মিরপুরে এখন থেকে স্পোর্টিং উইকেটে খেলার নিশ্চয়তা দিচ্ছে বিসিবি

মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের বাইশগজ নিয়ে অনেক বিতর্ক। অতি মন্থর ও টার্নিং উইকেটে ব্যাটারদের জন্য এখানে যেন বরাবরই থাকে মরণ-ফাঁদ। এই মাঠে খেলা হলেই তাই দেখা যায় লো স্কোরিং সব লড়াই। এখানে খেলে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ভুগেন বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এখন থেকে মিরপুরে স্পোর্টিং উইকেটে খেলতে চায়, সেই নিশ্চয়তা দিলেন ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমুল আবেদিন ফাহিম।
শনিবার মিরপুরে দীর্ঘ বোর্ড সভায় অনেক সিদ্ধান্তের মধ্যে পিচ নিয়ে ছিলো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। গত বছর জুলাইতে পদত্যাগ করে চলে যাওয়া টনি হেমিংকে আবার ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা গামিনি ডি সিলভার কাছ থেকে সরে এসে হেমিংকে 'হেড অব টার্ফ ম্যানেজমেন্ট' দায়িত্ব দিচ্ছে বিসিবি। যার অধীনে দেশের সব কিউরেটর কাজ করবেন।
বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু গামিনি থেকে সরে আসার কথা স্পষ্ট করেন, 'আমরা যদি খুশি হতাম (গামিনিকে নিয়ে), তাহলে কিন্তু টনি হেমিংয়ের কাছে আমরা যেতাম না। আমরা উন্নতির প্রক্রিয়ায় যাচ্ছি আমরা। সব বিভাগেই উন্নতির চেষ্টা করছি আমরা।'
'আমরা অবশ্যই মনে করি, মিরপুরের উইকেট আমাদের জন্য একটি সমস্যা। এটা আমাদের সভাপতি সাহেব বা সবাই মনে করেন। ফাহিম ভাই (ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমুল আবেদীন) তো সবসময়ই ভালো উইকেটে খেলার পক্ষে।'
সর্বশেষ পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজেও মিরপুরের উইকেটের চরিত্র বদল হতে দেখা যায়নি। পাকিস্তানের কোচ মাইক হেসন মিরপুরের উইকেটকে বলেছিলেন আন্তর্জাতিক মানের নিচে।
নাজমুল আবেদিন জানান মিরপুরের মন্থর ও টার্নিং উইকেটের চক্র থেকে তারা বের হয়ে আসবেন, 'অবশ্যই… নিশ্চিতভাবেই… (মিরপুরেও সামনে স্পোর্টিং উইকেটে খেলা হবে)। সত্যি বলতে, পাকিস্তানের সঙ্গে যখন এবার খেলা হয়েছিল, আমাদের প্রধান কোচ খুবই হতাশ হয়েছিলেন উইকেট দেখে। কারণ, আমরা জানি যে, আমরা যেখানে খেলতে যাব, সেটির আদর্শ প্রস্তুতি এখানে হবে না। এই কারণে আমরা নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে সিলেটে খেলব (এই মাসের শেষে), মিরপুরে খেলব না। নিউ জিল্যান্ড 'এ' দলের বিপক্ষেও আমরা সিলেটে খেলেছি (গত মে মাসে), যেখানে কন্ডিশন তাদের (কিইউদের) মতো ছিল।'
'ওই জায়গাটায় আমরা আপোস করতে চাই না। আমরা ভালো উইকেটে খেলব, তাতে যদি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়, তাতেও সমস্যা নয়।'
ভালো উইকেট নিশ্চিত করতেই বিসিবি হেমিংয়ের দিকে ঝুঁকেছে বলেও জানান ক্রিকেট পরিচালনা প্রধান, 'টনি হেমিংয়ের সম্পর্কে অনেকের কাছ থেকেই ভালো কথা শুনেছি। পাকিস্তানে আমি গিয়ে দেখেছি, সেখানে যে উইকেট হেমিং বানিয়েছিল, ওখানে ওদের পিএসএল হয়েছে, আরও টুর্নামেন্ট হয়েছে, তার পরও শেষের দিকে যে কন্ডিশন দেখেছি, তাতে অবাক হয়েছি যে এত ভালো। আমরা আমাদের এখানে বলি যে, এত বেশি ক্রিকেট হয় এখানে, তাই উইকেট ভলো হয় না। অথচ পাকিস্তানে উইকেট এত সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন। এসব বাস্তবে দেখে মুগ্ধতার ব্যাপার ছিল। টনি হেমিং আসলেই দারুণ কিউরেটর।'
'গামিনির ব্যাপারটি হলো, সে যে চেষ্টা করেনি, তা নয়। তবে তার হয়তো একটা সীমাবদ্ধতা আছে, যা সে টপকাতে পারেনি। সে কারণেই আমরা যা চেয়েছি, তা সে পারেনি। তবে সময় এসেছে আরও এগিয়ে যাওয়ার। কারণ সম্ভবত একজন ভালো কোচের চেয়েও ভালো উইকেট বেশি সহায়তা করে ভালো ক্রিকেট খেলতে। আগে ভালো উইকেট থাকলে হয়তো অনেক কিছুই ভালো হয়ে যেত। এখন আমরা তা আশা করতে পারি।'
Comments