সাকিবের বিসর্জনে সেঞ্চুরি ইফতেখারের
ওভার বাকি দুইটি। দুই ব্যাটারই তখন ৭০ রানে। উল্টো দুই রান বেশি সাকিব আল হাসানের। অবিশ্বাস্য কিছু না হলে সে অবস্থায় সেঞ্চুরির কাছে যাওয়ার সুযোগ ছিল একজন ব্যাটারেরই। হয়েছেও তাই। সে অবস্থায় নিজে সেঞ্চুরির পিছে না ছুটে ইফতেখার আহমেদকে সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যেতে বলেন সাকিব। অথচ টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে সেঞ্চুরির দেখা পাননি নিজেও।
চাইলে নিজের সেঞ্চুরি পূরণ করতেই পারতেন সাকিব। অপরাজিত ৮৯ রান করে থেমেছেন তিনি। হয়তো আর কয়েকটা বল পেলে অধরা সেই তিন অঙ্কের স্বপ্নের স্কোরের দেখে পেতে পারতেন এ অলরাউন্ডার। কিন্তু নিজে না পূরণ করে সতীর্থকে সে সুযোগটি করে দেন অধিনায়ক।
ম্যাচ শেষে তাই অধিনায়কের উচ্ছ্বসিত প্রশংসাই করেন ইফতেখার, 'সাকিব আমাকে সহায়তা করেছে। আমি তাকে বলেছি আমি সেঞ্চুরির চেষ্টা করব। সে বলেছে তুমি তোমার শক্তি অনুযায়ী খেল। আমার যেখানে সিঙ্গেল দেওয়া দরকার আমি দিব। আলহামদুল্লাহ সেঞ্চুরি হয়েছে। এটা আমার স্বপ্ন ছিল।'
ঠিক কখন সাকিব তাকে সেঞ্চুরির পেছনে ছুটতে বলেছেন তা জানতে চাইলে এ পাকিস্তানি বলেন, '৭০-এ থাকতেই বলেছে। তখন আমি সাকিব ভাইকে বলেছি সেঞ্চুরি করতে চাই, স্ট্রাইক করলে ভালো হয় বেশি। তখন উনি বলেছে, আমি সমর্থন দিচ্ছি, তুমি সেঞ্চুরির পেছনে যাও।'
শেষ পর্যন্ত ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে ১০০ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন ইফতেখার। মাত্র ৪৫ বলে ৬টি চার ও ৯টি ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংস। অথচ প্রথম ১৩ বলে মাত্র ৯ রান করেছিলেন ইফতেখার। এরপর শুরু হয় তার তাণ্ডব।
১৯তম ওভারের প্রথম বলে বাউন্ডারি মারলেও দ্বিতীয় বলেই সিঙ্গেল নিয়ে ইফতেখারকে স্ট্রাইক দেন ইফতেখার। এ পাকিস্তানি তখন টানা তিন ছক্কা হাঁকিয়ে ষষ্ঠ বলে নেন সিঙ্গেল। পরের ওভারে একটি চার ও ছক্কা হাঁকিয়ে ৯৯ রানে পৌঁছানো ইফতেখার সেঞ্চুরি পূরণ করেন সিঙ্গেল নিয়ে।
অধিনায়ক সাকিবেরও প্রশংসা করেন ইফতেখার, 'সাকিব অসাধারণ অধিনায়ক। আমি অনেকের সঙ্গেই খেলেছি...তার অধীনেই সর্বশেষ টি-টেনেও খেললাম। সে ক্রিকেটারদের যেভাবে অনুপ্রাণিত করে, আমার মনে হয় খেলোয়াড়দের এমন সমর্থন করা অধিনায়ক খুব কমই আছে। আমাদের সঙ্গে জুনিয়র ক্রিকেটার আছে, ভুল তো হয়ই, ভুল না হলে তো সে মানুষ না। তাদের এত এত সমর্থন করে, তাদের বলে তোমাদের ইচ্ছে মতো করো, বলো তোমরা কোথায় ফিল্ডিং করতে চায়।'
এদিন সাগরিকায় রাইডার্সকে ৬৭ রানের ব্যবধানে হারিয়েছে পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে ফরচুন বরিশাল। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ২৩৮ রান করে বরিশাল। যার সবটাই সম্ভব হয়েছে সাকিব ও ইফতেখারের তাণ্ডবে। এ দুই ব্যাটার গড়েন নতুন এক বিশ্বরেকর্ড। পঞ্চম উইকেটে মাত্র ৮৯ বলে ১৯২ রানের জুটি গড়েন তারা।
Comments