নেইমারের ইতিহাস গড়া ম্যাচে ব্রাজিলের গোল উৎসব
প্রতিপক্ষ বলিভিয়া নামে-ভারে অনেকটা পিছিয়ে। তাদেরকে ঘরের মাঠে পেয়ে প্রবলভাবে চেপে ধরল ব্রাজিল। প্রায় হাফ ডজন নিশ্চিত সুযোগ নষ্ট করার পরও বড় জয় পেতে কোন সমস্যা হয়নি। জোড়া গোল করে ইতিহাসের পাতায় নাম উঠান দলের সেরা তারকা নেইমার।
শনিবার বাংলাদেশ সময় সকালে নিজেদের মাঠে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ ব্রাজিল জিতেছে ৫-১ গোলে। দলের হয়ে জোড়া গোল করেছেন নেইমার ও রদ্রিগো, আরেক গোল পান রাফিনিয়া। বলিভিয়ার হয়ে এক গোল শোধ দেন আবরেগা। এই জয়ে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে দারুণ সূচনা করল পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
এই ম্যাচেই কিংবদন্তি পেলেকে ছাড়িয়ে ব্রাজিলের ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে নাম লেখান সম্প্রতি সৌদি আরবের ক্লাবে চলে যাওয়া নেইমার।
খেলার শুরু থেকেই একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে ব্রাজিল। প্রায় ৮০ শতাংশ বল পজিশন ধরে রেখে প্রতিপক্ষের জালের দিকে ২১টি শট নেয় ব্রাজিল, যার মধ্যে ১১টি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে বলিভিয়া শট লক্ষ্যে রাখতে পারে স্রেফ তিনটি।
একপেশে আক্রমণ চালালেও ব্রাজিলের গোল পেতে লেগে যায় বেশ খানিকটা সময়। বেশ কিছু সহজ সুযোগ হাতছাড়া করতে থাকেন ব্রাজিলিয়ানরা। বিশেষ করে ইতিহাস গড়ার সামনে থাকা নেইমার।
১৪ মিনিটে বক্সের ভেতরে রদ্রিগোকে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডার ফাউল করলে পেনাল্টি পায় ব্রাজিল। নেইমারের দুর্বল শট ঠেকিয়ে দেন বলিভিয়ার গোলরক্ষক গিয়ের্মো ভিসকারা। এর ১০ মিনিট পরই অবশ্য গোল পায় স্বাগতিকরা। রাফিনিয়ার শট বাধা পেয়ে ফিরে আসার পর ফিরতি বল জালে জড়িয়ে দেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা রদ্রিগো।
৩৮ মিনিটে দ্বিতীয় গোল পেয়েই যেতে পারত ব্রাজিল। রিচার্লিসনের শট দুর্দান্তভাবে ঠেকিয়ে দেন বলিভিয়ার গোলরক্ষক। ৪১ মিনিটে প্রায় মাঝ মাঠ থেকে একক নৈপুণ্যে বল নিয়ে ছুটে যান নেইমার, তার নেওয়া শটও বা দিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন বলিভিয়ান গোলরক্ষক। হতাশায় মাথায় হাত দিয়ে কিছুটা সময় দাঁড়িয়ে থাকেন নেইমার।
বিরতির পর পরই দ্বিতীয় গোল পেয়ে যায় ব্রাজিল। নেইমারের কাছ থেকে পাস পেয়ে বক্সের ভেতর থেকে দুজনকে ফাঁকি দিয়ে বা পায়ের প্লেসির শটে জাল খুঁজে নেন বার্সেলোনা তারকা রাফিনিয়া। খানিক পর গোলরক্ষককে একা পেয়েও অনেক উপরে মারেন ছন্দহীন রিচার্লিসন।
৫৩ মিনিটে আসে তৃতীয় গোল। এবারও নায়ক রদ্রিগো। রিয়াল মাদ্রিদ তারকা এবার বাম পাশ থেকে বল পেয়ে ছুটে গিয়ে ডান পায়ের শটে বল জালে জড়িয়ে পান নিজের দ্বিতীয় গোল।
টানা আক্রমণের তোড়ে নেইমরেরও গোল পেতে দেরি হয়নি। ৬২ মিনিটে আসে কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত। বক্সের ভেতর রদ্রিগোর পা থেকে বল এসে পড়ে ফাঁকায় দাঁড়ানো নেইমারের পায়ে। জোরালো শটে এবার গোল পেতে সমস্যা হয়নি এই তারকার। ৭৮তম আন্তর্জাতিক এই গোল দিয়েই কিংবদন্তি পেলেকে ছাড়িয়ে ব্রাজিলের হয়ে সর্বোচ্চ গোলের ইতিহাস গড়েন নেইমার।
৭৮ মিনিটে একটি গোল শোধ দিয়ে দেয় বলিভিয়া। প্রতি আক্রমণ থেকে ফাঁকায় বল পেয়ে অনেকটা দূর থেকে শট নেন আবরেগো। তার জোরালো শট ক্রস বারের ভেতরের দিকে লেগে ঢুকে যায় জালে। ব্রাজিলের গোলরক্ষক এডারসন কিছু বুঝেই উঠতে পারেননি।
দুই মিনিট পর ক্রস বার প্রতিহত করে নেইমারকে। পরিকল্পিত আক্রমণে বক্সের খানিকটা সামনে থেকে জোরালো শট নেন নেইমার। ক্রস বারে লেগে তা ফিরে আসে। ৮৩ মিনিটে জুয়েলিটনের হেড যায় বাইরে দিয়ে।
যোগ করা সময়ে রাফিনিয়ার ক্রস থেকে বক্সের ভেতর বল পেয়ে টোকা মেরে জালে জড়িয়ে দেন নেইমার। নিজের দ্বিতীয় আর দলের আসে পঞ্চম গোল।
আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর পেরুর বিপক্ষে লিমায় গিয়ে বাছাইপর্বের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে ফার্নান্দো দিনিজের দল।
Comments