‘আমি ঠেকিয়ে দিচ্ছি, আউট হবো না’, মিরাজকে বলেছিলেন মোস্তাফিজ

শেষ উইকেট জুটিতে দরকার ছিল ৫১ রান। মেহেদী হাসান মিরাজ ক্রিজে থাকলেও আরেক পাশে মোস্তাফিজুর রহমান। তার উপর ভরসা করে আর কতদূর? এমন পরিস্থিতিতে সঙ্গীর মনে জোর বাড়াতে এগিয়ে আসেন মোস্তাফিজ নিজেই। মোস্তাফিজের কাছ থেকে ইতিবাচক বার্তা পেয়ে জেতার রাস্তায় শক্ত পায়ে হাঁটা শুরু করেন মিরাজ।
রোববার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রোমাঞ্চকর ম্যাচে ভারতকে ১ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ। ১৮৭ রান তাড়ায় এক পর্যায়ে সহজ জয়ের রাস্তায় ছিল লিটন দাসের দল। ৪ উইকেটে ১২৮ থেকে পা হড়কে স্কোর পরিণত হয় ৯ উইকেটে ১৩৬ রানে।
তারপরই শুরু মিরাজ-মোস্তাফিজ জুটির মহাকাব্য। ৪১ বলে দুজনে তুলেন ৫১ রান। যাতে ৩০ বলে ৩৭ রানই মিরাজের। ১১ বলে ১০ রান করে তাকে দারুণ সঙ্গ দেন মোস্তাফিজ।
৩৯ বলে ৩৮ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলে সংবাদ সম্মেলনে এসে মিরাজ সতীর্থকে কৃতিত্ব দিলেন, 'মোস্তাফিজ অনেক আত্মবিশ্বাসী ছিল। ও আমাকে একটা কথা বারবার বলছিল যে আমাকে নিয়ে চিন্তা করার কিছু নেই, আমি ঠেকিয়ে দিচ্ছি বল। আমি আউট হবো না। যদি গায়েও বল লাগে সমস্যা নাই। ওর ওই আত্মবিশ্বাস দেখে আমার ভালো লেগেছে। এতে আমার আত্মবিশ্বাসটা বেড়েছে।'
তবু পাহাড়সম একটা লক্ষ্য পূরণের পরিস্থিতি ছিল। এমনকি ১৫ রানে একবার জীবনও দিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। লোকেশ রাহুল সেই ক্যাচ রাখতে পারেননি। মিরাজ ভড়কে না গিয়ে দলকে যে জেতাতে পারবেন সেই বিশ্বাস পুঁতে রেখেছিলেন বুকে, 'আমার বিশ্বাস ছিল। সত্যি কথা বলতে অনেকে বললে বলবে পাগল। সত্যিই আমি বিশ্বাস করছিলাম। বিলিভ সিস্টেমটা আমার কাজ করছিল। আমার কাছে একবারও মনে হয়নি আমরা ম্যাচটা হারব। আমার মনের ভেতরে যেটা ছিল আমি বলছিলাম আমরা পারব। আমি নিজের সঙ্গে কথা বলছিলাম আমি পারব, আমি পারব।'
'যখন যে ব্যাটার আসছিল। আমি হাসানকেও বলছিলাম চার-পাঁচটা বল যদি তুমি খেলতে পার তাহলে আমার জন্য সহজ হয়ে যাবে। আমি চিন্তা করেছিলাম হয়ত ইবাদতকে নিয়ে ১৫ রান করব, হাসান মাহমুদকে নিয়ে ২০টা রান করব। মোস্তাফিজকে নিয়ে শেষে ১৫-২০ রান করব। এভাবে আমার চিন্তা ভাবনা ছিল। তারপর ইবাদত ও হাসান পর পর আউট হয়ে গেছে। যখন শেষ উইকেট ছিল তখন ডু অর ডাই। তখন তো আমার ঝুঁকি নিতেই হবে। মোস্তাফিজের কথাগুলো আমার ভালো লেগেছে। ওর কথাগুলো কানে বাজছিল তখন নিজের ভেতর।'
একদম শেষে গিয়ে আবার স্নায়ুচাপে ভুগছিলেন তিনি। অনেকবার শেষ দিকে গিয়েও শেষটা করতে না পারার একটা ভয়ও কাজ করছিল তার, 'যখন ১৪ রান ছিল বা ১০ রান ছিল তখন একটু উত্তেজনায় ছিলাম। তখন ভাবছিলাম এত কাছে এসে যদি হেরে যাই। এরকম হয়েছে তো আগেও। কিন্তু মোস্তাফিজ আমাকে সাহস দিয়েছে। মোস্তাফিজ বলছিল এখন তাড়াহুড়োর কিছু নাই। এখন ছয় মারার দরকার নাই। নিচে নিচে খেললে গ্যাপ করলে রান হবে। আমার গেম প্লেন আমি পরিষ্কার ছিলাম। এজন্য ভালও হয়েছে।'
Comments