ফরোয়ার্ডদের শান্ত থাকতে হবে: সাগরিকা

সোমবার সাফ অনূর্ধ্ব-২০ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপের শেষ ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে দুর্দান্ত হ্যাটট্রিক করে মোছাম্মত সাগরিকা সবার নজরে এসেছেন। ১৭ বছর বয়সী ঠাকুরগাঁওয়ের এই স্ট্রাইকার লাল কার্ডের কারণে তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরে এসে একাই চারটি গোল করেন। মাত্র তিনটি ম্যাচ খেলেই আট গোল করে টুর্নামেন্টের মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপে এই উঠতি তারকা জানালেন তার ভাবনা।
দলের হোটেলে ফিরে আপনারা কীভাবে উদযাপন করলেন?
মোছাম্মত সাগরিকা: আমরা তেমন উদযাপন করিনি। দেশে একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমরা সবাই এতে গভীরভাবে মর্মাহত ছিলাম। শ্রদ্ধার কারণে আমরা ম্যাচের পরেও ছবি তোলা এড়িয়ে গিয়েছিলাম।
আপনি কি আগের সাফ আসরের ১০ গোলের সংখ্যা ছুঁতে বা ছাড়িয়ে যেতে চেয়েছিলেন?
সাগরিকা: একজন ফরোয়ার্ড হিসেবে আমি সবসময়ই সর্বোচ্চ স্কোরার এবং সেরা খেলোয়াড় হওয়ার আশা করি। এবার আমি সর্বোচ্চ স্কোরার হতে পারিনি, তবে মাত্র তিনটি ম্যাচ খেলেও সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার অর্জন করতে পেরে আমি খুশি।
ফরোয়ার্ডদের মধ্যে প্রতিযোগিতাটিকে আপনি কীভাবে দেখেন, বিশেষ করে আপনার অনুপস্থিতিতে তৃষ্ণা রানী সরকারের ভালো পারফরম্যান্সের পর?
সাগরিকা: তৃষ্ণা সত্যিই খুব ভালো খেলেছে – হয়তো আমার চেয়েও ভালো। দলে এত ফরোয়ার্ড থাকায়, সবাই দলে জায়গা করে নিতে নিজেদের সেরাটা দিতে অনুপ্রাণিত হয়।
আপনার তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা থেকে আপনি কী শিখলেন?
সাগরিকা:এটি আমাকে শিখিয়েছে যে বিবাদে জড়ানো সহায়ক নয়। ফরোয়ার্ডদের শান্ত থাকতে হবে – যখন আমরা শান্ত থাকি, তখন আমরা সামনে আরও বড় প্রভাব ফেলতে পারি।
নিষেধাজ্ঞা কি ফাইনালে আপনার পারফরম্যান্সকে বাড়িয়ে দিয়েছিল?
সাগরিকা: অবশ্যই। তিনটি ম্যাচ মিস করা আমাকে আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ করে তুলেছিল। যখন আমি আবার সুযোগ পেলাম, তখন আমি এর সদ্ব্যবহার করতে চেয়েছিলাম – এবং আমি গর্বিত যে দেশের জন্য অর্থপূর্ণ কিছু অবদান রাখতে পেরেছি।
ফাইনাল জেতার পর কি আপনার বাবার সঙ্গে কথা হয়েছিল, তিনি তো একসময় আপনাকে খেলতে নিরুৎসাহিত করেছিলেন?
সাগরিকা: তিনি ম্যাচ দেখতে ঢাকায় আসতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পারেননি – আমার মা অসুস্থ ছিলেন এবং তার থাকার কোনো জায়গা ছিল না। তবুও, আমি টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হওয়ায় তিনি সত্যিই খুব খুশি।
দুই সাফ আসরের মধ্যে একজন খেলোয়াড় হিসেবে আপনার কতটা উন্নতি হয়েছে?
সাগরিকা:আমার ড্রিবলিং আগে দুর্বলতা ছিল, তবে আমি কঠোর পরিশ্রম করে উন্নতি করেছি। আমার গোল করার প্রবণতাও শাণিত হয়েছে, যদিও আমি এখনও আরও ভালো হতে চাই।
আগামী মাসে এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ মহিলা এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ার্সের আগে আপনি কতটা আত্মবিশ্বাসী?
সাগরিকা: আমরা প্রস্তুত, তবে আমাদের খেলার মান আরও বাড়াতে হবে। এই টুর্নামেন্টটি কেবল শুরু ছিল – আমরা আরও শক্তিশালী দলের মুখোমুখি হব, তবে আমরা পিটার বাটলার স্যারকে বিশ্বাস করি এবং ভালো ফলাফল নিয়ে ফিরে আসার আশা করি।
আপনি সিনিয়র জাতীয় দলের সঙ্গে অনেক সময় বেঞ্চে কাটিয়েছেন। আপনি কি মনে করেন এই পারফরম্যান্স আপনাকে শুরুর একাদশে জায়গা করে নিতে সাহায্য করতে পারে?
সাগরিকা: এই সিদ্ধান্ত কোচের উপর নির্ভর করে। যদি তিনি আমার পারফরম্যান্সে খুশি হন, তাহলে হয়তো আমি সেই সুযোগ পাব। আমি বিশ্বাস করি, আমি সিনিয়র দলের হয়ে শুরু করলে আরও বেশি অবদান রাখতে পারব।
Comments