দুইশ রানের প্রথম স্কোরে ইংল্যান্ডকে হারাল অস্ট্রেলিয়া

কুড়ি ওভারের চলমান বিশ্বকাপে টি-টোয়েন্টি সুলভ ব্যাটিং দেখা যায়নি মোটেও। প্রথম ১৬ ম্যাচে কোনো দলই গড়তে পারেনি দুইশ রানের স্কোর। শেষমেশ অস্ট্রেলিয়াই প্রথম দল হিসেবে তা করতে পারলো। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এমন বড় পুঁজি নিয়ে তাদের বোলাররা সহজেই এনে দিয়েছেন ৩৬ রানের জয়।

রোববার বার্বোডোজে টস জিতে বোলিং নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ২০১ রানের আগে আটকাতে পারেনি ইংল্যান্ড। একবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার টপ অর্ডারের পাঁচ ব্যাটারের কেউ করেননি ২৮ রানের কম। কোনো ফিফটি ছাড়াই সকলের সম্মিলিত অবদানে অজিরা ৭ উইকেটে ২০১ রানের স্কোর গড়তে সক্ষম হয়। এরপর অ্যাডাম জ্যাম্পা ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন ২৪ রানে দুই উইকেটের দারুণ স্পেলে। বাকি অজি বোলারদের বিচক্ষণ বোলিংয়ের সহায়তায় ইংল্যান্ডকে তারা রুখে দেয় ১৬৫ রানে।

অথচ বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় দারুণ শুরু পেয়েছিল ইংল্যান্ড। দুই ওপেনার মিলেই পাওয়ারপ্লেতে এনে দেন ৫৪ রান। সপ্তম ওভারে মিচেল স্টার্কের ওভারে জস বাটলার তিন বাউন্ডারিতে আনেন ১৯ রান। ৭ ওভারে বিনা উইকেটে ৭৩ রানে এনে রান তাড়ায় শক্ত অবস্থানে পৌঁছে গিয়েছিলেন ইংলিশরা। জ্যাম্পা এসে এরপর খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেন দুই ওপেনারকেই ফিরিয়েই। নিজের প্রথম বলেই বোল্ড করেন ফিল সল্টকে। ২৩ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৭ রান করে ফিরে যান সল্ট। ইনিংসের দশম ওভারে বাটলারও ফিরেন জ্যাম্পার বলে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে। ২৮ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪২ রানে পয়েন্টে ধরা পড়ে থেমে যায় বাটলারের ইনিংস।

১১তম ওভারেই আরেকটি উইকেট খুইয়ে পথ হারিয়ে ফেলে ইংলিশরা। মার্কাস স্টয়নিসের বলে উইল জ্যাকস লংঅনে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ১০ বলে ১০ রানে। পাঁচে নামা জনি বেয়ারস্টোকে বেধে রাখে অজি স্পিন। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও জ্যাম্পা মিলে টানা দুই ওভারে দেন মাত্র ৫ রান। ১৪তম ওভারে ম্যাক্সওয়েলকে তিন ছক্কায় মঈন ২০ রান এনে আস্কিং রেট নাগালের বাইরে যেতে দেননি যদিও। কিন্তু জশ হ্যাজলউড ও প্যাট কামিন্সের বিচক্ষণ বোলিংয়ে তারা ম্যাচ থেকে ছিটকেই পড়ে শেষ পর্যন্ত। অজি এই দুই পেসার পরপর দুই ওভারে দুজন ইংলিশ ব্যাটারকে প্যাভিলিয়নে পাঠান। ১৩ বলে ৭ রান করে বেয়ারস্টো আউট হন হ্যাজলউডের বলে। মঈন বিদায় নেন কামিন্সের বলে ১৫ বলে ৩ ছক্কায় ২৫ রানের ইনিংস খেলে।

হ্যাজলউড ও কামিন্স মিলে তিন ওভারে মাত্র ১১ রান দিলে ইংল্যান্ডের প্রয়োজন গিয়ে পৌঁছে ৩ ওভারে ৬৬ রানে। ১৯তম ওভারে ১২ রান দিলেও জ্যাম্পা তার স্পেল শেষ করেন ২৮ রানে ২ উইকেট নিয়ে। শেষের দিকে লিয়াম লিভিংস্টোনকে ১৫ রানে আউট করে উইকেটের ঘরে সংখ্যা বাড়ান কামিন্স। হ্যারি ব্রুকের ১৬ বলে ২০ রানের ইনিংসে ইংলিশরা থামে ৬ উইকেটে ১৬৫ রানের স্কোরে।

এর আগে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভার থেকেই ইংল্যান্ডের উপর ঝড় শুরু হয়ে যায়। উইল জ্যাকসের ওভারে ৩টি ছক্কা মেরে মোট ২২ রান আনেন দুই অজি ওপেনার। বাঁহাতিদের জন্য লেগ সাইডে ছোট বাউন্ডারির প্রান্ত থেকে বোলিং করতে এসে একই অভিজ্ঞতা হয় মার্ক উডের। চতুর্থ ওভারে ডেভিড ওয়ার্নার ৩ ছক্কা ও ১ চার মারেন এই পেসারকে।

সে ওভারেই পঞ্চাশ রান এনে ফেলা অস্ট্রেলিয়া পঞ্চম ওভারে গিয়ে হারায় প্রথম উইকেট। মঈনের নিচু হয়ে যাওয়া বলে বোল্ড হন ওয়ার্নার। ১৬ বলে ৪টি ছক্কা ও ২টি চারে গড়া ৩৯ রানের ইনিংস খেলে থামেন তিনি। ট্রাভিস হেডও প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন দ্রুতই। চার রানের মধ্যে ১৮ বলে ৩৪ রান করা হেডের উইকেট হারিয়ে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। জফরা আর্চারের স্লোয়ারে বোল্ড হয়ে তিনি যখন ফিরছেন, ততক্ষণেই অজিরা স্কোরবোর্ডে তুলে ফেলেছে ৭৪ রান।

দারুণ সূচনা পাওয়া অজিদের ৬৫ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি এগিয়ে নিয়ে যায় বড় স্কোরের দিকে। স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে থাকা মিচেল মার্শ আউট হয়ে যান যদিও ২৫ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় ৩৫ রানের ইনিংস খেলে। লিভিংস্টোনের বলে তিনি স্টাম্পিং হলে ১৩৯ রানে তৃতীয় উইকেট পড়ে অজিদের। আরো ২ রান যোগ হতেই বিদায় নেন ম্যাক্সওয়েল। আদিল রশিদের বলে বাউন্ডারিতে ধরা পড়ে অস্বস্তিতে থাকা ম্যাক্সওয়েল ফিরে যান ২৫ বলে ২৮ রানে।

টিম ডেভিড এসে ৭ বলে ১১ রানে বিদায় নিলেও চতুর্থ অজি ব্যাটার হিসেবে মার্কাস স্টোয়নিস ত্রিশ রানের ইনিংস খেলেন। ১৭ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় ৩০ রান করে স্টয়নিস ফিরছেন যখন, দুই বল হাতে রেখে অস্ট্রেলিয়া ছুঁয়ে ফেলেছে ২০০ রান। শেষের দিকে ম্যাথু ওয়েড তাকে সঙ্গ দেন ১০ বলে ১৭ রানের ক্যামিও খেলে। চার ওভারে ২৮ রানে দুই উইকেট নেন আর্চার। রশিদ, মঈন, লিভিংস্টোন- তিন স্পিনারই পান একটি করে উইকেট। সর্বোচ্চ ২ উইকেট নিতে ক্রিস জর্দান খরচ করেন ৪৪ রান।

Comments

The Daily Star  | English

No justifiable reason to delay nat'l polls beyond Dec: Salahuddin

We have been able to make it clear that there is not even a single mentionable reason to hold the election after December, says the BNP leader

6h ago