উসমানের সেঞ্চুরিতে বিফলে গেলো আজমের কীর্তি
সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ম্যাড়মেড়ে ম্যাচ একাই জমিয়ে তুলেছিলেন আজম খান। তার ব্যাটে চড়েই বড় পুঁজি পেয়েছিল খুলনা টাইগার্স। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে ছাপিয়ে নায়ক আরেক পাকিস্তানি উসমান খান। তুলে নিলেন দারুণ এক সেঞ্চুরি। ফিফটি করে দারুণ সঙ্গ দিলেন ম্যাক্স ও'ডাউডও। তাতেই চলতি বিপিএলের প্রথম জয়ের দেখা পেল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।
সোমবার বিপিএলের ষষ্ঠ ম্যাচে মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খুলনা টাইগার্সকে নয় উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। আগে ব্যাট করে আজমের সেঞ্চুরিতে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ১৭৮ রান করতে সক্ষম হয় খুলনা। জবাবে চার বল ও নয় উইকেট হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় চট্টগ্রাম।
মাত্র ৫৮ বলে দশ চার ও পাঁচ ছক্কায় ১০৩ রানের ইনিংস খেলে রান তাড়ার নেতৃত্ব দেন উসমান। ও'ডাউডের সঙ্গে তার উদ্বোধনী জুটিতেই আসে ১৪১ রান। ৫০ বলে পাঁচ চার ও তিন ছক্কায় ৫৮ রান করেন ডাচ ওপেনার।
এর আগে খুলনার ইনিংসে ৫৭ বলে সেঞ্চুরি হাঁকান আজম। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৫৮ বলে নয় চার ও আট ছক্কায় ১০৯ রান করে। এই জয়ে দুই পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের চতুর্থ অবস্থানে উঠে এসেছে চট্টগ্রাম। এদিকে দুই ম্যাচের দুটিতেই হেরে এখনও পয়েন্টের খাতা না খুলতে পারা খুলনার অবস্থান পাঁচে।
বড় লক্ষ্য তাড়ায় শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন উসমান। অপর প্রান্তে ও'ডাউড খেলতে থাকেন কিছুটা দেখেশুনে। তাদের কল্যাণে পাওয়ার প্লেতেই পঞ্চাশ ছোঁয় চট্টগ্রামের দলীয় সংগ্রহ। এরপর আরও সাবলীল ব্যাটিং করতে থাকেন দুই ওপেনার। ১২.২ ওভারে দলীয় শতরান পূর্ণ করে চট্টগ্রাম।
১৩তম ওভারের শেষ বলে হাবিবুর রহমান সোহানকে চার মেরে ব্যক্তিগত অর্ধশতকের দেখা পেয়ে যান উসমান। পরের ওভারে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনকে সীমানাছাড়া করে ফিফটি পূর্ণ করেন ও'ডাউডও। কিন্তু ১৫তম ওভারে নাহিদুল ইসলামকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লং অনে নাসুম আহমেদের হাতে ধরা পড়েন ডাচ তারকা।
তবে ততক্ষণে জয়ের সুবাতাস পেতে শুরু করেছে চট্টগ্রাম। ৩০ বলে দরকার ছিল মাত্র ৩৮ রান। সেই পথটা আফিফ হোসেন ধ্রুবকে সঙ্গে নিয়ে নিরাপদেই পাড়ি দেন উসমান। ১৯তম ওভারের শেষ বলে সাইফুদ্দিনকে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টের ওপর দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য চট্টগ্রামের প্রয়োজন ছিল মাত্র ছয় রান। তৃতীয় ও চতুর্থ বলে যথাক্রমে ওয়াইড ও নো বল করে প্রতিপক্ষের কাজটা আরও সহজ করে দেন পল ভ্যান মিকারেন। উসমানের সঙ্গে ১০ বলে ৫ রান করে অপরাজিত থাকেন আফিফ।
এর আগে ব্যাট হাতে শুরুটা ভালো হয়নি খুলনার। তামিম ইকবাল একপ্রান্ত আগলে টিকে থাকলেও স্কোরবোর্ডে ১২ রান যোগ করতে না করতেই ফিরে যান শারজিল খান ও হাবিবুর। এরপর বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়কের সঙ্গে ৯২ রানের জুটি গড়ে বড় পুঁজির সম্ভাবনা জিইয়ে রাখেন আজম।
শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকেন সাবেক পাক উইকেটরক্ষক মঈন খানের পুত্র আজম। মাত্র ৩৩ বলে পূর্ণ করেন ফিফটি। কিন্তু অপর প্রান্তে দুইবার জীবন পেয়েও তামিম ছিলেন খোলসে বন্দী। শেষ পর্যন্ত ১৫তম ওভারে লঙ্কান লেগ স্পিনার ভিজয়কান্ত ভিয়স্কান্তের বলে বোল্ড হয়ে ফেরার আগে ৩৭ বল খেলে করেন মাত্র ৪০ রান।
পরের ওভারে মাত্র এক রান করে ফিরে যান অধিনায়ক ইয়াসির আলী রাব্বিও। ছক্কা হাঁকিয়ে সাব্বির রহমান দারুণ কিছুর ইঙ্গিত দিলেও ১০ রানে আউট হয়ে হতাশ করেন ভক্তদের। জাতীয় দলের সাবেক এই হার্ড হিটার ব্যাটারকে ফেরান আবু জায়েদ রাহী।
এদিকে অপর প্রান্তে তখন চলছে আজম ঝড়। শেষ ওভারে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরিকে ছক্কা হাঁকিয়ে তুলে নেন সেঞ্চুরি। সেই ওভারে একাই ১৭ রান নেন এই উইকেটরক্ষক। তার ঝড়ো ব্যাটিংয়ের কল্যাণে শেষ পাচ ওভারে ৬১ রান পায় খুলনা।
চট্টগ্রাম বোলারদের মধ্যে চার ওভারে ২৯ রান দিয়ে দুটি উইকেট শিকার করেন রাহী। একটি করে উইকেট ঝুলিতে পোরেন অধিনায়ক শুভাগত হোম, জিয়াউর রহমান ও ভিজয়কান্ত। তবে সবচেয়ে নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন শুভাগত, তিন ওভার হাত ঘুরিয়ে দিয়েছেন মাত্র ১৫ রান।
Comments