প্যারালিম্পিক স্বপ্নে ছুটছেন ইরাকি নারী টেবিল টেনিস খেলোয়াড়রা

দক্ষিণ ইরাকের দিবানিয়াহ শহরের একটি সাধারণ কমিউনিটি সেন্টারে ব্যাট হাতে প্রস্তুত হচ্ছেন নুর আল-হুদা সারমাদ। হুইলচেয়ারে বসেই বলের জন্য অপেক্ষা, সামনে প্রতিযোগিতা, আর পেছনে জেদ—স্বপ্ন একটাই: দেশের হয়ে প্যারালিম্পিক মঞ্চে খেলতে নামা।

সারমাদ ও তার মতো আরও সাতজন শারীরিক প্রতিবন্ধী নারী সপ্তাহে তিনদিন করে অনুশীলন করেন। লক্ষ্য—একটি প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া, যা সফল হলে খুলে যাবে জাতীয় প্যারালিম্পিক দলে জায়গা করে নেওয়ার দরজা।

তবে অনুশীলনের পরিবেশ একেবারেই মানসম্পন্ন নয়। 'টেবিলগুলো ভাঙা, বিদ্যুৎ যায়, এমনকি ব্যাটটাও নিজেদের কিনে আনতে হয়,' বললেন ২৫ বছর বয়সী সারমাদ।

পুরোনো তিনটি টেবিলই তাদের একমাত্র ভরসা, যা আবার স্থানীয় দর্শকদের সঙ্গেও ভাগ করে নিতে হয়।

তীব্র গরমে ফ্যান চালানো যায় না, বলের গতি বাধাগ্রস্ত হয় বলে। এসি থাকলেও চালানো যায় না, কারণ বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে জেনারেটর কেবলমাত্র ন্যূনতম চালন শক্তি জোগাতে পারে।

সরকারি কমিউনিটি সেন্টার থেকে প্রতি মাসে মাত্র ৭৫ ডলারের ভাতা দেওয়া হয় পরিবহনের জন্য। তবে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দরকার হয় বিশেষ ব্যাট, যার জন্য খেলোয়াড়দের নিজ খরচে ২০০ ডলার গুনতে হয়েছে।

অনুশীলনে যেতে হয় ট্যাক্সি করে। কিন্তু সেখানে প্রতিবন্ধীদের নিতে অনেক সময় চালকেরা অনীহা দেখান।

দলের কোচ মোহাম্মদ রিয়াদ বলেন, 'দিবানিয়াহতে টেবিল টেনিস খেলাটি শুধুই ব্যক্তিগত উদ্যোগে টিকে আছে। সরকার থেকে কোনো সহায়তা নেই।'

রিয়াদ নিজে প্যারালিম্পিক কমিটির সদস্য হলেও জানিয়েছেন, পুরোনো যন্ত্রপাতিই তাদের মূল ভরসা।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, 'সরকার শুধু ফুটবলকেই গুরুত্ব দেয়, অথচ প্যারালিম্পিকে সোনা এনেছেন আমাদের খেলোয়াড়রাই।'

২০২৪ সালের প্যারিস গেমসে প্যারালিম্পিক সোনাজয়ী নাজলাহ ইমাদও সহমত পোষণ করে বলেন, 'সবকিছু সম্ভব, যদি মনোবল থাকে।' তিনি এখন স্পন্সরশিপে খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং সতীর্থদের লড়াই চালিয়ে যেতে উৎসাহ দিয়েছেন।

ইরাকে নারীদের খেলাধুলার ঐতিহ্য থাকলেও বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি তাদের বাধাগ্রস্ত করছে। সারমাদদের অঞ্চলে গত বছর একটি ম্যারাথন শুধুমাত্র পুরুষদের জন্য আয়োজন করা হয়, নারী অংশগ্রহণ নিয়ে বিতর্ক ওঠায় আয়োজকরা সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেন।

২৪ বছর বয়সী ইমান হামজা বলেন, 'সমাজ আমাদের দেখে ভাবে আমরা কিছুই পারি না। কিন্তু আমরা বিশ্বজয় করেছি।'

Comments

The Daily Star  | English

First commodity exchange may launch this year

The Chittagong Stock Exchange (CSE) is working to launch the country’s first-ever commodity exchange by the end of this year, initially trading in cotton, crude palm oil, silver, and gold.

11h ago