তিউনিসিয়ার জালে ব্রাজিলের ৫ গোল
আগামী বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতিটা দুর্দান্ত হলো ব্রাজিলের। দাপুটে পারফরম্যান্সে ঘানার পর আফ্রিকার আরেক দেশ তিউনিসিয়াকেও উড়িয়ে দিল তারা। এই দুই দলই কাতারে অনুষ্ঠেয় আসরে অংশ নেবে।
মঙ্গলবার রাতে প্যারিসের পার্ক দে প্রিন্সেসে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে ৫-১ গোলে জিতেছে তিতের শিষ্যরা। রেকর্ড পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের পক্ষে জোড়া গোল করেন রাফিনহা। একবার করে নিশানা ভেদ করেন রিচার্লিসন, নেইমার ও পেদ্রো। তিউনিসিয়ার হয়ে ব্যবধান কমান মনতাসার তালবি। বিরতির আগে দিলান ব্রন লাল কার্ড দেখায় বাকি সময় একজন কম নিয়ে খেলতে হয় তাদের।
একপেশে লড়াইয়ে বল দখলে প্রত্যাশিতভাবে প্রাধান্য দেখায় সেলেসাওরা। গোলমুখে তাদের নেওয়া ১৮টি শটের ১০টি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে, তিউনিসিয়া গোলমুখে সাতটি শট নিয়ে কেবল দুটি লক্ষ্যে রাখতে পারে।
ব্রাজিল সমর্থকদের নিশ্চিতভাবেই খুশি হওয়ার কথা এমন নৈপুণ্যে। ম্যাচ জুড়ে আক্রমণাত্মক ফুটবলের পসরা সাজিয়ে প্রতিপক্ষকে ব্যতিব্যস্ত রাখে তারা। ফরোয়ার্ডরা জ্বলে ওঠায় স্কোরলাইনেও মেলে তাদের চোখ জুড়ানো ফুটবলের ছাপ।
শুরু থেকে চাপ বজায় রেখে লিড নিতে বেশি সময় নেয়নি ব্রাজিল। একাদশ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে কাসেমিরোর ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে জাল কাঁপান বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড রাফিনহা। সাত মিনিট পরই অবশ্য সমতা আসে। বেন স্লিমানের উঁচু করে বাড়ানো দারুণ ক্রসে হেড করে গোলরক্ষক অ্যালিসনকে পরাস্ত করেন তালবি।
তিউনিসিয়ার উল্লাস টেকে খুব অল্প সময়। পরের মিনিটেই ফের লিড নিয়ে একচ্ছত্র আধিপত্য দেখাতে শুরু করে ব্রাজিল। রাফিনহার রক্ষণচেরা পাসে নিচু শটে গোল করেন টটেনহ্যাম হটস্পারের স্ট্রাইকার রিচার্লিসন। কিন্তু এর পরপরই ঘটে অনাকাঙ্ক্ষিত এক ঘটনা। বর্ণবাদী আচরণের চিহ্নস্বরূপ গ্যালারি থেকে কলা ছুঁড়ে মারা হয় তার দিকে।
১০ মিনিট পর সফল পেনাল্টিতে গোলদাতাদের তালিকায় নাম ওঠান পিএসজি তারকা নেইমার। ব্রাজিলের হয়ে এটি তার ৭৫তম গোল। দেশটির সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা কিংবদন্তি পেলের নামের পাশে রয়েছে ৭৭ গোল। অর্থাৎ তাকে পেরিয়ে যেতে নেইমারের চাই আর মাত্র ৩ গোল। কর্নারের সময় রিয়াল মাদ্রিদ মিডফিল্ডার কাসেমিরো ডি-বক্সে ফাউলের শিকার হলে স্পট-কিকের বাঁশি বাজিয়েছিলেন রেফারি।
৪০তম মিনিটে চালকের আসনে বসে পড়ে ব্রাজিল। রিচার্লিসনের পাসে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোলের স্বাদ নেন রাফিনহা। ডি-বক্সের প্রান্ত থেকে তার বাঁ পায়ের শট পোস্টের ভেতরের দিকে লেগে পৌঁছায় জালে।
দুই মিনিট পর ১০ জনের দলে পরিণত হয় তিউনিসিয়া। নেইমারকে ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন ব্রন। সেসময় দুই দলের ফুটবলাররা হাতাহাতি ও বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।
বিরতির পরও একই ধারায় প্রতিপক্ষের রক্ষণে ভীতি ছড়িয়ে খেলতে থাকে ব্রাজিল। বদলি ফরোয়ার্ড পেদ্রোর হেড ৫৫তম মিনিটে ঠেকান তিউনিসার গোলরক্ষক আইমেন দাহমেন। ১০ মিনিট পর রাফিনহার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে হ্যাটট্রিকবঞ্চিত হন তিনি।
৭৪তম মিনিটে জাতীয় দলের জার্সিতে প্রথম গোল করেন পেদ্রো। আরেক বদলি রিয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের পাস তালবির গায়ে লাগার পর ডি-বক্সের ভেতরে দারুণ ভলিতে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। তিন মিনিট পর কাসেমিরোর শট রুখে দেন দাহমেন।
এই নিয়ে টানা ১৫ ম্যাচ অপরাজিত রইল তিতের দল। ১২ জয়ের সঙ্গে তিনটিতে ড্র করেছে তারা। গত বছর ঘরের মাঠে কোপা আমেরিকার ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার কাছে শেষবার হেরেছিল দলটি।
Comments