ইশানের বিস্ফোরক ডাবল সেঞ্চুরি, কোহলির সেঞ্চুরিতে ভারতের ৪০৯

Virat Kohli & Ishan Kishan
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

ব্যাটিং স্বর্গে নেমে ইশান কিশান তুলেন ঝড়, বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ তছনছ করে  দ্রুততম ডাবল সেঞ্চুরির বিশ্ব রেকর্ড গড়ে বসেন তিনি, ওয়ানডে ৪৪তম সেঞ্চুরিতে রাঙান বিরাট কোহলিও। চার-ছক্কার বৃষ্টিতে ওয়ানডে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথমবার কোন দল পেরিয়ে গেল চারশো রানের পুঁজি।

শনিবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দেখা গেছে রানবন্যা। আগে ব্যাটিং পেয়ে ভারত করেছে  ৮ উইকেটে ৪০৯  রান। এটিই বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে প্রতিপক্ষের সর্বোচ্চ পুঁজি। এর আগে ২০০৫ সালে ইংল্যান্ড করেছিল ৪ উইকেটে ৩৯১ রান। ওয়ানডেতে ভারতের এটিই ৬ষ্ঠবারের মতো চারশো ছাড়ানো পুঁজি।

ভারতকে রানের পাহাড়ে নিয়ে যান মূলত ইশান। ১২৬ বলে ডাবল সেঞ্চুরি করা এই ব্যাটার ১৩১ বলে ১০ ছক্কা আর ২৪ রানে থামেন ২১০ রান করে। ৯১ বলে ১১ চার ২ ছক্কায় ১১৩ করেন কোহলি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটি তার ৭২তম সেঞ্চুরি। 

টস জিতে ভারতকে ব্যাট করতে দিয়ে শুরুটা মন্দ ছিল না বাংলাদেশের। পঞ্চম ওভারেই মেহেদী হাসান মিরাজ তুলে নেন শিখর ধাওয়ানকে। মিরাজের সোজা বলে লাইন মিস করে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন তিনি। ১৫ রানে প্রথম উইকেট হারানোর ধাক্কা আরও প্রবল হতো খানিক পর। মিরাজের পরের ওভারে শর্ট মিড উইকেটে সহজ ক্যাচ দিয়েছিলেন কোহলি। অধিনায়ক লিটন দাসের হাত ফসকে তা বেরিয়ে যায়।

এরপরই খোলস থেকে বেরিয়ে দাপট দেখাতে থাকেন ভারতের ব্যাটাররা। কোহলি খেলছিলেন তার মত করেই, ইশানও ফিরে যান নিজের রূপে। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দ্রুতই মোড় ঘুরিয়ে দিতে থাকেন তিনি।

বাহারি সব শটে ৪৯ বলে ফিফটি করার পরই দেখা মিলে ভয়ঙ্কর ইশানের। বাংলাদেশের বোলারদের উপর চলতে থাকে তার শাসন। বড় বড় সব ছক্কা, চোখ ধাঁধানো সব বাউন্ডারিতে এলোমেলো করে দেন তাসকিন আহমেদ, ইবাদত হোসেন, সাকিব আল হাসানদের।

 ফ্লিক, পুল, ড্রাইভের পসরা মেলে ধরেন তিনি। ইশানকে থামানোর কোন উপায় পাচ্ছিল না বাংলাদেশ। সাকিবের বাঁহাতি স্পিন হোক কিংবা মিরাজের অফ স্পিন। অথবা পেসারদের বল। তার সামনে পড়লে বলগুলোর ঠিকানা হচ্ছিল গ্যালারিতে।

৮৫ বলে সেঞ্চুরি করা ইশান পরের একশো রান করেন স্রেফ ৪১ বল খেলে। তাতে ক্রিস গেইলকে ছাপিয়ে ওয়ানডেতে দ্রুততম ডাবল সেঞ্চুরির বিশ্ব রেকর্ড গড়া হয়ে যায় তার। ইশানের দানবীয় মূর্তিতে ঢাকা পড়ে গিয়েছিলেন কোহলি। ১ রানে জীবন পেলেও বাকিটা সময় তিনি ছিলেন নিখুঁত। নিখাদ ক্রিকেটীয় সব শটে তিন অঙ্কের দিকে ছুটে যান তিনি। তাসকিনের বলে ছক্কার চেষ্টায় ইশান ফেরার পর কোহলি মেলে ধরেন ডানা।

৯১  বলে ১১ চার, ২ ছক্কায় ১১৩ রান করে ভারতের সেরা ব্যাটার ক্যাচ দেন সাকিবের বলে। তার আগে ২৯০ রানের রেকর্ড জুটি (বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে যেকোনো উইকেটে সর্বোচ্চ) গড়ে আউট হওয়ার আগে ১৩১ বলে অবিস্মরণীয় এক ব্যাটিং করেন ২৪ পেরুনো ইশান। ২৪ রানের সঙ্গে মারেন ১০ ছয়।

এই দুজনের ফেরার পর ভারত চারশো ছাড়িয়ে যায় ওয়াশিংটন সুন্দর ও আকসার প্যাটেলের। সুন্দর ২৭ বলে করেন ৩৭। আকসার ১৭ বলে করে যান ২০। 

রান বন্যার ইনিংসে বাংলাদেশের বোলারদের অবস্থা হতশ্রী। সবচেয়ে কম রান দেওয়া মোস্তাফিজুর রহমানের ১০ ওভার থেকেও এসেছে ৬৬ রান। তাসকিনের ৯ ওভার থেকে এসেছে ৮৯। ইবাদত ৯ ওভারে দিয়েছেন ৮০। সাকিব তার ১০ ওভারে ৬৮ রানে পান ২ উইকেট।

ঢাকায় প্রথম দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ নিশ্চিত করা বাংলাদেশকে এই ম্যাচ জিততে হলে গড়তে হবে রেকর্ড।

Comments

The Daily Star  | English
agent banking role in remittance growth

Agent banking drives rural remittance boom

Bangladesh’s agent banking network is continuing to play a transformative role in the country’s financial system, especially through the channelling of remittances through agent outlets.

14h ago