জন্মভূমির বিপক্ষে গোল করে সুইজারল্যান্ডকে জেতালেন এম্বোলো

ছবি: এএফপি

গোটা ম্যাচেই মাথা উঁচু করে লড়ল ক্যামেরুন। সুইজারল্যান্ডও শানাল বেশ কিছু আক্রমণ। আর কাজের কাজটা করলেন তাদের স্ট্রাইকার ব্রিল এম্বোলো। নিজের জন্মভূমির বিপক্ষে করলেন গোল। সেই লক্ষ্যভেদে জয় দিয়ে শুভ সূচনা করল সুইসরা।

বৃহস্পতিবার কাতার বিশ্বকাপের 'জি' গ্রুপের ম্যাচে ১-০ গোলে ক্যামেরুনকে পরাস্ত করেছে সুইজারল্যান্ড। আল ওয়াকরাহর আল জানোব স্টেডিয়ামে তাদের পক্ষে বিরতির পর একমাত্র গোলটি করেন এম্বোলো।

শুরুতে বলের দখলে পিছিয়ে থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় ক্যামেরুন। প্রথমার্ধে বেশি সুযোগ তৈরি করেছিল তারাই। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এম্বোলোর গোলে পিছিয়ে পড়ে আফ্রিকার অদম্য সিংহরা। গোটা ম্যাচে আর সেই গোল শোধ দিতে পারেনি রিগোবার্ট সংয়ের শিষ্যরা।

ম্যাচের শুরুতে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে খেলতে থাকে সুইজারল্যান্ড। তবে সুযোগ পেলেই সুইস রক্ষণকে ব্যস্ত করে তুলছিলেন ক্যামেরুন ফরোয়ার্ডরা। দশম মিনিটে মোক্ষম সুযোগ পেয়েছিল আফ্রিকার দলটি। ব্রায়ান এমবেউমো বাঁ প্রান্ত থেকে শট চালান। সেটা প্রতিহত হলে আলগা বল পান টোকো একামবি। তবে তার চেষ্টা থাকেনি লক্ষ্যে।

আক্রমণে গেছে সুইসরাও, ১৩তম মিনিটে বিপদসীমায় বল পেয়ে যান এম্বোলো। কিন্তু প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের ট্যাকেলে লুটিয়ে পড়েন মাটিতে। পরের মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাকে ওঠে ক্যামেরুন। এরিক ম্যাক্সিম চুপো মোটিং দ্রুতগতিতে সুইস ডি-বক্সে ঢুকে শটও নেন। তবে পরাস্ত করতে পারেননি গোলরক্ষক ইয়ান সোমারকে।

৩০তম মিনিটে আবারও দলকে বাঁচান সুইস গোলরক্ষক। দারুণ ওয়ান-টুতে চুপো মোটিংয়ের সঙ্গে আক্রমণের মঞ্চ সাজান এমবেউমো। এরপর বল ছাড়েন মার্টিন হংলাকে। ডানপ্রান্ত থেকে নেওয়া এই মিডফিল্ডারের শট রুখে দেন সোমার।  

পাঁচ মিনিট বাদে আবারও আক্রমণে যায় ক্যামেরুন। রাইট-ব্যাক কলিন্স ফাই দারুণ এক ক্রস জোগান দেন কার্ল একামবিকে। কিন্তু রিকার্ডো রদ্রিগেজের ট্যাকেলে পড়ে যান ক্যামেরুন ১২ নম্বর। পেনাল্টির আবেদন করলেও রেফারি সাড়া দেননি তাতে। আরও একবার সুযোগ হাতছাড়া হয় আফ্রিকার অদম্য সিংহদের।

পরের মিনিটে নিকো এলভেদিকে ফাউল করে ম্যাচের প্রথম হলুদ কার্ড দেখেন ফাই। বিরতির ঠিক আগে কর্নার থেকে বড় সুযোগ হাতাছাড়া হয় সুইজারল্যান্ডের। ম্যানচেস্টার সিটি ডিফেন্ডার ম্যানুয়েল আকানজি লাফিয়ে উঠে হেড করলেও তা হয় লক্ষ্যভ্রষ্ট। ফলে গোলশূন্য অবস্থায় বিরতিতে যায় দুই দল।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ম্যাচের ৪৮তম মিনিটে ক্যামেরুনকে স্তব্ধ করে দেন এমবোলো। জেরদান শাকিরির নিখুঁত ক্রস থেকে ঠান্ডা মাথায় ফিনিশ করে এগিয়ে নেন দলকে। তবে গোলের উদযাপন করেননি তিনি। 

২৫ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড এম্বোলোর জন্ম ক্যামেরুনের রাজধানী ইয়াউন্ডেতে। তবে মায়ের সঙ্গে খুব অল্প বয়সে ফ্রান্সে চলে আসেন এম্বোলো। পরিবর্তিতে সুইজারল্যান্ডে স্থানান্তরিত হন তারা। ফরাসি ক্লাব এস মোনাকোর এই তারকা চাইলে খেলতে পারতেন জন্মভূমির হয়েও। কিন্তু তিনি বেছে নেন  ইউরোপের দলটিকে।

৫৭তম মিনিটে দারুণ স্কিল দেখান বায়ার্ন মিউনিখের ফরোয়ার্ড চুপো মোটিং। প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে দুজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দুরূহ কোণ থেকে শট নেন গোলমুখে। তবে সোমার প্রতিহত করেন সেই চেষ্টা। কর্নার পায় ক্যামেরুন। পরের মিনিটে অফসাইডের ফাঁদে পড়ে সহজ সুযোগ হারায় সুইজারল্যান্ড।

৬৬তম মিনিটে নিজের দক্ষতা দেখান ক্যামেরুনের গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানাও। রুবেন ভার্গাসের জোরালো শট রুখে দেন দারুণভাবে। এরপর কর্নার থেকে সুযোগ এলেও তা কাজে লাগাতে পারেননি এম্বোলো।    

৭১তম মিনিটে তিনজন বদলি মাঠে নামান সুইস কোচ মুরাত ইয়াকিন। শাকিরি, এম্বোলো ও জিব্রিল সোকে উঠিয়ে নেন। ৮৩তম মিনিটে মোক্ষম এক স্লাইডে ক্যামেরুনকে রক্ষা করেন সেন্টার-ব্যাক নিকোলাস এনকোলো। পাঁচ মিনিট বাদে গ্রানিত জাকা বক্সের বাইরে থেকে প্রচেষ্টা চালান। কিন্তু পর্যাপ্ত জোর দিতে পারেননি শটে।

যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ ছিল সুইসদের সামনে। বদলি ফরোয়ার্ড হারিস সেফেরোভিচের শট আপ্রাণ চেষ্টায় আটকান জ্যাঁ চার্লস ক্যাসটেলেট্টো। ফলে একমাত্র গোলের জয় নিয়েই খুশি থাকতে হয় ইয়াকিনের শিষ্যদের।

Comments

The Daily Star  | English

22 out of 35 parties want caretaker govt system

As per proposals sent to constitution reform commission

10h ago