টাইব্রেকারে আবারও নায়ক এমিলিয়ানো, সেমিতে আর্জেন্টিনা

কাতার বিশ্বকাপ জয়ের মূলনায়ক লিওনেল মেসি হলেও নিঃসন্দেহে পার্শ্বনায়ক ছিলেন এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। ফাইনালে শেষ দিকে দুর্দান্ত সেভের পাশাপাশি টাইব্রেকারে দক্ষতা দেখিয়ে দলকে জেতান এই গোলরক্ষক। এবার কোপা আমেরিকায় ইকুয়েডরের বিপক্ষে আরও একবার ত্রাতা হয়ে এলেন তিনি। মেসির পেনাল্টি মিসের পর টানা দুটি সেভ করে ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দেন অ্যাস্টন ভিলার এই গোলরক্ষক। তাতে সেমি-ফাইনালের টিকিট কাটে চ্যাম্পিয়নরা।

হিউস্টনের এনআরজি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সকালে টাইব্রেকারে গড়ানো প্রথম কোয়ার্টার-ফাইনালে ইকুয়েডরকে ৪-২ ব্যবধানে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা। নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ গোলে ড্র ছিল। প্রথমার্ধে লিসান্দ্রো মার্তিনেজের গোলে আলবিসেলেস্তেরা এগিয়ে গেলেও ম্যাচের যোগ করা সময়ে কেভিন রদ্রিগেজের গোলে ম্যাচে ফেরে ইকুয়েডর।

এদিন টাই-ব্রেকারে প্রথম শটটিই মিস করেন লিওনেল মেসি। তার নেওয়া পানেনকা শট ক্রসবারে লেগে বেড়িয়ে যায়। তবে আনহেল মিনার প্রথম শট ঠেকিয়ে তাদের ম্যাচেই রাখেন এমিলিয়ানো। এমনকি অ্যালান মিন্দার পরের শটটি ঠেকিয়ে এগিয়ে দেন আর্জেন্টিনাকে। এরপর আর্জেন্টিনার আর কেউ মিস না করলে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে দলটি।

তবে মাঠের ফুটবলে বেশ ছন্নছাড়া ছিল আকাশী-সাদা জার্সিধারীরা। চোটের কারণে চিলির বিপক্ষে ম্যাচ মিস করার পর এদিনও খেলা নিয়ে শঙ্কা ছিল মেসির। শেষ পর্যন্ত খেলেছেন। তবে অধিকাংশ সময়ই ছিলেন খোলসে। ৬৮তম মিনিটে লক্ষ্যে প্রথম শট নিতে পারেন ইন্টার মায়ামি তারকা। মেসির মতো ম্যাচের প্রথম আধা ঘণ্টা খোলসেই ছিল আর্জেন্টিনা। ২৭তম মিনিটে প্রথম শট নিতে পারে দলটি।

এ সময় ম্যাচের আধিপত্য ছিল ইকুয়েডরের। দুটি ভালো সেভ করেন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। ষষ্ঠ মিনিটে মোয়েসেস কায়সেদোর শট ঠেকিয়ে দেওয়ার পর ১৫তম মিনিটে জেরেমি সারমিয়েন্তোর শটও ঠেকান। ডি-বক্সে এক খেলোয়াড়কে কাটিয়ে গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ১৬তম মিনিটে অনেকটা ফাঁকায় পেয়েও বারপোস্টের বেশ উপর দিয়ে মারেন আনহেলো প্রিসাইদো।

২৭তম মিনিটে আর্জেন্টিনার প্রথম শটটি আসে এনজো ফার্নান্দেজের হেড থেকে। নাহুয়েল মলিনার কাটব্যাক থেকে নেওয়া এই চেলসি ডিফেন্ডারের হেড বারপোস্ট ঘেঁষে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ছয় মিনিট পর ফের ভালো সুযোগ ছিল এনজোর। তবে দারুণ ব্লকে কর্নারের বিনিময়ে সে যাত্রা দলকে রক্ষা করেন উইলিয়ান পাচো।

সেই কর্নার থেকেই এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। মেসির নেওয়া কর্নার কিক থেকে আলেক্সিস ম্যাক-আলিস্তারের ব্যাকহেড ফাঁকায় পেয়ে যান লিসান্দ্রো। দেখে শুনে সময় নিয়ে দারুণ এক হেডে লক্ষ্যে বল পাঠান এই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ডিফেন্ডার। তবে বল জালে যাওয়ার আগে ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন ইকুয়েডর গোলরক্ষক আলেকজান্ডার দমিঙ্গেজ। কিন্তু লাইন পেরিয়ে গেলে গোল পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা।

৪১তম মিনিটে অনেকটা ফাঁকায় পেয়েও লক্ষ্যে রাখতে পারেননি এনজো। প্রথমার্ধের মতো দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও বেশ চাপ দিয়ে খেলতে থাকে ইকুয়েডর। বেশ কিছু কর্নার আদায় করে নেওয়ার পর ৬২তম মিনিটে পেনাল্টিও পায় দলটি। কিন্তু স্পটকিক থেকে লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি অধিনায়ক এনের ভ্যালেন্সিয়া। এমিলিয়ানো বিপরীত দিকে ঝাঁপ দিলেও তার শট বারপোস্টে লেগে ফিরে আসে।

চার মিনিট পর ডি-বক্সে বল পেয়ে লক্ষ্যে প্রথম শট নেন মেসি। তবে তা সহজেই ধরে ফেলেন ইকুয়েডর গোলরক্ষক। শেষ দিকে সমতায় ফিরতে আক্রমণের ধারা বাড়ায় তারা। ৮৯তম বাঁ প্রান্তে একেবারে ফাঁকায় পেয়ে গিয়েছিলেন কায়সেদো। কিন্তু লক্ষ্য রাখতে পারেননি।

তবে ম্যাচের যোগ করা সময়ে গোল পেয়ে যায় ইকুয়েডর। জন ইয়েবোয়াহর ক্রস থেকে লাফিয়ে উঠে দারুণ এক হেডে দূরের বারপোস্ট ঘেঁষে লক্ষ্যভেদ করেন এই ফরোয়ার্ড। এর পরের মিনিটে এগিয়েও যেতে পারতো দলটি। দিনের সেরা সুযোগটি মিস করেন জর্দি কায়সেদো। মিন্দার ক্রস ফাঁকা পোস্ট পেয়েও হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি। ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।

Comments

The Daily Star  | English
asif nazrul election statement

'We will leave in February'

'We're determined to hold the election in February,' says Asif Nazrul

3h ago