আলকারাজের বিশাল অঙ্কের পুরস্কার জেতা ঘিরে বিতর্ক

সিনসিনাটি ওপেন আয়োজকরা এবারের আসরকে আধুনিকায়নে খরচ করেছে ২৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ২২২ মিলিয়ন ইউরো)। বহুদিনের পুরোনো ও অচল হয়ে পড়া অবকাঠামোকে ঝকঝকে করে তোলার পাশাপাশি এ টুর্নামেন্টকে আরও মর্যাদাপূর্ণ করতে আয়োজনকারীরা খেলোয়াড়দের জন্য পুরস্কারের অঙ্কও বাড়িয়েছে।

এবারের আসরে পুরুষদের জন্য পুরস্কার তহবিল বেড়েছে ৩৫.২৯ শতাংশ এবং নারীদের জন্য ৬০.৪৩ শতাংশ। তবুও পুরুষ ও নারীদের পুরস্কারের মধ্যে ব্যবধান রয়ে গেছে যথেষ্ট, যা এখনো বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে। সব গ্র্যান্ড স্ল্যামে সমান পারিশ্রমিক থাকলেও, মাস্টার্স ১০০০ মিশ্র আসরগুলোতে সেই সমতা এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি।

বিশ্বের নাম্বার ওয়ান তারকা আরিনা সাবালেঙ্কা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, 'আমরাও সমান অর্থ পাওয়ার যোগ্য।' তিনি ২০২৪ সালে নিজের প্রাইজমানি ৫২৩,৪৮৫ ডলারের সঙ্গে ইতালিয়ান ইয়ানিক সিনারের ১,০৪৯,৪৬০ ডলারের তুলনা টেনে এই বৈষম্যের প্রশ্ন তোলেন। নারীদের ক্রমবর্ধমান প্রতিবাদে আয়োজকেরা কিছুটা সাড়া দিচ্ছে, কিন্তু বিতর্ক এখনো তীব্র।

এবার চ্যাম্পিয়ন কার্লোস আলকারাজ একাই পেয়েছেন ১,১২৪,৩৮০ ডলার, যা ইউরোর হিসাবে প্রায় এক মিলিয়নের কাছাকাছি। মহিলা চ্যাম্পিয়নের প্রাইজমানির চেয়ে প্রায় ৪ লাখ ডলার বেশি। নারী চ্যাম্পিয়ন পেয়েছেন ৭৫২,২৭৫ ডলার (প্রায় ৬৪৪,০০০ ইউরো)। অবশ্য আগে যেখানে পুরুষদের প্রাইজমানি প্রায় দ্বিগুণ ছিল, এবার সেই ব্যবধান কিছুটা কমেছে। নারীদের প্রাইজমানি বেড়েছে ৪৩.৭৮১ শতাংশ, যেখানে পুরুষ চ্যাম্পিয়নের জন্য বৃদ্ধি মাত্র ৭.১৪ শতাংশ।

ফাইনালেও একই বৈষম্য। সিনার এবার রানার্স-আপ হয়ে পান ৫৯৭,৮৯০ ডলার (৫১২,০০০ ইউরো), আর মহিলা রানার্স-আপের প্রাইজমানি মাত্র ৩৯১,৬০০ ডলার (৩৩৫,০০০ ইউরো)।

মোট প্রাইজমানির তুলনায় বৈষম্য আরও স্পষ্ট। পুরুষদের জন্য মোট বরাদ্দ ছিল ৯,১৯৩,৫৪০ ডলার, যা নারীদের ৫,১৫২,৫৯৯ ডলারের প্রায় দ্বিগুণ। বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, টুর্নামেন্টটির মালিক বেন নাভারো, যিনি আবার মার্কিন তারকা এমা নাভারোর বাবা এবং চার্লসটনের একটি ডব্লিউটিএ ৫০০ টুর্নামেন্টেরও মালিক।

সাবালেঙ্কা আবারও বলেন, 'এটা অন্যায়—টেলিভিশন সম্প্রচার, টিকিট বিক্রি, সবকিছুর দিক থেকেই। নারী খেলোয়াড়রাও সমান কঠোর পরিশ্রম করি। পুরুষরা শারীরিকভাবে শক্তিশালী হতে পারে, কিন্তু তাই বলে আমরা কেন কম পারিশ্রমিক পাব?'

Comments