'যন্ত্রণাদায়ক' সেই ফাইনাল পরে একবারই দেখেছেন ক্লপ
প্যারিসে গত মৌসুমের উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে শিরোপা জিতেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। দারণ পারফর্ম করেও হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল লিভারপুলের। সেই হতাশা এখনও তাড়া করে বেড়ায় দলটির কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপকে। সেকারণে গত সপ্তাহের আগ পর্যন্ত ম্যাচটি আবার দেখা থেকে তিনি বিরত ছিলেন। তার মতে, ওই ফাইনাল আবার দেখাটা ছিল পুরোপুরি যন্ত্রণাদায়ক এক অনুভূতি।
২০২২ সালের ২৯ মে ইউরোপের সর্বোচ্চ ক্লাব আসরের শিরোপা নির্ধারণী মঞ্চে সাক্ষাৎ হয়েছিল লিভারপুল ও রিয়ালের। ম্যাচে বল দখল ও আক্রমণে এগিয়ে ছিল ক্লপের শিষ্যরা। প্রতিপক্ষের গোলমুখে ২৪টি শট নিয়ে তারা লক্ষ্যে রেখেছিল নয়টি। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা মেলেনি অলরেডদের। বাধার দেয়াল হয়ে তাদের সামনে আবির্ভূত হয়েছিলেন রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া।
গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের লক্ষ্যভেদ ফাইনালে গড়ে দিয়েছিল ব্যবধান। ৪৬ শতাংশ সময় বল পায়ে রাখার পাশাপাশি তারা প্রতিপক্ষের গোলমুখে নিতে পেরেছিল কেবল চারটি শট। এর মধ্যে লক্ষ্যে ছিল দুটি। তারপরও শেষ হাসি হেসেছিল কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরাই।
এর আগে ২০১৮ সালেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালেও রিয়ালের কাছে পরাস্ত হয়েছিল লিভারপুল। কিয়েভে স্প্যানিশ লা লিগার বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা ৩-১ গোলে জিতেছিল ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবটির বিপক্ষে। দুই পরাশক্তির এবার দেখা হচ্ছে আসরের শেষ ষোলোতে। প্রথম লেগে ঘরের মাঠ অ্যানফিল্ডে রিয়ালকে আতিথ্য দেবে লিভারপুল। ম্যাচটি শুরু হবে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত দুইটায়।
হাইভোল্টেজ লড়াইয়ের আগে সংবাদ সম্মেলনে জার্মান কোচ ক্লপ জানান গতবারের ফাইনাল আবার দেখার কষ্টকর অভিজ্ঞতা, 'গত সপ্তাহের আগ পর্যন্ত আমি ম্যাচটা আর দেখিনি। তাৎক্ষণিকভাবে যেটা বুঝতে পারি যে আমি আগে এটা দেখতে পারিনি কারণ, এটা ছিল পুরোপুরি যন্ত্রণাদায়ক। আমরা একটা ভালো ম্যাচ খেলেছিলাম, তারপরও জিততে পারিনি। তারা ব্যবধান গড়ে দেওয়া গোলটি করে এবং আমরা পারিনি। সেটাই ছিল হারের কারণ।'
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রেকর্ড ১৪ বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল। গত মৌসুমে সব সমীকরণ উল্টে দিয়ে তারা হাসে শেষ হাসি। অথচ লস ব্লাঙ্কোরা শেষ ষোলোতে পিএসজি, কোয়ার্টার ফাইনালে চেলসি ও সেমিফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটির কাছে হেরে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে ছিল। চাপের মুহূর্তে রিয়ালের ঘুরে দাঁড়ানোর এই বৈশিষ্ট্য নিয়ে ক্লপ বলেছেন, '(এই প্রতিযোগিতায়) মাদ্রিদ কতটা অভিজ্ঞ সেটা দেখতেই পাচ্ছেন। অন্য দলগুলো সুযোগ পেলেও তারা তেমন বিচলিত হয় না। তারা আত্মবিশ্বাস হারায় না কারণ, তারা জানে যে তাদের সুযোগ আসবে।'
প্রায় আট মাসের ব্যবধানে অনেক কিছু বদলে গেছে বলে মনে করছেন তিনি, 'এখন ক্লাব দুটি একই হলেও দল আলাদা, সময় আলাদা। গত কয়েক বছর ধরে আমাদের একটা ইতিহাস রয়েছে। আমাদের মধ্যে একটা দল সব সময় ফাইনালে ছিল, অন্তত তেমনটাই মনে হয়। সাধারণত, আপনি যদি ফাইনালে ওঠেন, হয় আমাদেরকে বা তাদেরকে প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় করতে হয়। এবার আমরা একে অপরের বিপক্ষে খেলব, দেখা যাক কে পরের পর্বে যায়।'
Comments