‘ইমপ্যাক্ট খেলোয়াড়দের’ উপর আস্থা চট্টগ্রামের

গত বিপিএলে গড়পড়তা দল নিয়ে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়েছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। এবারও নামিদামি তারকাদের দিকে ছুটেনি তারা। তবে টি-টোয়েন্টির চাহিদা পূরণ করতে পারেন এমন বেশ কজন আছেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের স্কোয়াডে।
সরাসরি চুক্তিতে চট্টগ্রাম এবারও ধরে রাখে আফিফ হোসেনকে। বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের এই নিয়মিত মুখ চট্টগ্রামের দলটিরও বড় ভরসার নাম। গত আসরে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দেখা গিয়েছিলে আফিফের ঝলক। জাতীয় দলে উপরের দিকে ব্যাট করার সুযোগ মেলে না আফিফের। বিপিএলে খেলতে পারেন উপরের দিকেই, নিজেকে মেলেও ধরতে পারেন তিনি।
লঙ্কান পেসার বিশ্ব ফার্নেন্দো, অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার আশান প্রিয়ঞ্জন ও আয়ারল্যান্ডের কার্টিস ক্যাম্পেরকে সরাসরি চুক্তিতে দলভুক্ত করে তারা। এরমধ্যে ক্যাম্পের গত বিশ্বকাপে দেখিয়েছেন নিজের ঝলক। মিডিয়াম পেসের সঙ্গে তার ব্যাটিং হতে পারে দলের বড় পাওনার নাম।
ড্রাফট থেকে সুযোগ পেয়ে স্থানীয় বড় তারকাদের দিকে চোখ দেয়নি চট্টগ্রাম। তারা প্রথম যে দুজনকে দলে নেয় সেই মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী ও শুভাগত হোম চৌধুরী কেউই খেলেন না জাতীয় দলে।
এক সময় জাতীয় দলে খেলা শুভগত অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার হিসেবে ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত পারফর্মার। লোয়ার মিডল অর্ডারে ঝড় তুলতে পারেন এই ডানহাতি। বাংলাদেশের কন্ডিশনে তার অফ স্পিন ভীষণ কার্যকর। বল করতে পারেন পাওয়ার প্লেতে।
জাতীয় দলের কাছে যেতে না পারলেও মৃত্যুঞ্জয় এরমধ্যেই নিজেকে চিনিয়ে ফেলেছেন। গত বিপিএলেই দেখিয়েছেন। হ্যাটট্রিক করে দেখান ডেথ বোলিংয়ের সামর্থ্য। এই বাঁহাতি ব্যাট হাতেও বেশ সড়গড়। দলের বিপদে খেলতে পারেন কার্যকর ইনিংস।
ওপেনিংয়ের চিন্তায় চট্টগ্রাম দলে নিয়েছে নেদারল্যান্ডের ম্যাক্স ও'ডাউডকে। বিশ্বকাপে দারুণ খেলছেন তিনি। তবে অস্ট্রেলিয়ার উইকেট আর বাংলাদেশের উইকেটের চরিত্রে আছে বিশাল ফারাক। একটু থেমে আসা, ধীরলয়ের উইকেটে কেমন করেন তা দেখার বিষয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব নেওয়া উন্মুক্ত চাঁদকেও নিয়েছে চট্টগ্রাম। চাঁদ এশিয়ার কন্ডিশন বরং ভালো বুঝেন। তবে সেরা সময় পেরিয়ে আসা এই ক্রিকেটার কেমন করেন তা নিয়ে সংশয় থাকছে। এই জায়গায় দেশিদের মধ্যে বিকল্প হিসেবে আছেন তৌফিক খান তুষার। সিলেট বিভাগের হয়ে প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেটে আগ্রাসী ব্যাট করে আলোচনায় আসেন তিনি।
বাঁহাতি স্পিনে দলটির ভরসা তাইজুল ইসলাম। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এখনো ভিত শক্ত নয় তাইজুলের। তার সামনে চ্যালেঞ্জ থাকছে। ফরহাদ রেজা ও জিয়াউর রহমানের মতো ঘরোয়া ক্রিকেটের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডারকে রেখেছে তারা। আছেন কিপার ব্যাটার ইরফান শুক্কুর। নিজের দিনে তারা গড়ে দিতে পারেন তফাৎ।
পেস আক্রমণ খুব একটা ধারালো বলার সুযোগ নেই। মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গে থাকবেন আরেক বাঁহাতি পেসার মেহেদী হাসান রানা। আছেন ডানহাতি পেসার আবু জায়েদ রাহিও। সাম্প্রতিক সময়ে রাহি নেই ফর্মে। রানা উইকেট পেলেও প্রায়ই থাকেন খরুচে। বোলিংয়ের ঘাটতি দলটিকে কতটা ভোগায় দেখার বিষয়।
৬ জানুয়ারি বিপিএলের প্রথম ম্যাচে সিলেট স্টাইকার্সের বিপক্ষে নামবে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স
সরাসরি চুক্তিতে: আফিফ হোসেন, বিশ্ব ফার্নেন্দো (শ্রীলঙ্কা), আশান প্রিয়ঞ্জন (শ্রীলঙ্কা), কার্টিস ক্যাম্পের (আয়ারল্যান্ড), দারবিশ রাসুলি (আফগানিস্তান)।
ড্রাফট থেকে দেশি: মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী, শুভাগত হোম চৌধুরী, মেহেদী হাসান রানা, ইরফান শুক্কুর, মেহেদী মারুফ, জিয়াউর রহমান, তাইজুল ইসলাম, আবু জায়েদ রাহি, ফরহাদ রেজা, তৌফিক খান তুষার।
ড্রাফট থেকে বিদেশি: ম্যাক্স ও'ডাউড (নেদারল্যান্ড), উন্মুক্ত চাঁদ (ভারত/যুক্তরাষ্ট্র) ।
Comments