মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে জিতল বরিশাল
প্রথমে বল হাতে দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রয়োজনীয় সময়ে এনে দিলেন ব্রেকথ্রুও। পরে ব্যাট হাতে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে গড়ে দেন জয়ের ভিত। এরপর বাকি কাজ সারেন সতীর্থরা। ফলে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে দারুণ জয় তুলে নিয়েছে ফরচুন বরিশাল।
মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে রংপুর রাইডার্সকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে ফরচুন বরিশাল। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৫৮ রান তোলে রংপুর। জবাবে ৪ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করে সাকিব আল হাসানের দল।
লক্ষ্য তাড়ায় মাঠে নামার পর শুরু হয় নাটক। বাউন্ডারি লাইনে দাঁড়িয়ে কিছু একটা বলছিলেন বরিশাল অধিনায়ক সাকিব। এক পর্যায়ে ঢুকে যান মাঠে। মাঠের আম্পায়ারদের সঙ্গে এক দফা তর্কের পর মাঠ ছাড়লে শুরু হয় খেলা। তবে শুরুটা ভালো হয়নি তাদের। চতুর্থ বলে ওপেনার চতুরঙ্গ ডি সিলভাকে হারায় তারা। মিডঅফে বেনি হাওয়েলের হাতে ক্যাচ তুলে ফিরে যান তিনি।
এরপর চতুর্থ ওভারে আরেক দফা নাটক। সিকান্দার রাজার বলে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েন এনামুল হক বিজয়। শুরুতে আউট দেননি মাঠের আম্পায়াররা। রিভিউ নেন বোলার। তবে প্যাডে বল লাগার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যাট দেখাতে থাকেন বিজয়। রিপ্লেতে পরিষ্কার কিছু না বোঝা গেলেও বিস্ময়করভাবে তৃতীয় আম্পায়ার দেন আউট। তাতে খেপে যান ব্যাটার বিজয়। আরেক দফা তর্ক শেষে মাঠ ছাড়েন এ ওপেনার।
এরপর দলের হাল ধরেন মিরাজ ও ইব্রাহীম জাদরান। তৃতীয় উইকেটে ৮৪ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটার। মূলত এ জুটিতেই জয়ের ভিত পেয়ে যায় দলটি। ইব্রাহীম কিছুটা দেখে ব্যাট করলেও উইকেটে নেমে শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকেন মিরাজ। ২৯ বলে ৫টি চারের সাহায্যে ৪৩ রানের ইনিংস খেলে রবিউল হকের বলে আউট হন এ অলরাউন্ডার।
ইব্রাহীম থামেন হাফসেঞ্চুরি করে। এরপর করিম জানাতকে নিয়ে বাকি কাজ সারেন ইফতেখার আহমেদ। অবিচ্ছিন্ন ৩৮ রানের জুটি গড়েই মাঠ ছাড়েন তারা। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫২ রানের ইনিংস খেলেন ইব্রাহীম। ৪১ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ইফতেখার অপরাজিত ২৫ ও করিম অপরাজিত ২১ রান করেন। রংপুরের পক্ষে ২টি উইকেট নেন রাজা।
এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই উইকেট হারায় রংপুর। সাকিবের বলে উইকেটরক্ষক বিজয়ের হাতে ক্যাচ তুলে সাজঘরে ফেরেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। তিন নম্বরে নেমে খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি শেখ মেহেদী হাসানও। ইবাদত হোসেনের অফস্টাম্পের বাইরে রাখা বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লেগে বোল্ড হয়ে যান তিনি। হতাশ করেন সিকান্দার রাজাও।
এরপর পাকিস্তানি ক্রিকেটার শোয়েব মালিকের সঙ্গে দলের হাল ধরেন রনি তালুকদার। চতুর্থ উইকেটে ৩৫ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটার। শেষ ম্যাচের মতো এদিনও ঝড়ো ব্যাটিংয়ের ধারা ধরে রাখেন রনি। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে বিপিএলে দ্রুততম ফিফটি তুলে নেওয়া এ ব্যাটার এদিন ফিরেছেন ব্যক্তিগত ৪০ রানে। ২৮ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংস।
এরপর এক প্রান্ত আগলে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন মালিক। অষ্টম উইকেটে সঙ্গ পান রবিউল হকের। গড়েন ৪১ রানের জুটি। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৪ রানের ইনিংস খেলেন মালিক। ৩৬ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। শেষদিকে রবিউল খেলেন কার্যকরী ১৫ রানের ইনিংস। বরিশালের পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন চতুরঙ্গ ও মিরাজ।
Comments