কাতারকে হারিয়ে ইতিহাস বদলে দিল ইকুয়েডর

শক্তির বিচারে ইকুয়েডরের চেয়ে কিছুটা হলেও পিছিয়ে ছিল কাতার। বিশ্বকাপের অভিজ্ঞতা তো শূন্য। এই মঞ্চে প্রথম খেলছে মরুর দেশটি। তাও বাছাই পর্ব খেলে নয়, জায়গা মিলেছে স্বাগতিক হিসেবে। তারপরও দলটি আশার বুক বেঁধেছিল ইতিহাসকে সঙ্গে পেয়ে। বিশ্বকাপে এর আগে কখনোই আয়োজকরা প্রথম ম্যাচে হারেনি। কিন্তু ইতিহাসটা যে পাল্টেই দিল ল্যাতিন দলটি। বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো হারল আয়োজকরা।

রোববার আল-খোরের আল বাইত স্টেডিয়ামে ফিফা বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে স্বাগতিক কাতারকে ২-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে শুভ সূচনা করেছে ইকুয়েডর। ম্যাচের প্রথম আধা ঘণ্টার মধ্যেই দুটি গোল আদায় করে নেয় তারা। দুটি গোলই করেন এনের ভ্যালেন্সিয়া।

কাতারের এই স্কোয়াডের সবাই ছিলেন স্থানীয় লিগের খেলোয়াড়। তাই চেনা কন্ডিশনে তারা বাড়তি সুবিধা পাবেন বলেই প্রত্যাশা ছিল সবার। আল-বাইত স্টেডিয়ামে এর আগে খেলা তিন ম্যাচে জয় ছিল তাদেরই। নয় গোলের বিপরীতে কোনো গোলও হজম করেনি। কিন্তু এদিন বিশ্বমঞ্চের লড়াইয়ে সেই মাঠে জোড়া গোল হজম করতে হয় তাদের।

অন্যদিকে, গুস্তাভো আলফারোর দল ছিল উড়ন্ত ছন্দে। শেষ ১১ ম্যাচের মধ্যে করেছিল আটটি ড্র এবং আগের ১৫টির মধ্যে হার মাত্র একটি। নিজেদের জাতীয় রেকর্ড টানা ছয়টি ক্লিন শিটও রেখেছে তারা। সে রেকর্ডটা আরও সমৃদ্ধ করল ইকুয়েডর। টানা সাতটি ম্যাচে কোনো গোল হজম করল না দলটি।

এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রণে রেখে খেলতে থাকে ইকুয়েডর। মাঝমাঠের দখল ছিল তাদেরই বেশি। ৫৩ শতাংশ বল দখলে ছিল তাদের। শট নেয় ৬টি, যার তিনটি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে পাঁচটি শট নিয়ে একটিও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি কাতার। 

ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে পিছিয়ে পড়তে পারতো কাতার। তাদের জালে বল পাঠিয়েছিলেন ভ্যালেন্সিয়া। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার ফেলিক্স তোরেসের ক্রসে হেড দেওয়ার সময় অফসাইডে ছিলেন মাইকেল এস্ত্রাদা। ভিএআরে যাচাইয়ের পর মিলেনি গোল। অন্যথায় ম্যাচে হ্যাটট্রিকই পেতে পারতেন তিনি।

তবে ১৬তম মিনিটে আর হতাশ হতে হয়নি ভ্যালেন্সিয়াকে। সফল স্পটকিক থেকে গোল আদায় করে নেন এই ফেনেরব্যাক ফরোয়ার্ড। ডি-বক্সে ভ্যালেন্সিয়াকে কাতার গোলরক্ষক সাদ আল সিব ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি।

৩১তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ল্যাতিন দলটি। আনহেলো প্রিকাইদোর ক্রস থেকে লাফিয়ে নিখুঁত এক হেডে লক্ষ্যভেদ করেন ভ্যালেন্সিয়া।

প্রথমার্ধে তেমন কোনো সম্ভাবনা তৈরি করতে না পারলেও শেষ মুহূর্তে ব্যবধান কমানোর সুবর্ণ একটি সুযোগ পেয়েছিল স্বাগতিকরা। হাসান আল হায়দোসের অসাধারণ এক ক্রসে গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিলেন আলমোয়েজ আলী। কেবল দিক বদলে দিতে পারলেই গোল পেত তারা। কিন্তু বলে মাথায় সংযোগ ঠিকভাবে করতে পারেননি এ ফরোয়ার্ড। ফলে দুই গোলে পিছিয়ে থেকেই মাঠ ছাড়ে তারা।

দ্বিতীয়ার্ধের ১০ মিনিট পার না হতেই আরও একটি গোল হজম করতে পারতো কাতার। দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন রোমারিও ইবারা। এ যাত্রা দলকে রক্ষা করেন কাতারের গোলরক্ষক সিব। রোমারিওর জোরালো শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান তিনি।

৮৬তম মিনিটে ব্যবধান কমানোর ভালো সুযোগ ছিল বদলি খেলোয়াড় মোহামেদ মুনতারি। বাসাম আল রায়ির নিখুঁত থ্রু বল থেকে দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে অসাধারণ এক ভলি করেছিলেন এ আল-দোহাইল এসসি ফরোয়ার্ড। কিন্তু অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি।

এরপরও দুই দলের কিছু সুযোগ ছিল। কিন্তু আর গোল না হলে প্রথমার্ধের ফলাফলই গড়ে দেয় ম্যাচের ভাগ্য। প্রত্যাশিত জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে ইকুয়েডর।

Comments

The Daily Star  | English

BNP's name being misused for personal gains: Rizvi

He urges party men to remain vigilant against committing misdeeds

2h ago