ইংল্যান্ড: আদৌ কি ঘরে ফিরবে ফুটবল?

ফুটবলের যেকোনো মেগা আসরের প্রাক্কালেই আশায় বুক বাঁধেন ইংল্যান্ড ভক্তরা। তাদের হৃদয়ে বাজতে থাকে 'ইটস কামিং হোম' গান। কাতারে আরও একবার স্বপ্ন দেখবে ইংলিশরা, আপ্রাণ চেষ্টা চালাবে ১৯৬৬ এর সাফল্যের পুনরাবৃত্তির। গত ৫৬ বছরে কোন মেজর শিরোপা জিততে না পারা থ্রি লায়ন্সরা বড় মঞ্চে নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পেরেছে কমই।

মরুর বুকে সাফল্য গাঁথা লিখতে হলে গুরুদায়িত্ব পালন করতে হবে অধিনায়ক হ্যারি কেইনকে। ২০২১ সালে ঘরের মাঠে একটুর জন্য ইউরোর শিরোপা হাতে ছোঁয়নি ২৯ বছর বয়সী স্ট্রাইকারের। ইতালির বিপক্ষে ফাইনালে পেনাল্টি শুটআউটে হেরে ভগ্ন হৃদয়ে আসর শেষ করে ইংলিশরা। তবে ২০২২ কেইনের জন্য নিয়ে এসেছে সম্ভাবনার পসরা। আর মাত্র দুটি গোল করলেই ছুঁয়ে ফেলবেন স্বদেশী কিংবদন্তি ওয়েইন রুনিকে।

জাতীয় দলের হয়ে ১২০ ম্যাচে ৫৩ গোল করার কৃতিত্ব রয়েছে সাবেক থ্রি লায়ন্স অধিনায়কের। ৭৫ ম্যাচ খেলে ৫১ গোল করে কেইন আছেন ঠিক অগ্রজের পিছনেই। ক্লাব ফুটবলে টটেনহ্যাম হটস্পারের হয়ে আলো ছড়িয়ে অনেক আগেই বনে গেছেন লন্ডনের ক্লাবটির কিংবদন্তি। তার গোল করার সক্ষমতা নিয়ে নেই প্রশ্ন তোলার উপায়, রাশিয়া বিশ্বকাপেও জিতেছিলেন গোল্ডেন বুট।

ইংল্যান্ডের শক্তি ও দুর্বলতার জায়গা

সেন্টার ব্যাক পজিশন দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে ইংলিশদের জন্য। দলে থাকা হ্যারি মাগুয়ারের সাম্প্রতিক ফর্ম বেশ দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে তাদের জন্য। গতিহীন এই ডিফেন্ডার ট্যাকলিংয়েও হারিয়েছেন ধার। এসি মিলানে খেলা ফিকায়ো টোমারিকে না ডেকে গ্যারেথ সাউথগেট জন্ম দিয়েছেন আরও প্রশ্নের। তবে ফুলব্যাক পজিশনে কিছুটা গভীরতা এনেছেন কাইল ওয়াকার ও ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আর্নল্ড।

মিডফিল্ডে জুড বেলিংহাম, মেসন মাউন্টরা ক্লাব ফুটবলের প্রতিষ্ঠিত নাম হলেও জাতীয় দলের হয়ে সেরাটা না দিতে পারলে কঠিন হবে সাফল্য পাওয়া। তবে ফরোয়ার্ড লাইন আছে তুখোড় ফর্মে, ফিল ফোডেন-জেমস ম্যাডিনসনদের-কেইনদের দারুণ ফর্ম কাঁপিয়ে দিতে পারে শক্তিশালী দলগুলোর রক্ষণকেও। মার্কাস র‍্যাশফোর্ড, বুকায়ো সাকারা সাম্প্রতিক সময়ে জ্বলে উঠতে না পারলেও গতি দিয়ে ডিফেন্ডারদের কাবু করার ক্ষমতা রয়েছে তাদের।

অতীত বিশ্বকাপগুলোতে ইংল্যান্ড

মরুর দেশে নিজেদের ১৬তম বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে থ্রি লায়ন্সরা। ১৯৫০ সালে প্রথমবারের মতো গৌরবের এই আসরে জায়গা করে নেয় তারা। ১৯৬৬ সালে ঘরের মাটিতে পশ্চিম জার্মানিকে হারিয়ে পায় প্রথম শিরোপার স্বাদ। এরপর থেকে হতাশাই সঙ্গী হয়েছে বেশি, ১৯৯০ ও ২০১৮ সালে শেষ চার থেকে বিদায় নেওয়াটা এখনও পোড়ায় তাদের। ১৯৭৪, ১৯৭৮ ও ১৯৯৪ সালে বিশ্বমঞ্চে খেলার যোগ্যতাই অর্জন করতে পারেনি তারা।

যেভাবে ২০২২ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড

ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ের পাঁচ নম্বর দল ইংল্যান্ড বাছাইপর্বে ছিল দুর্দান্ত। ১০ ম্যাচের আটটিতেই জিতে হেসে খেলে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করে কেইনের দল। তবে সাম্প্রতিক ফর্ম বড় দুশ্চিন্তা হতে পারে তাদের জন্য। সবশেষ ছয় ম্যাচের একটিতেও জয় তুলে নিতে পারেনি তারা। তিনটিতেই হারতে হয়েছে সাউথগেটের শিষ্যদের, যার মধ্যে ছিল হাঙ্গেরির বিপক্ষে ০-৪ গোলের দৃষ্টিকটু হারও।

কাতার বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড দল

গোলরক্ষক: জর্ডান পিকফোর্ড (এভারটন), নিক পোপ (নিউক্যাসল), অ্যারন রামসডালে (আর্সেনাল)

ডিফেন্ডার: হ্যারি মাগুয়ার (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড), লুক শ (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড), এরিক ডিয়ের (টটেনহ্যাম), জন স্টোনস (ম্যানচেস্টার সিটি), কাইল ওয়াকার (ম্যানচেস্টার সিটি), কাইরান ট্রিপিয়ার (নিউক্যাসল), কনর কোডি (এভারটন), বেন হোয়াইট (আর্সেনাল), ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আর্নল্ড (লিভারপুল)

মিডফিল্ডার: জুড বেলিংহাম (বরুশিয়া ডর্টমুন্ড), ম্যাসন মাউন্ট (চেলসি), কনর গ্যালাঘের (চেলসি), ডেক্লান রাইস (ওয়েস্টহ্যাম), জর্ডান হেন্ডারসন (লিভারপুল), কালভিন ফিলিপস (ম্যানচেস্টার সিটি)

ফরোয়ার্ড: জেমস ম্যাডিসন (লেস্টার), ফিল ফোডেন (ম্যানচেস্টার সিটি), জ্যাক গ্রিলিশ (ম্যানচেস্টার সিটি), হ্যারি কেইন (টটেনহ্যাম), বুকায়ো সাকা (আর্সেনাল), রাহিম স্টার্লিং (চেলসি), ক্যালাম উইলসন (নিউক্যাসল), মার্কাস রাশফোর্ড (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড)।

Comments

The Daily Star  | English

Barishal University VC, pro-VC, treasurer removed

RU Prof Mohammad Toufiq Alam appointed interim VC

37m ago