বিপিএলে সেরা ক্রিকেটারদের ফিরিয়ে আনাই এখন বিসিবির চ্যালেঞ্জ: মালান
অনেক প্রত্যাশা নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ। এবিডি ভিলিয়ার্স, ক্রিস গেইল, ডেভিড ওয়ার্নার, কাইরন পোলার্ড, আন্দ্রে রাসেলদের মতো টি-টোয়েন্টির মহাতারকারা অতীতে খেলে গেছেন এই লিগে। তবে নানা অপেশাদারিত্বের কারণে জন্ম নেওয়া বিতর্ক সঙ্গী করে পথ চলছে টুর্নামেন্টটি। নির্দিষ্ট ক্যালেন্ডার ঠিক করতে না পারায় বিপিএল হারিয়েছে আবেদন, বিশ্বের নামি খেলোয়াড়দেরও পাওয়া হয়ে গেছে দুস্কর। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ইংলিশ ক্রিকেটার দাবিদ মালানের মতে সেরা ক্রিকেটারদের ফিরিয়ে আনাই এখন বিসিবি ও দল মালিকদের চ্যালেঞ্জ।
২০১৭ সালে অভিষেক হওয়া মালান অল্প সময়েই নিজেকে পরিণত করেন ইংল্যান্ড টি-টোয়েন্টি দলের অপরিহার্য সদস্যে। জাতীয় দলের হয়ে এই ফরম্যাটে ৫৫ ম্যাচ খেলে ৩৮.৮৪ গড়ে ১৪ ফিফটি ও এক সেঞ্চুরিতে করেছেন ১৭৪৮ রান। আইপিএল ও বিগ ব্যাশের মতো লিগেও তাকে পেতে মুখিয়ে থাকেন ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকরা। তবে ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে এই বিপিএলে খেলেই নাম কুড়িয়েছিলেন এই বাঁহাতি। সেকথা ভুলে যাননি তারকা বনে যাওয়া এই ক্রিকেটার, ফলে এবারও কুমিল্লার হয়ে খেলতে চলে এসেছেন বাংলাদেশে।
রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে মালান বলেন, 'আমি মনে করি এখানে খেলার মান ভালো। বিপিএল সবসময়ই তরুণ ইংলিশ ক্রিকেটারদের এগিয়ে যাওয়ার জন্য আদর্শ টুর্নামেন্ট। এখন আরও অনেক টুর্নামেন্ট শুরু হচ্ছে। বিপিএল যদি মান ধরে রাখতে পারে, তাহলে সে ক্রিকেটাররা নিশ্চয়ই আবার বিপিএলে ফেরা শুরু করবে। আমি বিপিএলের শুরুতে আন্দ্রে রাসেল, শহীদ আফ্রিদি, সুনিল নারাইন, পোলার্ডের সঙ্গে একই সঙ্গে খেলেছি। ঠিক যেন আইপিএল দলের মতো। মান আগে ভালোই ছিল। এখন হয়তো বিসিবি ও দলের মালিকদের চ্যালেঞ্জ এটাই, বিশ্বের সেরা ক্রিকেটারদের ফিরিয়ে আনা।'
বাংলাদেশের ক্রিকেটকে 'যথেষ্ট মানসম্মত' আখ্যা দিয়ে তিনি যোগ করেন, 'সব দেশের ক্রিকেটেরই ভিন্নতা আছে। ভিন্ন ভিন্ন চ্যালেঞ্জ থাকে, ভিন্ন কন্ডিশন, পিচ, খেলার ধরন। আপনি চট্টগ্রামে খেললে পাবেন অন্যতম সেরা ব্যাটিং উইকেটে খেলার অভিজ্ঞতা। মিরপুরে আঁচ করতে পারবেন না আপনি কি পেতে যাচ্ছেন। আপনাকে শিখতে হবে কিভাবে মানিয়ে নিতে হয়। আপনি বিদেশি ক্রিকেটারদের সামর্থ্য দেখুন আর স্থানীয়দের দেখুন…সঙ্গে যদি কন্ডিশন যোগ করেন তাহলে বলতেই হয় এখানকার ক্রিকেট যথেষ্ট মানসম্মত। এখানে খেললে আপনি অনেক স্কিল শিখবেন। যা অন্য টুর্নামেন্টে পাবেন না।'
বাংলাদেশের সঙ্গে মালানের যোগসূত্র কেবল বিপিএলের মাধ্যমে নয়। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেও খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। দুটি টুর্নামেন্টে খেলেই উপকৃত হয়েছেন বলে জানান তিনি, 'বিপিএল সবসময়ই উপভোগ করি। আমার ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্যারিয়ারের শুরুর দিকের টুর্নামেন্ট এটি। এখানে খেলেই আমি অনেক কিছু শিখেছি। আমি ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেও খেলেছি। দুটি টুর্নামেন্টই আমার খেলায় উন্নতি আনতে সাহায্য করেছে। সে জন্যই বাংলাদেশে আসার কোনো সুযোগই আমি হাতছাড়া করি না।'
তবে ২০২৩ বিপিএলের শুরুটা ভালো করতে পারেননি মালান। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে আউট হয়ে গেছেন মাত্র ১৭ রান করে। তবে যতোটুকে সময় ক্রীজে ছিলেন বিনোদন দিয়েছেন দর্শকদের। মাত্র নয় বল স্থায়ী তার ইনিংসটিতে ছিল দুই চার ও এক ছক্কা। মাত্র এক ম্যাচ খেলায় উইকেট নিয়ে এখনই মন্তব্য করতে চাইলেন না তিনি। তবে ভালো ক্রিকেটারদের আকৃষ্ট করতে ধারাবাহিকভাবে ভালো উইকেটের প্রয়োজনীয়তা দেখছেন ৩৫ বছর বয়সী ধ্বংসাত্মক ব্যাটার।
উইকেট নিয়ে মালান বলেন, 'এটা আমার পক্ষে বলা কঠিন। এক ম্যাচ খেলেছি, সেটায় বাজেভাবে হেরেছি। খেলার মান মূলত নির্ভর করে উইকেটের ওপর। চট্টগ্রামে গেলে বিশ্বের সেরা ব্যাটিং উইকেট পাবেন। এখানে ভিন্ন। আমার মনে হয় উইকেট যদি ধারাবাহিকভাবে ভালো থাকে, তাহলে ভালো খেলা হবে। তাহলে হয়তো ভালো ক্রিকেটারদের আকৃষ্ট করা যাবে। আমার মনে হয় এটাই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের আসল ব্যাপার, ভালো উইকেটে খেলা।'
Comments