'হেক্সা মিশনে' ব্যর্থ সিলেট, লিটনের ঝড়ে থামল জয়রথ
মিশন হেক্সার কথা শুনলেই সবার আগে মনে আসে ব্রাজিলের নাম। ফুটবল বিশ্বকাপের এই আলোচিত শব্দটি সেই ২০০৬ সাল থেকে শুনে আসছেন ভক্ত-সমর্থকরা। কিন্তু এখন পর্যন্ত সফলতার মুখ দেখেনি দলটি। তেমনি তাদের মতো বিপিএলে টানা ছয়টি জয়ের সামনে দাঁড়িয়ে অন্যরকম হেক্সার সামনে ছিল সিলেট স্ট্রাইকার্স। তবে ব্যর্থ হয়েছে তারাও। লিটন দাসের আরেকটি ছন্দময় দিনে পুড়েছে মাশরাফি মর্তুজার দল।
মঙ্গলবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টরিয়ান্স। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৩৩ রান করে সিলেট। জবাবে ৬ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করে ইমরুল কায়েসের দল। দলকে জেতাতে ৪২ বলে ৭০ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলেছেন লিটন। কুমিল্লার দ্বিতীয় জয়েও তিনিই হয়েছেন আবার ম্যাচ সেরা।
মাশরাফির নেতৃত্বে এবারের আসরে দারুণ বদলে গিয়েছে সিলেট। ঢাকা পর্বে টানা চারটি দাপুটে জয় পায় দলটি। তবে আগের দিন সাগরিকায় ঢাকা ডমিনেটর্সের বিপক্ষে জিতলেও সংগ্রাম করতে হয় তাদের। সে ধারায় এদিন হেরেই গেল দলটি।
সিলেটের সংগ্রাম শুরু হয় ম্যাচের শুরু থেকেই। টস হেরে শুরু। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে ৫৩ রান তুলতেই সাজঘরে ৭ ব্যাটার। মোহাম্মদ হারিসের বিদায়ে শুরু। এরপর আকবর আলী, জাকির হাসান, শরিফুল্লাহ, মাশরাফিও হন ব্যর্থ। নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম থিতু হতে পেরেছিলেন। কিন্তু ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। যথাক্রমে ব্যক্তিগত ১৩ ও ১৬ রান তুলে বিদায় নিয়েছেন।
তখন মনে হয়েছিল একশর অনেক আগেই গুটিয়ে যেতে পারে দলটি। বিপিএলে সর্বনিম্ন রানের রেকর্ডও খুঁজে দেখা হচ্ছিল। তবে অষ্টম উইকেটে দলের দুই বিদেশি ইমাদ ওয়াসিম ও থিসারা পেরেরার জুটিতে সম্মান রাখতে পারে দলটি। স্কোরবোর্ডে ৮০ রান যোগ করে শেষ পর্যন্ত অবিচ্ছিন্ন থাকেন এ দুই ব্যাটার। লড়াইয়ের পুঁজি পায় তারা।
লক্ষ্য তাড়ায় যথারীতি আগ্রাসী লিটন দাস। আর দেখে শুনে খেলছিলেন পাকিস্তানি উইকেটরক্ষক-ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান। ৫৭ রানের জুটিও গড়েন তারা। রিজওয়ানের রানআউটে ভাঙে এ জুটি। মিডউইকেটে ঠেলে দুই রান নিতে চেয়েছিলেন রিজওয়ান। তবে ওই জায়গায় ফেলে দুই রান ছিল না। আকবরের থ্রোতে তড়িৎ গতিতে বল ধরে উইকেট ভাঙেন মুশফিক।
এরপর অধিনায়ক ইমরুল কায়েসকে নিয়ে দলের হাল ধরেন লিটন। ২৬ রানের জুটি গড়েছিলেন তারা। এই জুটি ভাঙেন শরিফুল্লাহ। তাকে ক্যাচিং অনুশীলন করিয়ে মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক। তবে এক ওভার পর ফিরে এসে লড়াইয়ের শেষ আশা শেষ করে দেন শরিফুল্লাহই। সে ওভারে দেন চারটি বাউন্ডার। লিটন তাকে মারেন তিনটি ছক্কা। ওভারে আসে ২৪ রান। মূলত ম্যাচটা তখনই হেলে পড়ে কুমিল্লার দিকে।
তবে এরপর বল হাতে নিয়ে দলকে ফের লড়াইয়ে ফেরান মাশরাফি। লিটনকে তুলে নেন পরের ওভারেই। যদিও মিডঅফ সহজ ক্যাচ তুলে দেওয়ার আগেই কাজের কাজটা করে ফেলেছিলেন লিটন। খেলেন ৭০ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস। ৪১ বলে ৭টি চার ও ৪টি ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংস।
এর পরের ওভারে ফিরে খুশদিল শাহকেও আউট করেন মাশরাফি। ঠিক পরের ওভারে রানআউট জাকের আলী। জাকির হাসানের সরাসরি থ্রোতে ঠিক পরের বলে রানআউটের ফাঁদে পড়েন এ ব্যাটার। এরপর বাকি কাজ মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে নিয়ে শেষ করেন জনসন চার্লস। ১৮ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি।
সিলেটের পক্ষে ৪ ওভার বল করে ৯ রানের খরচায় ২টি উইকেট নিয়ে দিনের সেরা বোলার মাশরাফি।
Comments