভাবে উপহাস করত। আমি কাছে ওরকম লাগত না। আমি কাজকেই পছন্দ করতাম।'
বড় এই সাফল্য পাওয়ার পেছনে অনেক মানুষের কৃতিত্ব দেখেন বাংলাদেশের এই কোচ। ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি থেকে শুরু করে গণমাধ্যম সবাইকেই কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি, 'প্রথমেই আমি মেয়েদের আবারও স্যালুট জানাব। তারা আসলে অবিশ্বাস্য ফুটবল খেলেছে। দেশের প্রতি, বাবা-মায়ের প্রতি তাদের যে কৃতজ্ঞতাবোধ, সেটা তারা দেখিয়েছে। আজকে মেয়েরা এ পর্যন্ত এসেছে, তারা তৈরি হয়েছে। ফেডারেশন সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, উনি ২০১৬ সালে স্বপ্ন দেখেছিলেন (মেয়েদের নিয়ে), দীর্ঘমেয়াদী ট্রেনিং যদি আমরা করি, একসাথে মেয়েদের যদি রাখতে পারি, তাহলে মনে হয় সফলতা আসবে। সেটা আজ এসেছে। বাংলাদেশের যে ১৮ কোটি মানুষ, আজকের যে অবস্থা, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে, গণমাধ্যমকর্মীরা যেভাবে প্রশংসা করছেন, অবশ্যই ভালো লাগছে।'
Comments