মেসির শেষ মুহূর্তের গোলে জিতল পিএসজি
দুর্দান্ত সূচনায় দুই গোলের ব্যবধানে এগিয়ে যায় পিএসজি। কিন্তু এরপর ধীরে ধীরে ম্যাচের দখল নিয়ে নেয় লিল। এক সময় উল্টো লিড পেয়ে যায় তারা। নির্ধারিত সময়ের শেষ দিকে সমতা ফেরান কিলিয়ান এমবাপে। এরপর ম্যাচের প্রায় অন্তিম মুহূর্তে মেসির গোল। তাতে হারের বৃত্ত ভাঙতে পেরেছে ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা।
পার্ক দে প্রিন্সেসে রোববার বিকেলে লিগ ওয়ানের ম্যাচে লিলের বিপক্ষে ৪-৩ গোলের ব্যবধানে জিতেছে পিএসজি। তাদের হয়ে জোড়া গোল করেছেন এমবাপে। একটি করে গোল দিয়েছেন নেইমার ও মেসি। লিলের হয়ে গোল তিনটি করেন বাফোডে ডিয়াকিটে, জনাথন ডেভিড ও জনাথন বাম্বা।
এ ম্যাচের নামার আগে বেশ কোণঠাসা অবস্থা ছিল পিএসজির। কারণ সব প্রতিযোগিতা মিলে আগের তিনটি ম্যাচেই হেরেছে তারা। কিন্তু এদিনও ছিল হারের শঙ্কা। ৮৭ মিনিট পর্যন্ত ৩-২ ব্যবধানে পিছিয়ে ছিল দলটি। এরপর এমবাপে ও মেসির নৈপুণ্যে শেষ পর্যন্ত স্বস্তির জয় মিলে প্যারিসের ক্লাবটির।
তবে পুরো ম্যাচেই হয়েছে রোমাঞ্চকর লড়াই। ম্যাচের প্রথম মিনিটেই টিমোথি উইয়াহর শট পিএসজি গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি দোনারুমা ঝাঁপিয়ে না ঠেকালে এগিয়ে যেতে পারতো লিল। পঞ্চম মিনিটে লিল গোলরক্ষক লুকাস চেভালিয়ের দুর্দান্ত সেভ। ডিফেন্ডারের মাথার উপর দিয়ে নেইমারের দারুণ লব থেকে নেওয়া মেসির শট দারুণ দক্ষতায় ঠেকান এ গোলরক্ষক।
দশম মিনিটে তো অধিনায়ক প্রেসনাল কিম্পেম্বের ভুলে প্রায় গোল হজম করে ফেলেছিল পিএসজি। ব্যাকপাস দিতে গিয়ে ডেভিডের পায়ে বল তুলে দিয়েছিলেন তিনি। গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে ভলিতে লক্ষ্যভেদ করতে চেয়েছিলেন এই কানাডিয়ান ফরোয়ার্ড। তবে লাফিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান দোনারুমা।
পরের মিনিটেই এগিয়ে যায় পিএসজি। নেইমারের বাড়ানো বল থেকে দুই খেলোয়াড়কে কাটিয়ে আরও এক খেলোয়াড়ের বাধা পেরিয়ে দারুণ এক স্লাইড শটে বল জালে পাঠান এমবাপে। এর পাঁচ মিনিট পর স্কোরবোর্ডে নাম লেখান নেইমার। ভিতিনহাকে পাস দিয়ে ডি-বক্সে ঢোকেন তিনি। তবে লক্ষ্য শট নেন এ পর্তুগিজ মিডফিল্ডার। ঝাঁপিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক। তবে বিপদমুক্ত হয়নি। আলগা বল পেয়ে যান নেইমার। দারুণ এক ভলিতে বল জালে পাঠিয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন তিনি।
দুই গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর ধীরে ধীরে মাঝমাঠের দখল হারাতে থাকে পিএসজি। ২৪তম মিনিটে ব্যবধান কমায় লিল। ছোট কর্নার থেকে বল পেয়ে দারুণ এক ক্রস দেন আন্দ্রে গোমেজ। লাফিয়ে উঠে অসাধারণ এক হেডে লক্ষ্যভেদ করেন ডিয়াকিটে। ৪৩তম মিনিটে বাঁ প্রান্তে ফাঁকায় থেকে নেওয়া রেমি কাবেয়ার শট লক্ষ্যে থাকলে তখনই সমতায় ফিরতে পারতো লিল। পরের মিনিটে তো উইয়াহর হেড গোললাইন থেকে লাফিয়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন দোনারুমা।
৫১তম মিনিটে ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়েন নেইমার। এর সাত মিনিট পর সমতায় ফেরে লিল। সফল স্পটকিক থেকে গোল আদায় করে নেন ডেভিড। ডি-বক্সের মধ্যে টিয়াগো ডিয়ালোর জার্সি টেনে ধরায় পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। ৬৯তম মিনিটে পিএসজি শিবির স্তব্ধ করে দেন বাম্বা। গোমেজের অসাধারণ থ্রু বল ধরে বুলেট গতির শটে দোনারুমাকে পরাস্ত করেন এ ফরাসি মিডফিল্ডার।
৮৪তম মিনিটে সমতায় ফিরতে পারতো পিএসজি। হুয়ান বেরনাতের শট ঝাঁপিয়ে রক্ষা করেন লিল গোলরক্ষক চেভালিয়ের। পরের মিনিটে এমবাপের শটও ঠেকান এ গোলরক্ষক। তবে ৮৭তম মিনিটে সমতায় ফেরে পিএসজি। বেরনাতের কাটব্যাক থেকে দারুণ এক স্লাইড শটে লক্ষ্যভেদ করেন এমবাপে।
ম্যাচের যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেন মেসি। ডি-বক্সে ঢোকার পথে তার জার্সি ধরে টেনে ধরলে ফ্রিকিক পায় পিএসজি। সেই ফ্রিকিক থেকে নিচু শটে বল জালে পাঠান আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। ফলে স্বস্তির জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে তারা।
Comments