জমজমাট প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ড্র বার্সা-ম্যানইউর লড়াই

ইউরোপা লিগের শেষ ষোলোতেই ফাইনালের উত্তাপ। কারণ মুখোমুখি ইউরোপের অন্যতম শক্তিশালী দুই দল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও বার্সেলোনা। আর লড়াইটাও হলো প্রত্যাশা অনুযায়ী। জমজমাট প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচে কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলেনি। তাতে জয়ও পায়নি কোনো দল। সমতা মেনেই মাঠ ছেড়েছে তারা।

ইউরোপা লিগের শেষ ষোলোতেই ফাইনালের উত্তাপ। কারণ মুখোমুখি ইউরোপের অন্যতম শক্তিশালী দুই দল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও বার্সেলোনা। আর লড়াইটাও হলো প্রত্যাশা অনুযায়ী। জমজমাট প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচে কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলেনি। তাতে জয়ও পায়নি কোনো দল। সমতা মেনেই মাঠ ছেড়েছে তারা।

বৃহস্পতিবার রাতে ন্যু ক্যাম্পে ইউরোপা লিগের শেষ ষোলোর ম্যাচে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও বার্সেলোনার ম্যাচটি ২-২ গোলের ড্র হয়। স্বাগতিকদের হয়ে একটি করে গোল দিয়েছেন গত মৌসুমেই ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা দুই খেলোয়াড় জাভি আলনসো ও রাফিনহা। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে গোল পেয়েছেন মার্কাস রাশফোর্ড। অপর গোলটি আসে আত্মঘাতী থেকে।

শুরু থেকেই আক্রমণ পাল্টা আক্রমণের এ ম্যাচে মাঝমাঠের দখল অবশ্য বেশি ছিল স্বাগতিকদেরই। ৬১ শতাংশ সময় বল দখলে ছিল তাদের। তবে দুই দলই সমান ১৮টি করে শট নেয়। তবে লক্ষ্যে শট নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা এগিয়েছিল বার্সেলোনা। ৮টি শট লক্ষ্যে রাখে তারা। অন্যদিকে ইউনাইটেড লক্ষ্যে রাখে ৫টি।

ভাগ্য সঙ্গ দিলে এদিন জিততে পারতো যে কোনো দলই। দারুণ কিছু সুযোগ পেয়ে নষ্ট করেছেন দুই দলই। বার্সেলোনার জন্য দুর্ভাগ্য ছিল একটু বেশিই। একটি শট ফিরে আসে বারপোস্টে লেগে। একটি শট বারপোস্টে চুমু খেয়ে বাইরে চলে যায়। এছাড়া ইউনাইটেড গোলরক্ষক দাভিদ দি গিয়া ছিলেন দুর্দান্ত। দারুণ কিছু সেভ দেন তিনি। দারুণ কিছু সেভ দেন বার্সা গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেনও।

ক্যারিয়ারে প্রথমবার ইউনাইটেডের বিপক্ষে খেলতে নেমে ম্যাচের নবম মিনিটেই দলকে এগিয়ে দিতে পারতেন রবার্ট লেভানদোভস্কি। জর্দি আলবার কাছ থেকে বল পেয়ে দুই ডিফেন্ডারকে এড়িয়ে বাঁ প্রান্ত দিয়ে জড়াল শট নিয়েছিলেন তিনি। তবে তারচেয়েও দারুণ দক্ষতায় তার শট ঠেকান গোলরক্ষক দি গেয়া। এরপর ইউনাইটেডকে প্রায় চেপে ধরে বার্সা। তবে রক্ষণভাগের দৃঢ়তায় কোনো বিপদ হয়নি ইউনাইটেডের। বিপজ্জনক জায়গা থেকে ফ্রিকিক পায় বার্সা। আলনসোর নেওয়া শট লক্ষ্যে থাকেনি।

১৯তম মিনিটে গাভির সঙ্গে দেওয়া নেওয়া করে দারুণ ভলি নিয়েছিলেন পেদ্রি। তবে অল্পের জন্য বাইরে গেলে কোনো বিপদ হয়নি ইউনাইটেডের। সাত মিনিট পর ফ্র্যাঙ্কি ডি ইয়ংয়ের বাড়ানো বল থেকে ফাঁকায় পেয়ে গিয়েছিলেন লেভা। কিন্তু বল নিয়ন্ত্রণ করতে দেরি করায় হাতছাড়া হয় সে সুযোগ। পরের মিনিটে পাল্টা আক্রমণ থেকে ভালো সুযোগ ছিল ইউনাইটেডেরও। অ্যারন ভ্যান বিশাখার ক্রস থেকে জাডন সাঞ্চোর শট বার্সার এক খেলোয়াড়ের পায়ে লেগে জালের দিকেই যাচ্ছিল। কিন্তু অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

এর পরের মিনিটে তো অবিশ্বাস্য এক সুযোগ নষ্ট করেন ভেগহোর্স্ট। ফার্নান্দেজের থ্রু বল থেকে গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু গোলরক্ষক বরাবর মারেন তিনি। ৩০তম মিনিটে ব্রুনো ফার্নান্দেজের ক্রস থেকে কাসেমিরোর হেড জোর না থাকায় গোলরক্ষক টের স্টেগেন সহজেই ধরে ফেলেন। চার মিনিটে পর দুর্দান্ত টের স্টেগেন। রাশফোর্ডের শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকান তিনি।

৩৭তম মিনিটে ইউনাইটেড ডিফেন্ডারদের ভুলে বাঁ প্রান্তে ফাঁকায় পেয়ে গিয়েছিলেন জর্দি আলবা। তবে তার নেওয়া শট আবারও ঝাঁপিয়ে ঠেকান দি গেয়া। চার মিনিট পর বড় ধাক্কা খায় বার্সা। হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়েন পেদ্রি। দ্বিতীয়ার্ধের দুই মিনিট যেতেই এগিয়ে যেতে পারতো বার্সা। রাফিনহার ভলি বারপোস্টে চুমু খেয়ে বাইরে গেলে হতাশা বাড়ে দলটির। পরের মিনিটে সুবর্ণ এক সুযোগ নষ্ট করেন সাঞ্চো। আরাহোর ভুলে ডি-বক্সে ফাঁকায় পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মারেন বাইরে।

৫০তম মিনিটে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। কর্নার থেকে দারুণ এক হেডে বল জালে পাঠান সাবেক চেলসি তারকা আলনসো। তবে লিড খুব বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি স্বাগতিকরা। দুই মিনিট পর সমতায় ফেরে ইউনাইটেড। ফ্রেদের থ্রু বল ধরে দুরূহ কোণ থেকে দুর্দান্ত এক শটে লক্ষ্যভেদ করেন রাশফোর্ড। এর দুই মিনিট পর এগিয়ে যাওয়ার ভালো সুযোগ ছিল ইউনাইটেডের। তবে জটলা থেকে গোল আদায় করে নিতে পারেননি।

পরের মিনিটে রাফিনহার দূরপাল্লার শট ঝাঁপিয়ে দি গেয়া না ঠেকালে এগিয়ে যেতে পারতো বার্সাও। ৫৯তম মিনিটে এগিয়ে যায় ইউনাইটেড। কর্নার থেকে বল নিয়ে দারুণ এক কাটব্যাক করেন রাশফোর্ড। ফ্রেদের পায়ে লাগার পর জুলস কুন্দের গায়ে লেগে জালে জড়ায় বল। দুই মিনিট পর ব্যবধান আরও বাড়াতে পারতো সফরকারীরা। ফাঁকা থেকে নেওয়া ভ্যান বিশাখার শট লক্ষ্যে থাকেনি।

৬৭তম মিনিটে লেভার নেওয়া ফ্রিকিক অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। পরে মিনিটে ফ্রেদের শটও অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি। ৭৬তম মিনিটে প্রায় ৩৫ গজ দূর থেকে অসাধারণ এক কোণাকোণি শটে

পরের মিনিটে লক্ষ্যভেদ করে সমতায় ফেরা রাফিনহা। ৭৯তম মিনিটে আবারও বিপজ্জনক জায়গায় বল পেয়ে গিয়ে ছিলেন রাশফোর্ড। তবে এবার বেশ বাইরে মারেন তিনি। এরপরের মিনিটে রাফিনহার হেড লাফিয়ে কর্নারের বিনিময়ে না ঠেকালে এগিয়ে যেতে পারতো বার্সা।

৮৭তম মিনিটে বড় বাঁচা বেঁচে যায় ইউনাইটেড। ফেরান তোরেসের নেওয়া ফ্রিকিক থেকে জটলায় বারপোস্টে লেগে ফিরে আসে বল। প্রবল চাপে একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে বার্সা। পরের মিনিট পর ডি-বক্স থেকে নেওয়া ফাতির শট অবিশ্বাস্য দক্ষতায় ঠেকান দে গিয়া। শেষ দিকে প্রবল চাপ সৃষ্টি করেও গোল আদায় করে নিতে পারেনি স্বাগতিকরা। ফলে ড্র মেনেই মাঠ ছাড়ে দুই দল।

Comments

The Daily Star  | English

Teesta floods bury arable land in sand, leaving farmers devastated

The sand, carried by the floodwaters from the Teesta river, has rendered the land unsuitable for cultivation.

49m ago