সেনেগাল বনাম নেদারল্যান্ডস: প্রেডিকশন, একাদশ ও অন্যান্য রেকর্ড
দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে আফ্রিকান চ্যাম্পিয়ন সেনেগালের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ইউরোপের অন্যতম শক্তিশালী দল নেদারল্যান্ডস। পরাশক্তি হিসেবে ধরা হলেও গত আসরেই বিশ্বকাপে খেলতে পারেনি ডাচরা। দলের শক্তিমত্তা ও বিশ্বমঞ্চে খেলার অভিজ্ঞতা নিঃসন্দেহে এগিয়ে রাখছে তাদের। অন্যদিকে আসর শুরুর আগেই বড় ধাক্কা খেয়েছে সেনেগাল। দলের সেরা তারকা সাদিও মানে গেছেন ছিটকে। দলের শেষ ১৪ গোলের নয়টিই এসেছিল তার কাছ থেকে। তাকে ছাড়া ডাচদের সঙ্গে কতোটা লড়াই করতে পারবে আফ্রিকান দলটি, এখন দেখায় বিষয় সেটাই।
ম্যাচের ফলাফল জানা যাবে ম্যাচ শেষেই, তবে তার আগে কাগজে কলমে দুদলের সামর্থ্য ও সাম্প্রতিক ফর্মের আলোকে ভবিষ্যৎবাণী নিয়ে হাজির আমরা। পাশাপাশি নেদারল্যান্ডস ও সেনেগালের সম্ভাব্য একাদশ, ফর্মেশনও তুলে ধরা হলো ডেইলি স্টারের পাঠকদের জন্য-
কখন?
২১ নভেম্বর, বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা
কোথায়?
আল-থুমামা স্টেডিয়াম, আল থুমামা, কাতার।
নজরে থাকবেন যারা
সাদিও মানের অবর্তমানে চেলসি তারকা কালিদু কৌলিবালির উপরই নজর থাকবে সবার। অলরাউন্ড ডিফেন্ডারদের মধ্যে দারুণ খ্যাতি রয়েছে তার। আরেক মূল খেলোয়াড় হিসেবে সেনেগালের গোলরক্ষক এডোয়ার্ড মেন্ডির দিকে নজর রাখতে হবে। অন্যদিকে ডাচদের আক্রমণের প্রধান ব্যক্তিত্ব হবেন স্টিভেন বার্জউইন। রক্ষণভাগে লিভারপুল ডিফেন্ডার ভার্জিল ভ্যান ডাইক ও ম্যানচেস্টার সিটি ডিফেন্ডার নাথান আকেও মূল ভূমিকা পালন করবেন।
সম্ভাব্য লাইনআপ
সেনেগাল: (৪-৩-৩) এ. মেন্ডি (গোলরক্ষক), সাবালি, সিসে, কৌলিবালি, বালো-তৌরে, পি. সার, এন. মেন্ডি, ইদ্রিসা গায়ে, আই. সার, দিয়া, দিয়াত্তা।
নেদারল্যান্ডস: (৫-৩-২) পাসভির (গোলরক্ষক), টিম্বার, ভ্যান ডাইক, আকে, ব্লিন্ড, ডামফ্রিজ, বার্গুইস, ডি ইয়ং, কোপমেইনার্স, গাকপো, বার্জউইন।
প্রেডিকশন
মানের কাঁধে চড়েই বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছিল সেনেগাল। আফ্রিকান চ্যাম্পিয়নও হয় তার নৈপুণ্যেই। তার ছিটকে যাওয়া ধাক্কা হলেও দলটির সামর্থ্য যথেষ্ট। অন্যদিকে ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলতে না পারা নেদারল্যান্ডস এবার ফিরেছে দাপটের সঙ্গেই। কোচ লুইস ফন হালের অধীনে ২০১৪ সালে সেমিফাইনালে খেলেছিল ওরেঞ্জরা। তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর গত দেড় বছর ধরে টানা ১৫ ম্যাচে অপরাজিত দলটি। তাই এ ম্যাচে আফ্রিকান দলটির চেয়ে বেশ এগিয়ে থাকবে ডাচরা।
সম্ভাব্য স্কোর
নেদারল্যান্ডস ৩-১ সেনেগাল
ম্যাচ ফেক্টস
১) সব প্রতিযোগিতা মিলে এটাই সেনেগাল ও নেদারল্যান্ডসের মধ্যে প্রথম লড়াই।
২) এই প্রথম সেনেগাল ও নেদারল্যান্ডস একসঙ্গে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। সেনেগাল এর আগে যে দুটি বিশ্বকাপে (২০০২ ও ২০১৮) খেলেছিল, সে দুইবার বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে ব্যর্থ হয়েছিল ডাচরা।
৩) বিশ্বকাপে আফ্রিকান প্রতিপক্ষের বিপক্ষে কখনোই হারেনি নেদারল্যান্ডস। তিনটি জয় ও একটি ড্র। আফ্রিকান প্রতিপক্ষের বিপক্ষে তাদের শেষ পাঁচ ম্যাচই জিতেছে নেদারল্যান্ডস।
৪) দুটি বিশ্বকাপ খেলে এখন পর্যন্ত আটটি ম্যাচ খেলেছে সেনেগাল। তাতে তিনটি জয় পেয়েছে দলটি। এ তিনটি জয়ই ছিল ইউরোপীয় প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে।
৫) বিশ্বকাপ অভিযানের দুই আসরেই তাদের উদ্বোধনী ম্যাচ জিতেছে সেনেগাল। ২০০২ সালে ফ্রান্সের বিপক্ষে ১-০ এবং ২০১৮ সালে পোল্যান্ডের বিপক্ষে ২-১ গোলের জয়।
৬) বিশ্বকাপে আফ্রিকান দলের সেরা ফলাফল ছিল কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছানো। ১৯৯০ সালে ক্যামেরুন, ২০০২ সালে সেনেগাল এবং ২০১০ সালে ঘানা।
৭) বিশ্বকাপে দেওয়া ১১টি গোলের ৭টি হাফ টাইমের আগে দিয়েছে সেনেগাল। এবং হজম করা শেষ ১০ গোলের ৭টি আসে দ্বিতীয়ার্ধে কিংবা অতিরিক্ত সময়ে।
৮) সেনেগালের কোচ আলিউ সিসে সেনেগালের সব বিশ্বকাপ অভিযানেই ছিলেন। ২০০২ সালে অধিনায়ক এবং ২০১৮ এবং ২০২২ সালে দলের ম্যানেজার হিসেবে আছেন।
৯) বিশ্বকাপে এটি নেদারল্যান্ডসের একাদশ আসর। রাশিয়ায় গত আসরে যোগ্যতা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছিল তারা, যেখানে ২০১৪ সালে কোচ লুই ফন হালের অধীনে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছিল দলটি।
১০) নেদারল্যান্ডসই একমাত্র দল যারা অন্তত তিনটি বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলেছে কিন্তু কখনোই ট্রফি জিততে পারেনি। ১৯৭৪ সালে পশ্চিম জার্মানির বিপক্ষে ২-১, ১৯৭৮ সালে অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ৩-১ এবং ২০১০ অতিরিক্ত সময়ের পরে স্পেনের বিপক্ষে ১-০ গোলের ব্যবধানে হারে দলটি।
১১) বিশ্বকাপের প্রথম গ্রুপ পর্ব থেকে কখনোই বাদ পড়েনি ডাচরা।
১২) ডাচরা তাদের শেষ ১৪টি বিশ্বকাপ ম্যাচের মধ্যে মাত্র একটিতে হেরেছে (পেনাল্টি শ্যুটআউট ড্র হিসাবে ধরা হয়)।
Comments