নাজিবউল্লাহর ঝড়ে বাংলাদেশকে হারিয়ে সুপার ফোরে আফগানিস্তান

ছবি: টুইটার

সাদামাটা লক্ষ্য তাড়ায় শেষ ৬ ওভারে আফগানিস্তানের দরকার ছিল ৬৩ রান। তখন ১৪ ওভারে তাদের স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ৬৫ রান। অর্থাৎ প্রায় একই পরিমাণ রান দলটিকে করতে হতো আগের অর্ধেকেরও কম সংখ্যক ওভারে। সেই চাপের মুখে জ্বলে উঠে ছয়ের ফুলঝুরি ছোটালেন নাজিবউল্লাহ জাদরান। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিলেন ইব্রাহিম জাদরান। তাতে আঁটসাঁট বোলিংয়ের ধারা বজায় রাখতে পারল না বাংলাদেশ। তাদেরকে হারিয়ে প্রথম দল হিসেবে এবারের এশিয়া কাপের সুপার ফোরে উঠল আফগানরা।

মঙ্গলবার শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে 'বি' গ্রুপের ম্যাচে ৭ উইকেটে জিতেছে মোহাম্মদ নবির দল। ৩ উইকেটে ১৩১ রান তুলে ৯ বল হাতে রেখে জয়ের সমীকরণ মিলিয়ে ফেলে তারা। পাঁচে নেমে নাজিবউল্লাহ ১৭ বলে ৪৩ রানে অপরাজিত থাকেন। তার ব্যাট থেকে আসে ১ চার ও ৬ ছক্কা। বল সীমানার বাইরে পাঠিয়েই খেলা শেষ করেন তিনি। তিনে নামা ইব্রাহিম করেন ৪১ বলে অপরাজিত ৪২ রান। চতুর্থ উইকেটে মাত্র ৩৩ বলে ৬৯ রানের জুটি গড়েন তারা।

পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেট হারিয়ে কেবল ২৯ রান তুলতে পারে আফগানরা। সেসময় মূলত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের নৈপুণ্যে রানের চাকা বেঁধে রাখে টাইগাররা। ১০ ওভার শেষে আফগানিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২ উইকেটে ৪৮ রান। তাতে পরের ১০ ওভারে ৮০ রান প্রয়োজন পড়ে তাদের। কিন্তু এই সমীকরণকে নিজেদের সুবিধায় কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ।

ছবি: এএফপি

ডানহাতি পেসার তাসকিন আহমেদের করা ১৫তম ওভারে আসে ১১ রান। অফ স্পিনার শেখ মেহেদী পরের ওভারে দেন ৯ রান। এরপর বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমান এক ওভারেই ১৭ রান খরচ করেন। তখনই লড়াই থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। তারপর মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে পিটিয়ে নাজিবউল্লাহ ২২ রান তুললে আফাগানদের জয় হয়ে দাঁড়ায় সময়ের ব্যাপার।

ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই উইকেট পেতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু বাঁহাতি স্পিনার সাকিবের বলে লং-অনে রহমানউল্লাহ গুরবাজের ক্যাচ ফেলে দেন মাহমুদউল্লাহ। তখন ৬ রানে ছিলেন তিনি। তবে সেজন্য বড় মূল্য দিতে হয়নি টাইগারদের। বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে সাকিবের বলেই স্টাম্পড হন গুরবাজ। ১৮ বলে তার রান ১১।

আরেক ওপেনার হজরতউল্লাহ জাজাই অনেক সময় ক্রিজে থাকলেও আক্রমণাত্মক হতে পারেননি। অফ স্পিনার মোসাদ্দেকের বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন তিনি। রিভিউ নিলেও বদল আসেনি সিদ্ধান্তে। ২৬ বলে ২৩ রান আসে জাজাইয়ের ব্যাট থেকে। এতে ভাঙে ৩১ বলে ৩০ রানের জুটি।

আফগান অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি বিদায় নেন দ্রুত। তাকে এলবিডব্লিউ করেন সাইফউদ্দিন। তিনি করেন ৮ বলে ৯ রান। ১৩তম ওভারে ৬২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া আফগানরা এরপর দুই জাদরানের দারুণ ব্যাটিং প্রদর্শনীতে পৌঁছায় লক্ষ্যে।

শততম টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা সাকিব ব্যাট হাতে ভালো না করলেও বল হাতে ছিলেন অসাধারণ। ৪ ওভার পূর্ণ করে তিনি খরচ করেন মাত্র ১৩ রান। বাকি সতীর্থরা তার মতো অবদান রাখতে পারেননি। বিশেষ করে, পেসাররা রীতিমতো হতাশ করেন। মোস্তাফিজ ৩ ওভারে দেন ৩০ রান। তাসকিন ২২ রান দেন সমান ওভারে। সাইফউদ্দিনের ২ ওভারেই আফগানরা নেয় ২৭ রান।

ছবি: টুইটার

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে বেশ মন্থর উইকেটে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১২৭ রান তোলে বাংলাদেশ। বল হাতে বরাবরের মতো ভেলকি দেখান আফগান স্পিনাররা। ৪ ওভারের কোটা পূরণ করে অফ স্পিনার মুজিব উর রহমান ৩ উইকেট নেন ১৬ রানে। সমানসংখ্যক উইকেট পেতে তারকা লেগ স্পিনার রশিদ খানের খরচা ২২ রান।

প্রথম ৬ ওভারে ৩ উইকেট খুইয়ে স্কোরবোর্ডে মাত্র ২৮ রান জমা করতে পারে বাংলাদেশ। দুই ওপেনার নাঈম শেখ ও এনামুল হক বিজয়ের উদ্বোধনী জুটি কার্যকর হয়নি। দুই অভিজ্ঞ সাকিব আর মুশফিকুর রহিমও টিকতে পারেননি। তারা চারজনই ফেরেন এক অঙ্কের রানে। আফিফ হোসেন ও মাহমুদউল্লাহ পারেননি নিজেদের মেলে ধরতে।

মোসাদ্দেক খেলেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস। সাত নম্বরে ক্রিজে গিয়ে ৩১ বলে ৪৮ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। তার ব্যাট থেকে আসে ৪ চার ও ১ ছক্কা। অন্য ব্যাটাররা যখন খাবি খাচ্ছিলেন, তখন মোসাদ্দেক করেন টি-টোয়েন্টিসুলভ ব্যাটিং। ফলে শেষ ৫ ওভারে আসে ৪০ রান। তার কল্যাণে বাংলাদেশের পুঁজি নেয় ভদ্রস্থ রূপ।

Comments

The Daily Star  | English

20 non-banks on BB red list

As of December last year, they disbursed Tk 25,808 crore in loans against collateral worth Tk 6,899 crore, according to the BB report

9h ago