ক্যাচ ছাড়া মানেই ম্যাচ হারা নয়: বাংলাদেশের ফিল্ডিং কোচ

ক্রিকেটে প্রচলিত আছে, 'ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস'। কিন্তু এই কথায় তীব্র দ্বিমত বাংলাদেশের ফিল্ডিং কোচ শেন ম্যাকডারমটের। তার মতে ক্যাচ ফেলার পরও মানুষ ম্যাচ জিতে এবং এই সংখ্যাই বেশি। তবে তারা ক্যাচ হাতছাড়া করার হারটা কমিয়ে রাখতে চান।
ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ক্যাচ হাতছাড়ার করার আরেকটু হলে পুড়তে পারত বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে চোট নিয়ে নয় নম্বরে নেমে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিচ্ছিলেন রোহিত শর্মা। ঝড়ো ইনিংসের পথে ভারতীয় অধিনায়ক দুবার দেন সুযোগ। ম্যাচের শেষ দিকে শর্ট স্কয়ার লেগে ইবাদত হোসেন ও ডিপ মিড উইকেটে এনামুল হক বিজয় ছাড়েন তার ক্যাচ।
পরে এক বলে ছয় রানের সমীকরণে দলকে নিয়ে এসেছিলেন রোহিত, মোস্তাফিজুর রহমানের মুন্সিয়ানায় শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশই।
ম্যাচের উত্তেজক পরিস্থিতিতে ক্যাচ ফসকানোর একাধিক ঘটনা আছে বাংলাদেশের। ম্যাচ হারার পেছনেও অনেক ম্যাচেই বড় দায় হয়েছে ক্যাচ মিসের।
বাংলাদেশের ফিল্ডিং কোচ শুক্রবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শোনালেন নতুন কথা, 'কোচরা খেলোয়াড়দের থেকে চাপ সরিয়ে নিতে কাজ করে। আমার কাছে অনেক ভিডিও আছে যেখানে অনেক দল ক্যাচ ছেড়েও পরে ম্যাচ জিতেছে।'
'ক্যাচ ম্যাচ জেতায়, কিন্তু ক্যাচ ছাড়া মানেই ম্যাচ হারা না। এটা প্রমাণিত। আমরা আমাদের ভাবনা বদলাতে পারি। যত বেশি ক্যাচ ফেলব, তত ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে যেতে হবে, এবং তত বেশি শেখার জায়গা তৈরি হবে। ব্যর্থতার পর ফিরে আসার সামর্থ্য সবার দুর্দান্ত।'
ইবাদত ও বিজয়ের ক্যাচ ফসকে যাওয়ার ঘটনাকে ক্রিকেটীয় দক্ষতার চেয়ে সামলানোর ঘাটতি হিসেবে দেখছে ম্যাকডারমট, 'ব্যাপারটা ছিল সব মিলিয়েই (মানুষ, চাপ, পরিস্থিতি)। লোকেশ রাহুলও ক্যাচ ছেড়েছিল (প্রথম ম্যাচে)। কাজেই আমরা সবাই ক্যাচ ফেলি। যখন উদ্বেগের ব্যাপার তৈরি হয় তখনই, যখন বল বাতাসে থাকে তখন এটা ছেড়ে দিলে কি প্রতিক্রিয়া হবে তা নিয়ে ভাবতে থাকে কেউ। ফ্লাডলাইটের আলোয় অনেক উঁচুর ক্যাচ ফসকে যায়। কারণ ফিল্ডারদের ভাবনার সময় থাকে। এটা খুব কঠিন কাজ। কিন্তু শেখার ব্যাপারও আছে। কঠিন পরিস্থিতিতে যখন আলোর নিচে আমরা ক্যাচ ফেলি, সেটা শেখার জন্য দারুণ অভিজ্ঞতা হয়।'
ম্যাচের মোড় ঘোরানো মুহূর্তে ক্যাচ ধরে রাখতে না পারার মাঝেও ইতিবাচক দিক খুঁজেন এই কোচ। তার কাছে অনুশীলনের নিবেদন আর একাগ্রতাই আসল, 'ক্যাচ ফেলা ম্যাচ হারায় না। এটা ফ্যাক্ট। এটা নিয়মিতই হয়। এটা খেলার অংশ। অবশ্যই আমরা চাইব যত কম ক্যাচ ফেলা যায়। আমরা প্রত্যেকের স্পিরিট উপরে রাখতে চাই। কে জানে কাল কেউ একজন ক্যাচ ফেলতে পারে, আমরাও হারতে পারি। কিন্তু আমি আগেই বলছি ছেলেরা যেভাবে অনুশীলন করছে তাতে আমি খুশি। মাঠে ও মাঠের বাইরের নিবেদন নিয়ে খুশি।'
গত মার্চ মাসে ম্যাকডারমটের সঙ্গে চুক্তি করে বিসিবি। এই সময়টায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে দলের সঙ্গে ছিলেন তিনি। ফিল্ডিং নিয়ে কাজ করার জায়গা অনেক থাকলেও বাংলাদেশের ফিল্ডিং মানকে বেশ উপরে রাখেন এই অস্ট্রেলিয়ান, 'অবশ্যই কিছু উদ্বেগের জায়গা আছে (ফিল্ডিং নিয়ে)। যখন প্রথম শুরু করেছিলাম। এখানে বিশ্বকাপসহ নয় মাস থাকার পর খুব উপভোগ করছি। আমি ভাগ্যবান যে কোচিং স্টাফ ফিল্ডিং নিয়ে প্যাশনেট। আমাদের পারফরম্যান্সের এটা একটা বড় জায়গা (ফিল্ডিং)। আমাদের ক্যাচ নেওয়ার হার বিশ্বের মধ্যে এক-দুই নম্বরে।'
Comments