থাইল্যান্ডের গুহা থেকে উদ্ধারকৃত সেই ফুটবল দলের অধিনায়কের মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

২০১৮ সালের ঘটনা। থাইল্যান্ডের একটি গুহায় আটকে পড়েছিল একটি কিশোর ফুটবল দল। দুই সপ্তাহ পর তাদেরকে উদ্ধার করা হয়। সেসময় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আলোড়ন তুলেছিল এই সংবাদ। ওই দলের অধিনায়ক ডুয়াংপেচ প্রমথেপ যুক্তরাজ্যে মারা গেছেন।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি বুধবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ১৭ বছর বয়সী প্রমথেপকে গত রোববার লেস্টারশায়ারে তার হোস্টেলে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। এরপর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানেই গতকাল মঙ্গলবার তার মৃত্যু ঘটেছে।

ইস্ট মিডল্যান্ডস অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, প্রমথেপকে গত রোববার বিকালে অ্যাম্বুলেন্সে করে কেটারিং জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনাস্থলে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সও পাঠানো হয়েছিল।

গত বছরের শেষ দিকে যুক্তরাজ্যের একটি ফুটবল একাডেমিতে ভর্তি হয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন প্রমথেপ। কীভাবে তার মৃত্যু ঘটেছে তা জানা যায়নি। তবে লেস্টারশায়ার পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, তার মৃত্যুকে সন্দেহজনক কিছু হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে না। তবে থাইল্যান্ডের কোনো কোনো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনি মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন।

প্রমথেপ ওয়াইল্ড বোরস (থাই ভাষায় নাম মু পা) নামক ফুটবল দলের অধিনায়ক ছিলেন। ২০১৮ সালের ২৩ জুন অনুশীলনের পর তারা সাইকেলে চড়ে চিয়াং রাই প্রদেশের থাম লুয়াং গুহায় যায়। জায়গাটি ছিল তাদের অনেক প্রিয়। কিন্তু হঠাৎ করে শুরু হওয়া ঝড়-বৃষ্টিতে গুহার সরু প্রবেশমুখ পানিতে ডুবে যায়। এতে ফুটবল দলের ১২ কিশোর ও কোচ ভেতরে আটকে পড়ে।

সেসময় ওই কিশোরদের বয়স ছিল ১১ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে। তাদের কোচ এক্কাপন কান্থাওংয়ের বয়স ছিল ২৫ বছর। গুহায় আটকে থাকা অবস্থাতেই ১৩ বছরে পা রাখেন প্রমথেপ।

ফুটবল দলটি অন্ধকারে নয় দিন কোনো খাবার ছাড়াই আটকে ছিল। তাদের খোঁজে প্রায় ১০ হাজার মানুষ তল্লাশি অভিযানে নামে। শেষ পর্যন্ত ডুবুরিরা তাদের সন্ধান পায়। সেসময় টর্চের আলোয় দেখা মেলে শীর্ণকায় প্রমথেপের হাসিমুখ। ওই উদ্ধার অভিযানের সবচেয়ে স্মরণীয় ছবিগুলোর একটি এটি।

প্রমথেপ স্থানীয়দের কাছে ডোম নামে পরিচিত ছিলেন। গত বছরের অগাস্টে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে তিনি জানান যে মার্কেট হারবরোর ব্রুক হাউজ কলেজ ফুটবল একাডেমিতে যোগদানের জন্য একটি স্কলারশিপ পেয়েছেন। তিনি লিখেছিলেন, 'আজ আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।'

সেসময় ওই ফুটবল দলের সদস্যরা প্রমথেপের অর্জনে ভীষণ আনন্দিত হয়েছিল। কিন্তু মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে তাদের বন্ধুকে হারিয়ে তারা এখন শোক পালন করছে।

Comments

The Daily Star  | English
A freedom fighter’s journey to Mujibnagar

Who is a freedom fighter

The government's move to redefine freedom fighters has been at the centre of discussion

43m ago