কাতার বনাম ইকুয়েডর: প্রেডিকশন, একাদশ ও রেকর্ড
অবশেষে অপেক্ষার পালা ফুরচ্ছে। শুরু হতে যাচ্ছে মরুর বুকে প্রথম বিশ্বকাপ। এরমধ্যেই উত্তাপ টের পেতে শুরু করেছে গোটা বিশ্ব। প্রথম দিনে ল্যাতিন আমেরিকার দেশ ইকুয়েডরের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে কাতার। বিশ্বমঞ্চে কাতার একেবারে আনকোরা একটি দল। অন্যদিকে এই নিয়ে চতুর্থবারের মতো বিশ্বকাপে খেলতে যাচ্ছে ইকুয়েডর। অভিজ্ঞতায় তাই কিছুটা এগিয়ে থাকবে ল্যাতিন দলটি। তবে ঘরের মাঠে খেলার সুবিধাটা রয়েছে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নদের। তাই লড়াইটা হাড্ডাহাড্ডি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
ম্যাচের ফলাফল কি হবে তা জানা যাবে ম্যাচ শেষে, তবে তার আগে সাম্প্রতিক সময়ে দলদুটির ফর্মের বিচারে ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে হাজির আমরা। পাশাপাশি দুই দলের সম্ভাব্য একাদশ, কৌশলও তুলে ধরা হলো ডেইলি স্টারের পাঠকদের জন্য-
কখন?
বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা, রোববার, ২০ নভেম্বর।
কোথায়?
আল বাইত স্টেডিয়াম, আল-খোর, কাতার
নজরে থাকবেন যারা
বিশ্বকাপে শুভ সূচনা করতে কাতার তাকিয়ে থাকবে আলমোয়েজ আলীর দিকে। ২৬ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকারের জাতীয় দলের জার্সিতে ৮২ ম্যাচে রয়েছে ৩৯ গোল। তিনি দেশটির ইতিহাসের তৃতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা। তিনটি আলাদা মহাদেশীয় ফুটবল আসরে গোল করার কীর্তি আলমোয়েজের দখলে। এশিয়ান কাপের পাশাপাশি তিনি জালের দেখা পেয়েছেন কোপা আমেরিকা ও কনকাকাফ গোল্ডকাপে। আক্রমণভাগে তাকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য আছেন আকরাম আফিফ ও অধিনায়ক হাসান আল-হাইদোস। তারা দুজনও গোল করতে পটু।
ইকুয়েডরের তুরুপের তাস হতে পারেন ফেনারবাচের অভিজ্ঞ স্ট্রাইকার এন্নার ভ্যালেন্সিয়া। তিনি দেশটির ইতিহাসের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা। অধিনায়কের দায়িত্বে থাকা ভ্যালেন্সিয়ার নামের পাশে রয়েছে ৭৪ ম্যাচে ৩৫ গোল। ইকুয়েডরের হয়ে ২০১৪ বিশ্বকাপে খেলার অভিজ্ঞতা আছে তার। সেবার দক্ষিণ আমেরিকার দলটি গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়লেও ৩ গোল করে নজর কেড়েছিলেন ভ্যালেন্সিয়া। তার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন মিডফিল্ডার মোইসেস কাইসেদো।
সম্ভাব্য একাদশ ও ম্যাচের কৌশল
কাতার: (৫-৩-২) আল-শিব (গোলরক্ষক), রো-রো, পেদ্রো মিগুয়েল, আল-রাউই, খোউকি, হাসান, আল-হাইডোস, বোদিয়াফ, হাতেম, আলী ও আফিফ।
ইকুয়েডর: (৪-২-৩-১) গালিন্দেজ (গোলরক্ষক), প্রিসিয়াদো, তোরেস, হিন্সাপি, এস্তুপিয়ান, গ্রুয়েজো, কাইকেদো, প্লাতা, সিফুয়েন্তেস, ভ্যালেন্সিয়া ও এস্ত্রাদা।
প্রেডিকশন
শক্তির বিচারে পার্থক্যটা খুব বেশি নেই। নির্দিষ্ট কাউকে এগিয়ে রাখা কঠিন। তবে কাতার কিছুটা এগিয়ে থাকবে স্বাগতিক হওয়ার কারণে। যদিও এই মঞ্চে তাদের অভিজ্ঞতা নেই। সবশেষ মুখোমুখি লড়াইয়ে আবার জিতেছিল তারাই। তবে ইকুয়েডরও ছেড়ে কথা বলবে না। আগ্রাসী ফুটবল খেলার দুর্নামও রয়েছে তাদের।
সম্ভাব্য স্কোর
কাতার ২-১ ইকুয়েডর
ম্যাচ ফেক্টস
১) দুই দলের মধ্যে এর আগে তিনটি লড়াই হয়েছে যার সবগুলোই প্রীতি ম্যাচে। সেখানে একটি করে জয় দুই দলেরই, অপরটি ড্র।
২) দোহার জসিম বিন হামাদ স্টেডিয়ামে দুই দলের সবশেষ মুখোমুখি লড়াইয়ে ৪-৩ গোলের ব্যবধানে জিতেছে কাতার। সে ম্যাচে আলমোয়েজ আলী করেছেন দুটি গোল। ইকুয়েডরের হয়ে এনার ভ্যালেন্সিয়া দুটি গোল করলেও ইনজুরি সময়ে লাল কার্ড দেখেন।
৩) দক্ষিণ আমেরিকার প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সেটা ছিল কাতারের দ্বিতীয় জয় (ড্র ৪, হার ৮)।
৪) ২০১০ সালের আয়োজক দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়া সব দেশই অন্তত প্রথম পর্ব পেরিয়েছে। প্রতিটি আয়োজক দেশ আসরে অন্তত একটি ম্যাচ জিতেছে।
৫) টুর্নামেন্টের আয়োজকরা কখনোই বিশ্বকাপে তাদের উদ্বোধনী ম্যাচ হারেনি (২০০২ সালে জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়া সহ)।
৬) কাতার এবং সৌদি আরব বিশ্বকাপে দুটি দল যারা সম্পূর্ণরূপে ঘরোয়া ভিত্তিক খেলোয়াড়দের নিয়ে দল নির্বাচন করেছে।
৭) আল বাইত স্টেডিয়ামে এর আগে খেলা তিনটি ম্যাচই জিতেছে কাতার। গোল ব্যবধান ৯-০।
৮) এটি ইকুয়েডরের চতুর্থ বিশ্বকাপ। ২০০৬ সালে পোল্যান্ডকে ২-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে নিজেদের প্রথম ম্যাচ জিতেছে দলটি। একমাত্র সেবারই তারা গ্রুপ পর্ব ছাড়িয়েছে।
৯) বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ১৮ ম্যাচে ইকুয়েডর ৪৯ জন ভিন্ন খেলোয়াড়কে ব্যবহার করেছে, যা এই আসরে অংশগ্রহণ করা অন্য যেকোনো দলের চেয়ে বেশি।
১০) বাছাই পর্বে তাদের শুরুর লাইন আপের গড় বয়স ছিল ২৫ বছর ৩৩৪ দিন, ল্যাতিন আমেরিকার যেকোনো দলের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সী দল ছিল ইকুয়েডর।
১১) গুস্তাভো আলফারোর দল তাদের শেষ ১১ ম্যাচের মধ্যে আটটি ড্র করেছে এবং তাদের আগের ১৫টির মধ্যে একটিতে হেরেছে। তারা টানা ছয়টি ক্লিন শিটও রেখেছে, যা তাদের একটি জাতীয় রেকর্ড। এর মধ্যে চারটি ম্যাচ গোলশূন্য ড্র হয়েছে, বাকিগুলো ১-০ ব্যবধানে জয় পেয়েছে ইকুয়েডর।
Comments