শান্তর ফিফটির পর শেষ বলের রোমাঞ্চে জিতল সিলেট
খেলা সুপার ওভারে নিতে শেষ দুই বলে দরকার ছিল দুই ছয়ের, রেজাউর রহমান রাজার বলে এক ছয় মারার পর শেষ বলে বাউন্ডারি আনতে পারলেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। দুই টেবিল টপারের টানটান উত্তেজনার ম্যাচ শেষ পর্যন্ত জিতে গেল সিলেট স্টাইকার্স।
মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিপিএলে টেবিলের শীর্ষ দুই দলের লড়াই হলো জম্পেশ। শেষ বলের রোমাঞ্চে ফরচুন বরিশাল ম্যাচ হেরেছে ২ রানে।
আগে ব্যাট করে শান্তর ৬৬ বলে ৮৯ রানের ইনিংসে ১৭৩ রানের পুঁজি পায় সিলেট। শেষ বল পর্যন্ত উত্তাপ ছড়িয়ে বরিশাল থামে ১৭১ রানে।
খেলার শুরুতেই দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় সিলেট স্টাইকার্স। প্রবল চাপে দলকে শেষ পর্যন্ত টেনে নেন নাজমুল হোসেন শান্ত, দলকে পাইয়ে দেন চ্যালেঞ্জিং পুঁজি। রান তাড়ায় সাইফ হাসান, সাকিব আল হাসানদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের পরও ভুল সময়ে উইকেট হারিয়ে শেষ ওভারে গিয়ে আর সমীকরণ মেলাতে পারেনি ফরচুন বরিশাল।
টুর্নামেন্টে প্রথম ম্যাচে সিলেটের কাছে হেরে শুরু করেছিল বরিশাল। এরপর টানা পাঁচ ম্যাচ জিতে ফের সিলেটের কাছে এসেই ধাক্কা খেল তারা।
রান তাড়ায় বিধ্বংসী শুরু আনেন সাইফ। একের এক পর ছক্কায় উত্তাল করে তুলেন পরিস্থিতি। মোহাম্মদ আমিরকে দুটি, মাশরাফিকে মারেন দুই ছয়। সাইফের খুনে ব্যাটিং থামে পঞ্চম ওভারে। ততক্ষণে স্কোরবোর্ডে ৪১ চলে আসে বরিশালের। মাত্র ১৯ বলে ৩১ করে তানজিম হাসান সাকিবের বলে ফেরেন সাইফ।
তিনে নেমে এনামুল হক বিজয় টাইমিং পাচ্ছিলেন না। ৮ বলে ৩ করা বিজয়কেও ফেরান তানজিম। ৪৬ রানে দুই উইকেট পড়ার পর ইব্রাহিম জাদরানের সঙ্গে দারুণ জুটি গড়েন ছন্দে থাকা সাকিব। বরিশাল অধিনায়ক মাঝের ওভারে রানের চাকা করে দেন উড়ন্ত।
চাপ সরিয়ে খেলার গ্রিপ নিয়ে আসেন নিজেদের দিকে। ইব্রাহিম যদিও খেলছিলেন মন্থর। তাকে আড়াল রেখে বড় শটে চাপ সরিয়ে ছুটছিলেন সাকিব। ১৪তম ওভারে এই দুজনকেই ফিরিয়ে সিলেটকে খেলায় নিয়ে আসেন রাজা।
রাজার স্কিড করা বল পড়তে না পেরে বোল্ড হয়ে যান জাদরান। ৩৭ বল খেলে ৪১ রান আনেন তিনি। তৃতীয় উইকেটে সাকিব-জাদরানের ৩৯ বলে ৬১ রানের জুটি ভাঙতে নড়ে উঠে বরিশাল।
স্ট্রাইক পেয়ে সাকিব রাজা অফ স্টাম্পমুখী বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে খোয়ান স্টাম্প। ১৮ বলে ২৯ করে থামেন বরিশাল কাপ্তান।
এরপর দ্রুত খেলার ছবি বদলে যায়, সমীকরণ হয়ে উঠে কঠিন। মাশরাফির ১৬তম ওভারে তিন ছয় মেরে বরিশালকে আবার খেলায় আনেন করিম জানাত। মোহাম্মদ আমিরের পরের ওভারে আবার রান নিতে পারেননি। উল্টো শেষ বলে আউট হয়ে যান তিনি।
তানজিম সাকিবের ১৮তম ওভারে দুই ছয়, এক চারে আসে ১৮ রান। শেষ দুই ওভারে ২৩ রানের সমীকরণে আমির নিজের শেষ ওভারে দেন স্রেফ ৮ রান। ইনিংসের শেষ ওভারে ১৫ রানের সমীকরণে ১২ রান নিতে পারে বরিশাল।
সিলেটের শুরুটা হয় চরম বাজে। ১৫ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। এরপর টম মুরসের সঙ্গে জুটি বেধে খেলা বদলাতে থাকেন শান্ত। অনেকটা সময় নিয়ে থিতু হন তিনি। আরেক পাশে অবশ্য দ্রুত রান বাড়ানোর চাহিদা মেটাতে থাকেন মুরস।
চতুর্থ উইকেটে ৭১ বলে তাদের জুটিতে আসে ৮১ রান। ৪৮ বলে ফিফটি স্পর্শ করে পরে ডানা মেলেন শান্ত। পঞ্চম উইকেটে থিসারা পেরারার সঙ্গে যোগ করেন ৩৪ বলে ৬৮ রান। যাতে ১৮ বলে ৩৭ রান শান্তর।
পেরেরা ১৬ বলে ২১ করে ফেরার পর দলকে ১৭০ ছাড়িয়ে নিয়ে যান শান্ত। এই পুঁজি যে জেতার জন্য যথেষ্ট পরে তা প্রমাণ করেছেন সিলেটের বোলাররা।
Comments