রবিউলের তোপের পর মালিকের ব্যাটে জিতল রংপুর

রবিউল হকের বিধ্বংসী বোলিংয়ে লক্ষ্যটা ছিল হাতের নাগালেই। কিন্তু রান তাড়ায় শুরুর দিকের ব্যাটাররা কেউই পারলেন না জ্বলে উঠতে। তাতে ক্রমেই বাড়তে থাকে চাপ। তবে এক প্রান্তে দারুণ দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন অভিজ্ঞ শোয়েব মালিক। লক্ষ্যের প্রায় কাছে গিয়ে এ পাকিস্তানি আউট হলেও শামিম পাটোয়ারির দারুণ ফিনিশিংয়ে বেগ পেতে হয়নি জয় তুলে নিতে। খুলনা টাইগার্সকে হারের বৃত্তেই রাখে রংপুর রাইডার্স। 

শুক্রবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে খুলনা টাইগার্সকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে রংপুর রাইডার্স। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১৮.৪ ওভারে ১৩০ রানে গুটিয়ে যায় খুলনা। জবাবে ৩ বল বাকি থাকতে জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করে নুরুল হাসান সোহানের দল।

ছোট লক্ষ্যে এদিন দেখে শুনেই শুরু করতে চেয়েছিল রংপুর। রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টায় ছিলেন না কোনো ব্যাটারই। আগের দুই ম্যাচে আগ্রাসী ব্যাট চালানো রনি তালুকদারও ছিলেন খোলসে। ৭ বল খেলে ১ রান তোলা এ ব্যাটার বোল্ড হয়ে যান সাইফউদ্দিনের নিচু হওয়া বলে।

এরপর আরেক ওপেনার সাইম আইয়ুবের সঙ্গে দলের হাল ধরেন শেখ মেহেদী হাসান। ২১ রানের জুটি গড়ে ওয়াহাব রিয়াজের লেগ স্টাম্পের বেশ বাইরের বল খেলতে গিয়ে ফাইন লেগে নাসুম আহমেদের হাতে সহজ ক্যাচ তুলে দেন এ অলরাউন্ডার। সাইমকে নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন ওয়াহাব। ফলে চাপ থেকে উতরে উঠতে পারেনি দলটি।

চারে নেমে মোহাম্মদ নাঈম শেখ অবশ্য থিতু হয়েছিলেন। কিন্তু ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। ২২ বলে ৩টি চারে ২১ রান করার পর নাসুমের শিকার হন তিনি। স্লগ সুইপ করতে গিয়ে লংঅন সীমানায় ক্যাচ তুলে দেন ওয়াহাবের হাতে।

তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন মালিক। অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানকে নিয়ে গড়েন ৩২ রানের জুটি। এরপর সোহান ফিরে গেলে শামিমকে নিয়ে ফের দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন মালিক। ৩৩ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটার। তাতেই জয়ের ভিত পেয়ে যায় দলটি।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৪ রানের ইনিংস খেলেন মালিক। ৩৬ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ১০ বলে ১৬ রান করে অপরাজিত থাকেন শামিম। খুলনার পক্ষে ২টী করে উইকেট পান সাইফউদ্দিন, ওয়াহাব ও নাসুম।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই চাপে পড়ে খুলনা। দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ খেলোয়াড় তামিম ইকবাল আউট হন একেবারেই আনাড়ির মতো। বোলার আজমতুল্লাহকে যেন ক্যাচিং অনুশীলন করালেন। আরেক ওপেনার হাবিবুর রহমান ১১ বলে স্কোরিং শট খেলেন একটি। তাও ব্যাটের কানায় লাগলে পেয়ে যান বাউন্ডারি। তিনে নেমে হতাশ করেন পাক ব্যাটার শারজিল খানও। ফলে ১৮ রানেই ৩টি উইকেট হারিয়ে বড় চাপে পড়ে খুলনা।

এরপর অধিনায়ক ইয়াসির আলীকে নিয়ে সে চাপ থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা চালান আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান আজম খান। ৫৮ রানের জুটি গড়েছিলেন এ দুই ব্যাটার। তবে রানের গতি সে অর্থে বাড়াতে পারেননি। ইয়াসিরকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন রবিউল। আর জুটি ভেঙে আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠেন এ পেসার। তোপ দাগিয়ে তুলে নেন আরও তিনটি উইকেট।

রবিউলের আগ্রাসনে আর প্রতিরোধ গড়তে পারেননি খুলনার ব্যাটাররা। নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারাতে থাকে দলটি। মাঝে অষ্টম উইকেটে নাহিদুল ইসলামকে নিয়ে ৩২ রানের জুটি গড়ে চেষ্টা চালিয়েছিলেন সাইফউদ্দিন। তারপরও লড়াই করার মতো যথেষ্ট পুঁজি সংগ্রহ করতে পারেনি তারা।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৪ রানের ইনিংস খেলেন আজম। ২৩ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় এ ইনিংস খেলেন তিনি। এছাড়া ইয়াসির ২৫ ও সাইফউদ্দিন ২২ রান করেন। রংপুরের পক্ষে চার ওভার বল করে ২২ রানের খরচায় ৪টি উইকেট নেন রবিউল। এছাড়া আজমুতুল্লাহ, রকিবুল হাসান ও হাসান মাহমুদ পান ২টি করে উইকেট।  

Comments

The Daily Star  | English

Fakhrul alleges conspiracy to delay polls, urges BNP to resist

"Efforts are being made to create division and pit different state institutions against each other"

39m ago